ডায়াবেটিসের কারণ - ডায়াবেটিসের লক্ষণ ও প্রতিকার

প্রিয় পাঠক আজ আমরা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা করব সেটি হচ্ছে ডায়াবেটিস কি, ডায়াবেটিসের লক্ষণ, কারণ এবং প্রতিকার। বর্তমান বিশ্বে একটি গুরুত্বপূর্ণ এবং বিপদজনক রোগ হচ্ছে ডায়াবেটিস মানবদেহের ইনসুলিন নামের যে হরমোন রয়েছে সেটি সম্পূর্ণ বা আপেক্ষিক অভাবের কারণে বিপাক জনিত গোলযোগ সৃষ্টি হয়ে রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ বৃদ্ধি পেতে পারে এবং একসময় তা প্রস্রাবের সঙ্গে বেরিয়ে যেতে পারে।
ডায়াবেটিসের কারণ - ডায়াবেটিসের লক্ষণ ও প্রতিকার
এভাবে ডাইবেটিস রোগ হয়ে থাকে। ডায়াবেটিস রোগটি হয়ে থাকে জেনেটিক ও লাইন স্টাইল গত কারণে। বর্তমানে অনেক ক্ষেত্রে শারীরিক পরিশ্রমের অভাব, ওজন বেশি হয়ে যাওয়া, বয়স ও ওষুধের পারস্পরিক ক্রিয়ার কারণে ডায়াবেটিস হয়ে থাকে। যেমন ইস্টেরয়েড হরমোন খাইয়া বেশি হওয়ার কারণে ডায়াবেটিস হতে পারে এবং ওজন বেশি হলে ইনসুলিনের কার্যক্ষমতা কমে যেতে পারে।

ভুমিকা

বর্তমান পৃথিবীতে ডায়াবেটিস শব্দটির সাথে আমরা সবাই পরিচিত। বর্তমানে এমন একটি পরিবার খুঁজে পাওয়া যায় না যেখানে কোন ডায়াবেটিস রোগী নেই। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (WHO) এর হিসাব অনুযায়ী বর্ত মানে ডায়াবেটিস একটি মহামারী রোগে পরিণত হয়েছে। এই ডায়াবেটিস রোগের আধিক্য বিস্তারের ফলে সম্প্রতি এমন ঘোষণা দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। ডায়াবেটিস এমন একটি রোগ যার কোন স্থায়ী চিকিৎসা নেই বা যা কখনো ভালো হয় না কিন্তু এই রোগকে সহজে নিয়ন্ত্রণে রাখার সম্ভব।

ডায়াবেটিস কি

ডায়াবেটিস হচ্ছে শরীরের এমন একটি ভয়াবহ এবং গুরুতর অবস্থা যখন মানুষের শরীরে নিজে থেকে ইনসুলিন তৈরি করতে পারেনা বা তৈরিকৃত ইনসুলিন দক্ষতার সঙ্গে (কার্যকর ভাবে) কাজ করতে পারে না। যার ফলে রক্তের শর্করা বা গ্লুকোজের মাত্রা বেশি হয়। ইনসুলিন মানুষের শরীরের কোষগুলিকে শর্করা প্রবেশে নিয়ন্ত্রণ করে অর্থাৎ এটি একটি (চাবি) হিসেবে কাজ করে। ইনসুলিন এর দ্বারা মানুষের শরীরের খাবার থেকে যে চিনি বা শর্করা (গ্লুকোজ) পাওয়া যায় তা রক্তের মধ্যমে বাহিত হয়ে কোষের মধ্যে প্রবেশ করে।

তারপর মানুষের শরীর প্রয়োজনীয় শক্তির জন্য সেই গ্লুকোজ ব্যবহার করে শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় শক্তি (এনার্জি) প্রস্তুত করে। সাধারণত ইনসুলিন তৈরি হয়ে থাকে অগ্নাশয় এর বিশেষ কোষ দ্বারা তৈরি হরমোন (আইলেট অফ ল্যাংগার হ্যান্ড) থেকে। ডায়াবেটিস জনিত ইনসুলিনের তারতম্যের জন্য মানুষের রক্তে শর্করা তারতম্য হতে থাকে।

