প্যাকেজ সফটওয়্যার কি-Three Finger Salute কি

প্রিয় পাঠক সারা পৃথিবীর মানুষ আর কম্পিউটারের উপর নির্ভরশীল করছে। কম্পিউটার ছাড়া আমাদের জীবন কল্পনা করা অসম্ভব। জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে কম্পিউটারের ব্যবহার ও গুরুত্ব অপরিসীম।
প্যাকেজ সফটওয়্যার কি-ফার্মওয়্যার ও BIOS কি-Three Finger Salute কি
আগের একটি পোস্টে কম্পিউটার সফটওয়্যার কি, সফটওয়্যার কত প্রকার ও কি কি ইত্যাদি বিষয়ে আলোচনা করেছে। আজকের এই আর্টিকেলে প্যাকেজ সফটওয়্যার কি, ফার্মওয়্যার কি, BIOS কি এবং ‘থ্রী ফিঙ্গার স্যালুট’ নিয়ে আলোচনা করবো।

সূচিপত্রঃ- প্যাকেজ সফটওয়্যার কি-Three Finger Salute কি

বিভিন্ন ধরনের প্যাকেজ সফটওয়্যার

নির্দিষ্ট কাজের জন্য আমরা বিভিন্ন প্রকার সফটওয়্যার ব্যবহার করে থাকি। সফটওয়্যার নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলো ব্যবহার করে চাহিদা অনুযায়ী বিভিন্ন ধরনের প্যাকেজ সফটওয়্যার তৈরি করে থাকেন। নিম্নে কিছু প্যাকেজ সফটওয়্যার এর বর্ণনা দেয়া হলোঃ
ওয়ার্ড প্রসেসিং সফটওয়্যারঃ
লেখালেখির জন্য যে সফটওয়্যার ব্যবহার করা হয় তাকে ওয়ার্ড প্রসেসিং সফটওয়্যার বলে। চিঠিপত্র লেখা নিবন্ধ প্রবন্ধ প্রতিবেদন জীবন বৃত্তান্ত এবং বড় আকারের বই লেখার কাজে এর কাজে ওয়ার্ড প্রসেসিং সফটওয়্যার ব্যবহার করা হয়।
উদাহরণ-
  • মাইক্রোসফট ওয়ার্ড (Microsoft Word সংক্ষেপে MS Word) [বর্তমান সময়ের সবচেয়ে জনপ্রিয়]
  • ওয়ার্ড স্টার (Word Star ) পিএফএস রাইট (PFS Write)
  • ওয়ার্ড পারফেক্ট (Word Perfect সংক্ষেপে WP)
  • ডিসপ্লে রাইটার (Display Writer)
  • লোটাস ওয়ার্ডপ্রো (Lotus Wordpro)
  • ডক্স রাইটার (Dox Writer)
  • ওয়ার্ড প্যাড (Word Pad)
  • ম্যাক রাইট (Mac Write)
  • নোটপ্যাড (Note Pad)
  • ল্যাটেক্স (Latex)
স্প্রেডশীট অ্যানালাইসিস সফটওয়্যারঃ
স্প্রেডশীট সফটওয়্যার এর মাধ্যমে মূলত বড় বড় হিসাব নিকাশ করা হয়। এই সফটওয়্যারের মাধ্যমে একসাথে যোগ-বিয়োগ গুন ভাগ শতকরা পর সুদ হিসেবে কাজ খুব দ্রুত এবং নির্ভুলভাবে করা যায়। এ সপ্তাহের সবচেয়ে বড় সুবিধা হচ্ছে একটি সংখ্যা পরিবর্তন করলে এর সাথে সম্পৃক্ত সকল হিসেব নিজে থেকে পরিবর্তিত হয়ে নতুনভাবে বিন্যস্ত হয়। স্কুল কলেজের ফলাফল তৈরি ব্যালেন্স শীট বাজেট ইত্যাদি গাণিতিক কাজে এই সফটওয়্যারের ব্যবহার বেশি।
উদাহরণঃ
  • ভিসি ক্যাল (VisiCalc) (পৃথিবীর প্রথম স্প্রেডসিট সফটওয়্যার)
  • মাইক্রোসফট এক্সেল (Microsoft Excel বা MS-Excel) (বর্তমান সময়ের সবচেয়ে জনপ্রিয় স্প্রেডসিট প্রোগ্রাম)
  • লোটাস-১-২-৩ (Lotus 1-2-3)
  • কোরেল কোয়াট্রো-প্রো (Corel Quatropro)
  • মাল্টিপ্লান (Multiplan )
  • সুপারক্যাল্ক (Super Calc )
  • ক্যাল্ক (Calc)
  • সরকিম (Sorcim)
  • সিম্ফোনি (Symphony)
  • নাম্বারস (Numbers)
ডেটাবেস ম্যানেজমেন্ট সফটওয়্যারঃ
বড় বড় শিল্প কারখানা কোম্পানি এবং অফিস আদালতের কর্মকর্তা কর্মচারীদের নাম, পদবী, বেতন, ঠিকানা সহ বিস্তারিত বিবরণ, উৎপাদন, আমদানি, রপ্তানি, বিক্রয়, যাবতীয় তথ্য ব্যবস্থাপনার জন্য ডেটাবেজ প্রোগ্রাম ব্যবহার করা হয়। আদমশুমারি, ভোটারতালিকা, ভূমি জরিপ, পরিসংখ্যান ব্যুরো ইত্যাদি দফতরগুলোর বিপুল পরিমাণ তথ্য ব্যবস্থাপনার কাজও ডেটাবেজ প্রোগ্রামের সাহায্যে নির্ভুলভাবে সম্পাদন এবং সংরক্ষণ করা হয়।

