ডায়াবেটিস থেকে বাঁচার ২০ টি উপায়

সুপ্রিয় পাঠক আজ এই আর্টিকেলে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হবে এবং সেটি কি হলো ডায়াবেটিস বা মধুমেহ রোগ। ডায়াবেটিস এমন একটি রোগ যা একেবারে নিরাময় করা সম্ভব নয়। ডায়াবেটিসকে কেবলমাত্র নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। বর্তমানে বাংলাদেশ সহ সারা বিশ্বে ডায়াবেটিস রোগীর সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।

ডায়াবেটিস থেকে বাঁচার ২০ টি উপায়

বর্তমানে প্রায় প্রতিটি পরিবারেই ডায়াবেটিস রোগী দেখা যায়। বিশ্ব সংস্থা সংস্থা এই অবস্থাকে ডায়াবেটিস মহামারীর রূপে আখ্যায়িত করেছে। ডায়াবেটিস কি বা কাকে বলে? ডায়াবেটিসের ধরন ও প্রকার এবং ডায়াবেটিসের লক্ষণ সহ বিশেষ করে ডায়াবেটিস থেকে বাঁচার ২০ টি উপায় নিয়ে আলোচনা করা হবে আজকের আর্টিকেলে।

সূচিপত্রঃ ডায়াবেটিস কি - ডায়াবেটিসের ধরণ ও লক্ষণ - ডায়াবেটিস থেকে বাঁচার ২০ টি উপায় সম্পর্কে জানুন

ভুমিকা

ডায়াবেটিস অপর নাম (মধুমেহ বা বহুমূত্র রোগ) যা একটি সাধারণ অন্তঃস্রাব রোগ। এ রোগটি পুরুষ কিংবা মহিলা যে কোন বয়সে আক্রান্ত হতে পারে। এই রোগের ডাক্তারি নাম হচ্ছে ডায়াবেটিস মেলাইটাস। এ রোগের ফলে রক্তের শর্করা বা কার্বোহাইডেট এর মাত্রা বেড়ে যায়। ডায়াবেটিস দুই প্রকার টাইপ ওয়ান টাইপ টু। ডায়াবেটিসের হলে চোখ, কিডনি, লিভার সহ শরীরের বিভিন্ন জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে। যার ফলে অন্ধত্ব, হৃদ যন্ত্র ও রক্তনালী অসুখ হতে পারে।

ডায়াবেটিস কি?

ইনসুলিন মানব দেহের রক্তের শর্করা পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করে থাকে আর এই ইনসুলিন তৈরি হয় মানবদেহের অগ্নাশয় থেকে। মানবদেহের অগ্নাশয় কোন কারণে যদি পর্যাপ্ত ইনসুলিন তৈরি করতে ব্যর্থ হয় কিংবা ইনসুলিন ব্যবহারে ব্যর্থ হয় তাহলে মানব শরীর যে রোগে আক্রান্ত হয় তাকে ডায়াবেটিস বা বহুমূত্র রোগ বলে।

শরীরে ইনসুলিন উৎপাদন বা ইনসুলিনের কাজ করার ক্ষমতা-এর যেকোনো একটি বা দুটোই যদি ব্যর্থ হয়, তাহলে রক্তে শর্করা বা কার্বোহাইড্রেট বা গ্লুকোজ এর মাত্রা বেড়ে যায়। আর একে নিয়ন্ত্রণ করা না হলে শরীরে বিভিন্ন রকম জটিলতা, দেহের টিস্যু ও যন্ত্র বিকল হতে পারে। মূলত ইনসুলিনের অভাব বা ঘাটতি হচ্ছে ডায়াবেটিস রোগের মূল কারণ।

ডায়াবেটিস সম্পর্কে ভ্রান্ত ধারণ

“বেশি পরিমাণে চিনি খেলে বা মিষ্টি খেলে ডায়াবেটিস হয়”
অত্যধিক পরিমাণে চিনি বা মিষ্টি খেলে ডায়াবেটিস হয় এটি একটি ভূল ধারণ। ডায়াবেটিস একটি জটিল রোগ এবং এটি প্রধানত অনেকগুলো বিষয়ের কারণে হয়ে থাকে। কোন ব্যক্তির ডায়াবেটিস রোগ ধরা পড়লে সেই ব্যক্তির চিনি বা মিষ্টি জাতীয় খাবার খাওয়া সীমিত করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