ডায়াবেটিস কত প্রকার ও কি কি

ডায়াবেটিস প্রথমত দুই ধরনের হয়ে থাকে।
টাইপ-১ ডায়াবেটিস এবং টাইপ-২ ডায়াবেটিস।
টাইপ-১ ডাইবেটিস এবং টাইপ-২ ডায়াবেটিস হলো ডায়াবেটিসের সাধারণ রূপ মাত্র। এছাড়া অন্যান্য ধরনের ডায়াবেটিস হতে পারে যেমন গর্ভকালীন ডাইবেটিস, নিউনেটাল ডায়াবেটিস, জেসটেসানাল ডাইবেটিস ইত্যাদি।

ডায়াবেটিস কিভাবে হয়

আমরা যখন কার্বোহাইডেট বা সাধারণ শর্করা জাতীয় খাবার খেয়ে থাকি তখন সেগুলো ভেঙ্গে গ্লুকোজ এ পরিণত হয়। ইনসুলিনো হচ্ছে এক ধরনের হরমোন। এর কাজ হল মানুষের শরীরে তৈরি গ্লুকোজ কে মানুষের দেহের কোষগুলোতে পৌঁছে দেওয়া। যার ফলে সেই গ্লুকোজ ব্যবহার করে শরীরের কোষগুলো মানুষকে কর্ম ক্ষম করার জন্য প্রয়োজনীয় শক্তি উৎপাদন করে থাকে এবং সেই শক্তির সাহায্যে মানুষ প্রতিদিনের কাজকর্ম করে থাকে।

সুতরাং যখন এই গ্লুকোজ শরীরের কোষে পৌঁছায় না তখন স্বাভাবিকভাবে মানুষের দৈনন্দিন জীবনে কাজের ব্যাঘাত ঘটে থাকে এবং বিভিন্ন ধরনের পারস্পরিক প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। যখন কোন মানুষের ডায়াবেটিস হয় তখনই মানুষের শরীরে ইনসুলিন হরমোনের পরিমাণ হ্রাস পেতে থাকে। ফলে শরীরের কোষে গ্লুকোজ পৌঁছাতে পারে না যার ফলে রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ বেড়ে যায় এবং সাধারণত প্রস্রাবের মাধ্যমে অতিরিক্ত গ্লুকোজ শরীর থেকে বের হয়ে যেতে থাকে এর ফলে ডায়াবেটিস রোগী ঘন ঘন প্রস্রাব করে।

যখন প্রস্রাব বেশি হয়ে থাকে তখন ডায়াবেটিস রোগীর পানির পিপাসা বাড়তে থাকে। অপর পক্ষে, ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়ার কারণে রোগীর শরীর থেকে প্রচুর পরিমাণে গ্লুকোজ বের হয়ে যায় যার ফলে প্রয়োজনীয় শক্তির উৎপাদন করতে পারে না মানুষের শরীরের কোর্সগুলো। যার ফলে ডায়াবটিস রোগীরা ধীরে ধীরে দুর্বলতা ও অবসাদ এ ভুগে থাকে। যদি ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের সঠিক পদক্ষেপ বা ব্যবস্থা গ্রহণ না করে তাহলে শরীরের রক্তনালি স্নায়ু, কিডনি, চোখ হৃদযন্ত্রের সমস্যা সহ নানা ধরনের শারীরিক জটিলতা এবং কমপ্লিকেসান দেখা দিতে পারে।