ডেটাবে সফটওয়্যারে সংরক্ষণ করা সকল তথ্য শ্রেণী বদ্ধ ভাবে সাজানো থাকে। যার ফলে যে কোন সময় শ্রেণীর ভিত্তিতে কম্পিউটারের কয়েকটি বোতাম চাপ দিয়ে তথ্যগুলো বের করে সংযোজন বিয়োজন এবং সংশোধন করা যায়।
উদাহরণঃ
মাইক্রোসফট অ্যাকসেস (Microsoft Access), মাইক্রোসফট এসকিউএল সার্ভার (Microsoft SQL), মাইক্রোসফট এসকিউএল সার্ভার (Microsoft SQL Server), ওরাকল (ORACLE), কোরেল প্যারাডক্স (Corel Paradox), লোটাস এপ্রোচ (Lotus Approach), ডিবেজ (dbase), ফক্সপ্রো (Foxpro), ফাইল মেকার প্রো (File Maker Pro), ফোর্থ ডাইমেনশন (4D) ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য ডেটাবেস ম্যানেজমেন্ট সফটওয়্যার।

ক্যাড (CAD):

Computer Aided Design / Drafting কে সংক্ষেপে CAD বলে। লাইন বাড়লে রেখার সাহায্যে নকশা বা ডিজাইন করার জন্য এই সফটওয়্যার ব্যবহার করা হয়। একজন স্থপতি তার প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি বা উপকরণের সাহায্যে রেখা বা দাগ টেনে নকশার কাজ করতে যে সময় লাগে সফটওয়্যারের মাধ্যমে তার চেয়ে জটিল নকশা অনেক কম সময়ে এবং নিখুঁতভাবে করা যায়। রেখাংকনের ক্ষেত্রে এই সফটওয়্যার এর মাধ্যমে মিলিমিটার পর্যন্ত নিখুঁতভাবে মাপা সম্ভব হয়।
উদাহরণঃ
  • অটোক্যাড (AutoCAD)
  • টার্বোক্যাড (Turbo CAD)
  • ফাস্টক্যাড (FastCad)
গ্রাফিক্স অ্যানিমেশন সফটওয়্যারঃ
বিভিন্ন ধরনের কার্টুন, থ্রিডি, ফোর ডি অবজেক্ট তৈরি বা অ্যানিমেশন তৈরি এবং কোন স্থিরচিত্রকে মোশান দেওয়ার জন্য গ্রাফিক্স এনিমেশন সফটওয়্যার ব্যবহার করা হয়। যেমন- অটোডেক্স থ্রিডি ম্যাক্স (Autodesk 3ds Max), মায়া (Maya) প্রভৃতি ।
ডেস্কটপ পাবলিকেশন্স সফটওয়্যারঃ
বিভিন্ন রকমের প্রিন্টিং এর কাজ করার জন্য ডেস্কটপ পাবলিকেশন্স সফটওয়্যার ব্যবহার করা হয়।
যেমন-
  • এ্যাডোবি অ্যাক্রোব্যাট (Adobe Acrobat)
  • অ্যাডোবি পেজমেকার (Adobe Pagemaker)
  • কোয়ার্ক এক্সপ্রেস (QuarkXPress)