ডায়াবেটিসের ধরণ

ডায়াবেটিস কে প্রধানত দুই ভাগে ভাগ করা যায়।
প্রথমতঃ টাইপ-০১ ডায়াবেটিস
দ্বিতীয়তঃ টাইপ-০২ ডায়াবেটিস
সাধারণত টাইপ-০১ ডায়াবেটিস, টাইপ-০২ ডায়াবেটিস এর থেকে তুলনামূলক কম হয়ে থাকে। এটিকে জুভেনাইল ডায়াবেটিস ও বলা হয়ে থাকে। সাধারণত অল্প বয়সে বা কম বয়সে যাদের ডায়াবেটিস হয়ে থাকে তাদের মধ্যে টাইপ-০১ ডায়াবেটিস হওয়ার প্রবণতা অনেক বেশি।
টাইপ-০১ ডায়াবেটিসঃ
টাইপ-০১ ডায়াবেটিসঃ টাইপ-০১ ডায়াবেটিসকে অটোইমিউন রোগ বলা হয়ে থাকে। যখন মানুষের শরীরে অগ্নাশয়ে অবস্থিত ইনসুলিন উৎপাদনকারী কোষ ক্ষতিগ্রস্ত হয় তখন মানুষের শরীরে উৎপাদন একেবারেই বন্ধ হয়ে যায় তখন এই অবস্থাকে চিকিৎসকরা টাইপ-০১ ডায়াবেটিস বলে থাকেন। প্রধানত টাইফয়েড আইডিটির জিনগত সমস্যার কারণে হয়ে থাকে।
অপ্রাপ্তবয়স্ক নারী ও পুরুষদের মধ্যে এই রোগটি অনেক বেশি দেখা যায়। অপরপক্ষে, টাইপ-০২ ডায়াবেটিস শরীরের ওজন ও খাদ্যাভ্যাসের উপর নির্ভর করে। টাইপ-০২ ডায়াবেটিসের লক্ষণ ধীরে ধীরে শরীরের মধ্যে প্রকাশ পেতে থাকে।
টাইপ-০২ ডায়াবেটিসঃ
টাইপ-০২ ডায়াবেটিসের ক্ষেত্রে অগ্নিসয়ে অবস্থিত উৎপাদনকারী কোষের কোন ক্ষতি হয় না তবে মানুষের শরীর ইনসুলিন গ্রহণের ক্ষেত্রে বাধা প্রদান করে। যার ফলে টাইপ-০২ ডায়াবেটিসের ক্ষেত্রে রক্তের মধ্যে কার্বোহাইড্রেট বা শর্করার মাত্রা অধিক হারে বৃদ্ধি পেতে থাকে।
একটি গবেষণায় দেখা গেছে, ৩ দশক পূর্বেও তরুণ-তরুণীদের এবং শিশুদের মধ্যে এই রোগ দেখা না গেলেও বর্তমানে তারাও এই রোগের হাত থেকে রেহাই পাচ্ছে না। উল্লেখ্য, এই দুই ধরনের ডায়াবেটিসের ক্ষেত্রে একই ধরনের উপসর্গ বা লক্ষণ দেখা যায়।