ডায়াবেটিসের কারণ কি কি

মানুষের শরীরে ডায়াবেটিস হওয়ার জন্য দায়ী হলো দৈনন্দিন জীবনে বিভিন্ন অভ্যাস।
নিয়মিত ব্যায়াম না করাঃ
নিয়মিত প্রতিদিন ব্যায়াম না করা অর্থাৎ শারীরিকভাবে নিষ্ক্রিয় থাকা তাই একটু ডায়াবেটিস হওয়ার অন্যতম প্রধান কারণ।
মানসিক চাপঃ
টাইপ টু ডায়াবেটিস হওয়ার অন্যতম কারণ হলো অত্যধিক মানসিক চাপ। পারিবারিক জটিলতা, অতিরিক্ত কাজের চাপ, মানসিক বিষণ্যতা রক্তে শর্করার পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়।
পর্যাপ্ত ঘুম না হওয়াঃ
প্রতিটি মানুষের যেমন শারীরিক পরিশ্রম করা উচিত ঠিক তেমন ভাবে ডায়াবেটিস থেকে বাঁচার জন্য শারীরিক পরিশ্রমের পর শরীরকে সুস্থ রাখার জন্য পর্যাপ্ত ঘুমের প্রয়োজন। এক গবেষণার তথ্য অনুযায়ী পর্যাপ্ত ঘুম না হলে মানুষের শরীরের শর্করা পরিমাণ বেড়ে যায়।
রাতে খুব বেশি পরিমাণে খাবার খাওয়াঃ
এক গবেষণায় দেখা গেছে, রাতে খুব বেশি পরিমাণে খাবার খাওয়া এবং খাবার পরপরই ঘুমিয়ে যাওয়ার ফলে মানুষের শরীরে শর্করার পরিমাণ বেড়ে যেতে পারে।
সকালের নাস্তা না খাওয়াঃ
মানুষের শরীর কি কর্মক্ষম করার জন্য সকালের নাস্তা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। এটি গবেষণায় দেখা গেছে, যে সকল ডায়াবেটিস রোগী সকালে নাস্তা খান না তাদের রক্তে শর্করার পরিমাণ বেড়ে যায়।

ডায়াবেটিসের লক্ষণগুলো কি কি

ডায়াবেটিস রোগে আক্রান্ত হওয়ার প্রাথমিক লক্ষণ গুলোর মধ্যে রয়েছেঃ-
অতিরিক্ত দুর্বলতা অনুভব করাঃ
ডায়াবেটিসের প্রাথমিক লক্ষণের মধ্যে রয়েছে, স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া এবং প্রয়োজনীয় বিশ্রাম নেওয়ার পরেও দুর্বলতা অনুভব করা। এছাড়াও বারবার পানির পিপাসা পাওয়া, গলা শুকিয়ে যাওয়া এবং অল্প পরিশ্রমে ক্লান্তি অনুভব করা অথবা পরিশ্রম ছাড়াই ক্লান্তি অনুভব করা ডায়াবেটিস রোগের অন্যতম লক্ষণ।
ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়াঃ
মানুষের শরীরে শর্করার পরিমাণ যদি বেড়ে যায় তাহলে কিডনি সঠিকভাবে শর্করা পরিশোধন করতে পারে না ফলে তা প্রস্রাবের সাথে বেরিয়ে আসে এবং সে কারণেই বারবার প্রস্রাবের বেগ আসে। যেটি ব্যাকটেরিয়া ও ইস্ট এর সংক্রমণও ঘটাতে পারে। প্রয়োজনের তুলনায় বেশি বেশি শৌচাগার ব্যবহার করার ডায়াবেটিসের অন্যতম লক্ষণ।
বিনা কারণে ওজন কমে যাওয়াঃ
মানুষের শরীরে শর্করার মাত্রা বেড়ে গেলে খুব দ্রুত শরীরের ওজন কমে যেতে থাকে যার কারণে মানুষের শরীর শক্তি উৎপাদনের জন্য পর্যাপ্ত গ্লুকোজ ব্যবহার করতে পারে না। শরীরের কোষগুলো যখন গ্লুকোজ ব্যবহার করতে পারে না তখন মানুষের শরীরে চর্বি ভাঙতে শুরু করে যার ফলে শরীরের ওজন হ্রাস পেতে থাকে। ওজন কমানোর চেষ্টা ছাড়াই ওজন কমে যাওয়া ডায়াবেটিস রোগের অন্যতম লক্ষণ।
দৃষ্টিশক্তি হ্রাস পাওয়াঃ
শরীরের শর্করা বৃদ্ধি পেলে দৃষ্টি শক্তি কমে যায়। যার ফলে চোখের দৃষ্টির প্রখরতা কমে যায় এবং চোখের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দেয়। তাই চোখের দৃষ্টি শক্তি হঠাৎ কমে গেলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নেয়া উচিত।
ত্বকের রঙের পরিবর্তনঃ
ইনসুলিন প্রতিরোধের ফলে পায়ের সংযোগস্থল ও গলা ইত্যাদি স্থানের ত্বকে (পিগমেন্টেশন) রঙের তারতম্য দেখা দিতে পারে। ত্বকে কালচেভাব বা র‌্যাস দেখা দিলে সাথে সাথে ডাক্তারের পরামর্শ নেয়া উচিত।
ক্ষতস্থান দ্রুত না সারাঃ
শরীরের কোন স্থান কেটে গেলে অথবা ঘা হলে সে স্থান দ্রুত ভালো না হওয়া ডায়াবেটিস রোগের অন্যতম লক্ষণ। কোন মানুষের শরীরে উপরের লক্ষণ গুলো দেখা দিলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নেয়া উচিত।