মাল্টিমিডিয়া সফটওয়্যার

ডিজিটাল মুভি নাটক গান এবং অন্যান্য ভিডিওতে সাউন্ড ও এনিমেশন সহ বিভিন্ন ধরনের ইফেক্ট দেওয়ার জন্য এই সফটওয়্যার ব্যবহার করা।
যেমন-
  • উইন্ডোজ মিডিয়া প্লেয়ার (Windows Media Player)
  • জেট অডিও প্লেয়ার (Jet Audio Player)
  • এ্যাডোবি ফ্লাস (Adobe Flash Player)
প্রেজেনটেশন সফটওয়্যারঃ
বিভিন্ন ধরনের স্লাইড শো উপস্থাপনের জন্য এ সফটওয়্যার ব্যবহার করা হয়।
উদাহরণ-
  • মাইক্রোসফট পাওয়ারপয়েন্ট (Microsoft Power point)
  • কোরেল প্রেজেন্টেশন (Corel Presentations)
  • ম্যাক্রোমিডিয়া ফ্ল্যাস (Macromedia flash)
  • ফ্রিল্যান্স গ্রাফিক্স (Freelance Graphics)
  • হার্ভার্ড গ্রাফিক্স (Harvard Graphics)
  • ইমপ্রেস (Impress)
ওয়েব ব্রাউজিং সফটওয়্যারঃ
বিভিন্ন ধরনের ওয়েবসাইট বা ওয়েব পেজকে ব্রাউজ করা বা খুলে দেখার জন্য যে সফটওয়্যার ব্যবহার করা হয় তাকে ড্রাইভিং সফটওয়্যার বলে।
যেমন-
  • Google Chrome
  • Internet Explorer
  • Mozilla Firefox
  • Safari
  • Opera
  • Netscape Navigator no
মেইল ইউজার এজেন্ট বা ই-মেইল রিডারঃ
ই-মেইল ব্যবহার করার জন্য নিম্নলিখিত সকল সফটওয়্যার ব্যবহৃত হয়।
  • Gmail
  • Yahoo mail
  • Microsoft Outlook Express
  • Netscape Messenger
  • Mozilla Thunderbird
  • Eudora
  • Kmail
  • IBM Lotus Notes
ফার্মওয়্যার (Firmware):
ফার্মওয়ার হল সেই সকল সফটওয়্যার যেগুলো কম্পিউটার তৈরি করার সময় কম্পিউটারের মেমোরিতে স্থায়ীভাবে সংরক্ষণ করে দেওয়া হয়। কে পরিবর্তন করা যায় না। কম্পিউটার নির্মাতা প্রতিষ্ঠান কম্পিউটার তৈরীর সময় সেমিকন্ডাক্টর র-মে এই সফটওয়্যার গুলো স্থায়ীভাবে স্থাপন করে দেন।
কম্পিউটার অন করার সাথে সাথে এই সফটওয়্যার গুলো কার্যকরী হয়ে ওঠে। তবে অনেক কম্পিউটার বিজ্ঞানী ফার্মওয়্যার বলতে শুধু অত্যাবশ্যকীয় এই সফটওয়্যার গুলোকে বুঝান না। তাদের মতে “ডাটা নির্দেশনা এবং হার্ডওয়ার কে একত্রে ফার্মওয়্যার বলে”।
যেমন- ROM ও BIOS এর মধ্যে যে ডেটা এবং নির্দেশগুলো থাকে তা ফার্মওয়্যার।

BIOS (Basic Input/Output System):

একটি কম্পিউটার চালু হওয়ার সময় সর্বপ্রথম যে কোডটি সচল হয় তাকে BIOS বলে।
BIOS এর কাজঃ
  • Power on self test (POST): BIOS সিস্টেম ডিভাইজ যেমন- সিপিইউ, র‍্যাম, ভিডিও ডিসপ্লে কার্ড, মাউস, কী-বোর্ড, হার্ড ডিস্ক, অপটিক্যাল ডিস্ক ড্রাইভ এবং অন্যান্য ড্রাইভ সনাক্ত করে ।
  • BIOS বুট ডিভাইস (যেমন- হার্ড ডিস্ক বা সিডি/ ডিভিডি) কে সনাক্ত করে তাতে সফটওয়্যার ইন্সটল করে পিসির কন্ট্রোল বুট ডিভাইসকে দিয়ে দেয়। এই ঘটনাকে বুটিং (Booting) বলে।

Ctrl+Alt+Delete("three-finger salute")

Control+Alter+Delete একটি গুরুত্বপূর্ণ কী-বোর্ড কমান্ড যা নিম্নলিখিত কাজ করার জন্য ব্যবহৃত হয়-
(ক) To reboot the computer (কম্পিউটারকে রিবুট করতে)
(খ) Summon the task manager (টাস্ক ম্যানেজারকে তলব করতে)
(গ) Summon the Windows Security which provides the option to end programs and start new programs. (উইন্ডোজ নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে তলব করে যার ভিতর প্রোগ্রাম বন্ধ করা এবং নতুন প্রোগ্রাম চালু করার ব্যবস্থা আছে।)

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

Timeline Treasures নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url