ডায়াবেটিসের লক্ষণ

টাইপ-০১ ডায়াবেটিসের লক্ষণঃ
টাইপ-০১ ডায়াবেটিসের সূত্রপাত খুব তাড়াতাড়ি ঘটে এবং নিম্নে বর্ণিত উপসর্গগুলো হঠাৎ দেখা দিতে পারে।
  • তীব্র পিপাশা পাওয়া
  • অতিরিক্ত প্রস্রাবের প্রবণতা
  • ওজন হ্রাস দ্রুত ঘটে
  • প্রচন্ড ক্ষুধা পাওয়া
  • দুর্বলতা বা ক্লান্তি অনুভব করা
  • অস্বাভাবিক বিরক্তি অনুভব করা
  • চোখে ঝাপসা দেখা
  • বমি বমি ভাব
  • পেটে ব্যথা
  • অপ্রীতিকর গন্ধের অনুভূতি
  • শরীরের বিভিন্ন জায়গায় চুলকানি হওয়া
টাইপ-০২ ডায়াবেটিসের লক্ষণঃ
টাইপ-০২ ডায়াবেটিস কে সাধারণত ইনসুলিন অনির্ভর ডায়াবেটিস করা হয়ে থাকে। ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে প্রায় ৯০ শতাংশ লোক টাইপ-০২ ডায়াবেটিসে রোগে ভুগে থাকেন। টাইপ-০২ ডায়াবেটিসকে প্রাপ্তবয়স্ক সূচক ডায়াবেটিস ও বলা হয়। কারণ, সাধারণত টাইপ-০২ ডায়াবেটিস ৩৫ বয়স ঊর্ধ্ব নারী ও পুরুষের মধ্যে প্রকাশ পেয়ে থাকে।
তবে বর্তমানে অল্পবয়স্ক নারী ও পুরুষদের মধ্যে টাইপ-০২ ডায়াবেটিসের লক্ষণ প্রকাশ পাচ্ছে। টাইপ-০২ ডায়াবেটিসের সূত্রপাত সাধারণত ধীরে ধীরে হয়ে থাকে এবং এর লক্ষণগুলো টাইপ-০১ ডায়াবেটিস এর মত স্পষ্ট ভাবে লক্ষণীয় হয় না।
  • অতি ধীর গতিতে ক্ষতস্থান নিরাময়
  • তীব্র তৃষ্ণা পাওয়া
  • অতিরিক্ত প্রস্রাবের প্রবণতা
  • খুব দ্রুত ওজন হ্রাস পাওয়া
  • অপ্রীতিকর গন্ধের অনুভূতি
  • পায়ে এবং হাতে ঝিনঝিন করা
  • শরীরের বিভিন্ন জায়গায় চুলকানি হওয়া
  • মুত্রনালীতে সংক্রমণ
  • ঝাপসা দেখা
  • মেজাজ এর পরিবর্তন
  • মাথাব্যথা ওমাথা ঘোরা
  • ঘাড় এবং বগলসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে কালচে দাগ বা র‍্যাস হওয়া