ডায়াবেটিসের নরমাল ভলিউম

খালি পেটে/Fasting Blood Sugar: 70 - 110 mg/dl
ভরা পেটে/2HABF: upto - 140 mg/dl
ডায়াবেটিস সাধারণত 40 mg/dl এর নিচে অথবা 400 mg/dl এর বেশি হলে রোগী স্ট্রোক করতে পারে।

ডায়াবেটিসের চিকিৎসা

ডায়াবেটিস এমন একটি রোগ যা কখনো সারে না তবে একে নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। মেডিসিন এবং নিয়মমাফিক জীবন যাপন করলে ডায়াবেটিস রোগকে কন্ট্রোল করে সুস্থ থাকা সম্ভব।
শরীরের ওজন কমিয়ে ফেলাঃ
শরীরের বাড়তি ওজন ডায়াবেটিসের অন্যতম প্রধান কারণ তাই ডায়াবেটিস থেকে বাঁচার জন্য শরীরে অতিরিক্ত ওজন অবশ্যই কমিয়ে ফেলা উচিত। শরীরের ওজন স্বাভাবিক মাত্রায় থাকলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব।
খাবারের নিয়ন্ত্রণ রাখাঃ
ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য চিনি, মিষ্টি জাতীয় খাবার যতটা সম্ভব পরিবার করতে হবে। শর্করা সমৃদ্ধ খাবার যেমন চাল, ডাল, আটা দিয়ে তৈরি খাবার, মিষ্টি ফল ইত্যাদি কিছুটা হিসাব করে মেপে খেতে হবে। আস সমৃদ্ধ খাবার যেমন ডাল, শাক সবজি, টক ফল ইত্যাদি বেশি খেতে পারবে। সম্পৃক্ত চর্বি যেমন (ঘি, মাখন, ডালডা, মাংস) ইত্যাদি ইত্যাদি কম খাওয়া উচিত। সম্পৃক্ত চর্বি এর পরিবর্তে অসম্পৃক্ত চর্বি যেমন (উদ্ভিদের তেল অথবা সয়াবিন তেল, সূর্যমুখী তেল) ইত্যাদি এবং মাছ খাওয়ার অভ্যাস করতে হবে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়মিত সময়ে খাবার খেতে হবে।
নিয়মিত ব্যায়াম করাঃ
শরীরের সুস্থ রাখার জন্য নিয়মিত শারীরিক ব্যায়াম করা অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য নিয়মিত শারীরিক ব্যায়াম ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ রাখতে খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এই শরীরচর্চা বা শারীরিক ব্যায়ামের মাধ্যমে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা কন্ট্রোল করা সম্ভব।
মানসিক চাপ পরিহার করাঃ
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ রাখতে হলে অবশ্যই মানসিক চাপ থেকে দূরে থাকতে হবে অতিরিক্ত মানসিক চাপে থাকলে কিছুক্ষণ হাঁটাহাঁটি করুন অথবা লম্বা করে শ্বাস নিয়ে ধীরে ধীরে শাঁস ছাড়া চেষ্টা করুন এবং তা নিয়মিত চেষ্টা করুন।
পর্যাপ্ত ঘুমের অভ্যাস করাঃ
একজন মানুষের শরীরকে সুস্থ রাখতে অবশ্যই ঘুমের প্রয়োজন। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করতে অবশ্যই পর্যাপ্ত ঘুমানো উচিত। অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিসকে প্রয়োজনীয় ওষুধের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসা এবং ডায়াবেটিসজনিত জটিলতাগুলো এড়াতে একজন চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
ডায়াবেটিস থেকে প্রতিকার পাওয়ার উপায়
নিয়মিত শরীর চর্চা করাঃ
শরীরের সুস্থ রাখার জন্য নিয়মিত শারীরিক ব্যায়াম করা অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ। নিয়মিত শারীরিক ব্যায়াম ডায়াবেটিস প্রতিরোধ করতে খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এই শরীরচর্চা বা শারীরিক ব্যায়ামের মাধ্যমে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা কন্ট্রোল করা সম্ভব।