ডায়াবেটিস থেকে বাঁচার ২০ টি অভিনব উপায়

>বর্তমানে শুধু বয়স্ক মানুষই নয় বরং তরুণরা এখন ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হচ্ছে। যেহেতু ডায়াবেটিসকে একেবারে নিরাময় করা সম্ভব নয় সেহেতু ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হলে তাকে নিয়ন্ত্রণ রাখতে হবে। কথায় আছে, প্রতিকারের চাইতে প্রতিরোধ উত্তম। তাই যেহেতু ডায়াবেটিস একটি অনিরাময় যোগ্য রোগ সেহেতু কিছু উপায় আগে থেকে পালন করলে ডায়াবেটিসকে দূরে রাখা সম্ভব। এখানে ডায়াবেটিসের সচেতনতামূলক কিছু উপায় নিয়ে আলোচনা করা হলো।
১. ডায়াবেটিসকে জানুন
ডায়াবেটিসের একটি অনিরময় যোগ্য রোগ। মানুষের শরীরের মধ্যে ইনসুলিনের ভারসাম্যহীনতার কারণে রক্তে শর্করার মাত্রা অস্বাভাবিক হারে বেড়ে যাওয়ার ফলে ডায়াবেটিসের সৃষ্টি হয়। তাই আগে থেকেই ডায়াবেটিস সম্পর্কে জ্ঞান রাখা আবশ্যক। যার ফলে আগে থেকেই ডায়াবেটিস সম্পর্কে সচেতনতা গড়ে তোলা সম্ভব।
২. কম পরিমনে খাবার খাওয়া
ডায়াবেটিসের অন্যতম প্রধান কারণ হচ্ছে অতিরিক্ত খাবার খাওয়া। ডায়াবেটিস থেকে দূরে থাকতে হলে অবশ্যই খাবারের পরিমাণ কমানো উচিত।
খাবারকে কন্ট্রোল করার জন্য ছোট ছোট প্লেটে অল্প অল্প করে খাবার নিয়ে খেতে পারেন।
এছাড়া খাবার খাওয়ার পূর্বে অবশ্যই এক গ্লাস পানি খেয়ে নিলে খাবারের পরিমাণ কমানো সম্ভব হতে পারে।
৩.নিয়মিত শরীর চর্চা করা
শরীরকে সুস্থ রাখার জন্য নিয়মিত শারীরিক ব্যায়াম বা শরীর চর্চা করা স্বাস্থ্যের জন্য সবচাইতে উপকার। শুধু ডায়াবেটিস কে দূরে রাখা নয় শরীরকে সুস্থ রাখতে হলে শরীরের অতিরিক্ত ওজন নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। ডায়াবেটিস এর মত অনিরাময় যোগ্য রোগ সহ বিভিন্ন রোগকে দূরে রাখতে শারীরিক ব্যায়াম বা শরীরচর্চা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
৪. ওজন কমানো
অতিরিক্ত ওজনের ফলে শরীরে ডায়াবেটিস সহ বিভিন্ন ধরনের রোগ বাসা বাধতে পারে। তাই শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণ ডায়াবেটিস প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
৫. লাল আটার খাবার খাওয়া
সাদা আটা বা ময়দার চাইতে লাল আটা শরীরের জন্য উপকারী। তাই ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমাতে ধবধবে সাদা আটা-ময়দা বাদ দিয়ে লাল আটার তৈরির রুটি বা অন্যান্য জিনিস খান।
৬. সকালের নাস্তায় গুরুত্ব দিন
দিনের শুরুতে বা সকালে নাস্তা করা অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ। সকালের খাবার না খাওয়া শরীরের জন্য খুবই ক্ষতিকর। সারাদিনের ক্ষুধা কমানোর জন্য সকালের নাস্তার সাথে অবশ্যই প্রোটিনযুক্ত খাবার যুক্ত করুন। যেটি শরীরকে সুস্থ রাখার পাশাপাশি ডায়াবেটিসকেউ দূরে রাখে।
৭. চর্বিযুক্ত খাবার পরিহার করুন
অতিরিক্ত চর্বিযুক্ত খাবার কিংবা চাইনিজ খাবার, ফাস্টফুড খাবার এবং দোকানের জাঙ্ক ফুড বা অন্যান্য অস্বাস্থ্যকর খাবারে অতি উচ্চমাত্রায় স্যাচুরেটেড ফ্যাট থাকে যেগুলো আপনার রক্তের ক্ষতিকর কোলেস্টেরল এর মাত্রা বাড়িয়ে দিতে পারে। এটি রক্তের শর্করার মাত্রাও বাড়াতে সাহায্য করে। তাই সুস্থ থাকতে হলে অবশ্যই এই খাবার গুলো পরিহার করুন।
৮.সফট ড্রিঙ্ক বা কোমল পানীয় পরিহার করুন
অনেক মানুষেরই পিপাসা পেলে কোমল পানীয় বা সফ্ট ড্রিংক পান করার অভ্যাস রয়েছে যেটি স্বাস্থ্যের জন্য অনেক ক্ষতিকর। প্রকৃতপক্ষে যে কোনো মিষ্টি পানি স্বাস্থ্যের জন্য হানিকারক।
এ সকল পানির মধ্যে প্রচুর পরিমাণে সুগার এবং কার্বোহাইডেট থাকে যা স্বার্থের জন্য ক্ষতিকর। শরীরকে সুস্থ রাখতে হলে অবশ্যই এসব পানি পরিহার করা উচিত।
৯. স্বাস্থ্য ও পুষ্টিকর খাবার খাওয়া
বিকেলের ক্ষুধা নিবারণের জন্য আপনি অস্বাস্থ্যকর জাঙ্ক ফুড বা ফাস্টফুড পরিহার করে তাজা ফলমূল কিংবা সালাদ খেতে পারেন। এই খাবারগুলো আপনাকে ডায়াবেটিস থেকে দূরে রাখতে সহায়তা করবে।
১০. প্রচুর পরিমাণে শাক-সবজি খান
অনেকেই শাক-সবজি খেতে মোটেও পছন্দ করেন না। বিশেষ করে ছোট বাচ্চারা একদম শাক-সবজি খেতে পছন্দ করেনা শরীরকে সুস্থ রাখতে শাক-সবজি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। শাক-সবজিতে প্রচুর পরিমাণে প্রয়োজনীয় ভিটামিন ও প্রোটিন থাকে। তাই প্রতিদিনের খাবারের তালিকায় অবশ্যই প্রচুর পরিমাণে শাক-সবজি রাখুন।
১১. মানসিক চাপমুক্ত থাকুন
আপনার রক্তের শর্করার মাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ার অন্যতম কারণ হতে পারে মাত্রাধীন তো মানুষের চাপ। শরীরের রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণ রাখতে মানসিক চাপ থেকে দূরে থাকুন।
১২. পর্যাপ্ত ঘুমানোর অভ্যাস করুন
শরীরকে সুস্থ রাখতে ঘুমের কোন বিকল্প নেই। একটি প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের জন্য ২৪ ঘন্টার মধ্যে ৭ থেকে ৮ ঘন্টা ঘুমানো প্রয়োজন। এতে করে আপনার দেহের এবং মানসিক চাপ অধিকাংশ কমে যাবে। ফলে ডায়াবেটিসহ বিভিন্ন রোগ থেকে দূরে থাকতে সক্ষম হবেন। ঘুমের অভাবে মানবদেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যেতে থাকে।
১৩. আঁশযুক্ত খাবার খান
শরীরকে সুস্থ রাখতে যেসব শাক-সবজি ও খাবারে প্রচুর পরিমাণে আঁশ রয়েছে সেই খাবার গুলো খেতে পারেন। আঁশযুক্ত খাবার ডায়াবেটিস বিশেষ করে টাইপ-০২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। শরীরের রক্তের শর্করা মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে প্রতিদিন কমপক্ষে ২৫ থেকে ৩০ গ্রাম আঁশযুক্ত খাবার খাদ্য তালিকায় যুক্ত করুন।
১৪.পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করুন
মানুষের শরীরের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হচ্ছে পানি। খাবারকে হজম করা সহ শক্তি উৎপাদনের জন্য মানুষের শরীরে পানি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। শরীরের রক্তের শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করা উচিত। পর্যাপ্ত পানির অভাবে শরীরে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
১৫.নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করুন
ডায়াবেটিস থেকে দূরে থাকতে হলে অবশ্যই নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা উচিত। অধিকাংশ ক্ষেত্রে ডায়াবেটিসের লক্ষণ গুলো প্রকাশ পায় না। এ কারণে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীরা বুঝতে পারেনা ফলে পরিস্থিতি জটিল হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
১৬.সান বাথ করুন
শরীরের কার্যকারিতা বৃদ্ধি করতে ভিটামিন ডি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। যেহেতু সূর্যের তাপে প্রচুর ভিটামিন ডি থাকে সেটির নিয়মিত সূর্যের তাপ গ্রহণ করুন এবং ডায়াবেটিস থেকে দূরে থাকুন।
১৭. মসলা যুক্ত খাবার খান
জার্মানির একটি গবেষণায় দেখা গেছে, দারুচিনি যুক্ত খাবার ডায়াবেটিস দূরে রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে তাই খাবারে দারুচিনি সহ বিভিন্ন ধরনের মসলা ব্যবহার করুন।
১৮. সয়া খাবার খান
ডায়াবেটিস কে প্রতিরোধ করতে সয়া খাবার খেতে পারেন। সয়া যুক্ত খাবার রক্তের শর্করা মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
১৯. গ্রিন টি পান করুন
গ্রিন টি শরীরের ওজন কমানো সহ রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। এতে এন্টিঅক্সিডেন্ট সহ প্রচুর পরিমাণে বিভিন্ন উপাদান রয়েছে।
২০. ধূমপান ও মদ্যপান পরিহার করুন
ধূমপান ও মদ্যপান সহ বিভিন্ন ধরনের অ্যালকোহল পান করা ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনাকে বাড়িয়ে দেয়। ডায়াবেটিসকে দূরে রাখতে এই অভ্যাস গুলোকে অবশ্যই বর্জন করুন।

শেষকথাঃ

বর্তমানে ডায়াবেটিস রোগে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা বেড়েই যাচ্ছে। ডায়াবেটিস একজন মানুষকে বিভিন্ন ভাবে দুর্বল করে যার ফলে কম উপসর্গ থাকে বা কোন সর্বই থাকে না। সময় মত ডায়াবেটিস রোগের চিকিৎসা করা না হলে স্বাস্থ্যের গুরুতর সমস্যা হতে পারে যেমন হৃদরোগ, অন্ধত্ব, অঙ্গ হানি এবং কিডনির সমস্যা হতে পারে। বিভিন্ন ধরনের ফাস্ট ফুড, জাংক ফুড, চাইনিজ খাবার খাওয়া, ধূমপান ও মদ্যপানসহ অন্যান্য অ্যালকোহল জাতীয় খাবার থেকে বিরত থাকতে হবে। প্রয়োজনে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

Timeline Treasures নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url