খাবার নিয়মতন্ত্রঃ
চা বা কফিতে অতিরিক্ত চিনি ব্যবহার থেকে বিরত থাকতে হবে। প্রক্রিয়া জাতকৃত খাবার ও পানীয় এড়িয়ে চলতে হবে। বিশেষ করে চাইনিজ খাবার বা ফাস্টফুড খাবারের বিভিন্ন ধরনের ফ্যাট, ক্যালরি, সোডিয়াম, কার্বোহাইড্রেট এর মাত্রা অতিরিক্ত পরিমাণে থাকে।
যা শরীরে এ সুগারের মাত্রা অনেক বেশি বাড়িয়ে তোলে। বিশেষ করে বিভিন্ন ধরনের সফট ড্রিম, অধিক ক্যালরিযুক্ত খাবার, আইসক্রিম, চকলেট এবং অ্যালকোহল জাতীয় খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।
পুষ্টিকর খাবার খাওয়াঃ
শরীরকে সুস্থ রাখতে হলে এবং ডায়াবেটিস প্রতিরোধ করতে হলে প্রচুর পরিমাণে সবুজ শাকসবজি, ফলমূল, মাছ, কম শর্করাযুক্ত খাদ্য, কম চর্বিযুক্ত খাদ্য গ্রহণ করতে সবাইকে উদ্বুদ্ধ করতে হবে। শারীরিক পরিশ্রম বা শরীর চর্চার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। সামাজিক সচেতনতার মাধ্যমে শিশুদের ছোটবেলা থেকে খেলাধুলার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে।
মদ্যপান ও ধূমপান ত্যাগঃ
কেবলমাত্র ডায়াবেটিস নয় আরো অনেক রোগের ভয়াবহ কারণ হতে পারে ধূমপান ও মধ্যপানের অভ্যাস। শব্দের মতে যেসব খারাপ অধ্যায় সবার আগে ত্যাগ করা উচিত তার মধ্যে রয়েছে ধূমপান ও মধ্যপানের অভ্যাস কারণ এই অভ্যাসগুলো ডাইবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনাকে অনেকাংশে বাড়িয়ে দিতে পারে।
রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা পরীক্ষা করাঃ
চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী যাদের ডাইবেটিসের আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে তাদের অবশ্যই বছরে একবার ডায়াবেটিস পরীক্ষা করাতে হবে। রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা পরিমাপ করার জন্য হাসপাতালে যেতে হবে এমনটি নয় বর্তমানে অনেক ফার্মেসিতে স্বল্প মূল্যে দ্রুত ডায়াবেটিস পরীক্ষা করা হয় সেখানে ডায়াবেটিস সনাক্ত হলে অবশ্যই একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে যাদের বংশগত ভাবে ডায়াবেটিসের ইতিহাস রয়েছে তাদের কেউ বছরে অন্তত একবার ডায়াবেটিস পরীক্ষা করাতে হবে সেই সাথে বছরে অন্তত একবার লিপিড প্রোফাইল ও রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা পরীক্ষা হবে।

শেষ কথা

ডায়াবেটিস রোগীদের সুস্থ স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে হলে অবশ্যই পরিণত খাদ্য গ্রহন, সুশৃংখল জীবন যাপন ও নিয়মিত ওষুধ সেবন করতে হবে। ডায়াবেটিসের কারণ নির্ণয়, নিয়ন্ত্রণ এবং প্রতিরোধ করতে মানুষের মধ্যে অবশ্যই সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে। প্রয়োজনীয় এবং কার্যকর স্বাস্থ্য শিক্ষার মাধ্যমে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীদের স্বাস্থ্যকর খাদ্য গ্রহণ, নিয়মিত শরীরচর্চা বা শারীরিক ব্যায়াম, ওজন নিয়ন্ত্রণ করা, সুশৃংখল জীবন যাপনে উদ্বুদ্ধ করতে হবে। ডায়াবেটিস প্রতিরোধ, নিয়ন্ত্রণ এবং চিকিৎসা একটি একক পদক্ষেপ নয়, এটি একটি সমন্বিত এবং সামাজিক পদক্ষেপ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

Timeline Treasures নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url