কম্পিউটার কি - কম্পিউটারের জনক কে - কম্পিউটারের জেনারেশন কি কি
আধুনিক বিজ্ঞানের এই যুগে কম্পিউটার আমাদের প্রতিদিনের কাজের সঙ্গী। আজকের
ডিজিটাল যুগে কম্পিউটার কতটা গুরুত্বপূর্ণ তা আপনারা সকলেই জানেন, কম্পিউটার
ব্যবহৃত হয় না এমন ক্ষেত্র খুঁজে পাওয়া প্রায় অসম্ভব। বর্তমানে কোটি কোটি
মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হয়েছে এই কম্পিউটারের মাধ্যমে।
এই প্রবন্ধে আমরা কম্পিউটার সম্পর্কে সবকিছু যেমন-কম্পিউটার কি? কম্পিউটারের
ইতিহাস, কম্পিউটারের জেনারেশন ও তাদের বৈশিষ্ট্য, এবং কম্পিউটারের জনক নিয়ে
আলোচনা করব। আশা করি এই নিবন্ধটি পড়ার পরে, আপনি কম্পিউটার সম্পর্কে অনেক কিছু
জানতে পারবে।
সূচিপত্রঃ- কম্পিউটার কি - কম্পিউটারের জনক কে - কম্পিউটারের জেনারেশন কয়টি
ভুমিকাঃ
বর্তমান বিশ্বে কম্পিউটার একটি যুগান্তকারী আবিষ্কার। ই-মেইল পাঠানো থেকে শুরু
করে ইন্টারনেট ব্রাউজিং, গেমস খেলা, মুভি দেখাসহ পড়ালেখা শেখা কিংবা অফিসের কতো
কাজই না করা হয় এই যন্ত্রটির সাহায্যে। তথ্য প্রযুক্তির এই ডিজিটাল যুগে
কম্পিউটার সম্পর্কে জ্ঞান থাকা অপরিহার্য। আমরা অনেকেই কম্পিউটার দেখেছি।
কম্পিউটার কে আবিষ্কার করেছেন এই প্রশ্নের উত্তর অনেকেই জানি। কিন্তু কম্পিউটার
কত প্রকার ও কি কি, কম্পিউটারের ইতিহাস এবং তাদের বৈশিষ্ট্য, কম্পিউটার কিভাবে
কাজ করে, কম্পিউটার নেটওয়ার্ক কি, কম্পিউটার নেটওয়ার্ক কত প্রকার ইত্যাদি
সম্পর্কে আমরা অনেকেই জানিনা।
কম্পিউটার (Computer) কিঃ
কম্পিউটার (Computer) শব্দের অর্থ গণনাকারী। Computer শব্দটির উৎপত্তি হয়েছে গ্রীক শব্দ কম্পিউটা (Compute) থেকে। কম্পিউট (Compute) অর্থ গণনা করা এবং কম্পিউটার (Computer) অর্থ যিনি গণনা করেন বা গণনাকারী। অর্থাৎ কম্পিউটার শব্দের আভিধানিক অর্থ গণনাকারী যন্ত্র।
প্রথমে কম্পিউটারের পরিচয় ছিল গণনাকারী যন্ত্র হিসেবে। কিন্তু বর্তমানে
কম্পিউটারকে আর গণনা যন্ত্র বলা হয় না। কম্পিউটার এমন একটি বিশেষ যন্ত্রে পরিণত
হয়েছে যা তথ্য গ্রহণ করে এবং বিভিন্ন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সেই তথ্যকে বিশ্লেষণ
করে উপস্থাপন করে।
কম্পিউটারের জনকঃ
ক্যামব্রিড বিশ্ববিদ্যালয় এর গণিতের অধ্যাপক চার্লস ব্যাবেজ ১৮২২ সালে
‘ডিফারেন্স ইঞ্জিন’ (Difference Engine) নামে একটি যন্ত্র আবিষ্কার করেন। ১৮৩৩
সালে তিনি ‘এনালাইটিক্যাল ইঞ্জিন’ (Analytical Engine) নামে ও একটি যান্ত্রিক
কম্পিউটার তৈরির পরিকল্পনা করেন এবং নকশা করেন। মৃত্যুর পূর্ব মুহূর্ত পর্যন্ত
তিনি এ নিয়ে গবেষণা চালিয়ে যান।
চার্লস ব্যাবেজের এনালাইটিকাল ইঞ্জিনের পরিকল্পনায় আধুনিক কম্পিউটারের
বৈশিষ্ট্যের মিল পাওয়া যায়। তাই চার্লস ব্যাবেজ কে কম্পিউটারের জনক বলা হয়।
তার পরিকল্পনার মধ্যে আধুনিক কম্পিউটারের গাণিতিক ইউনিট (Arithmetic Unit),
স্মৃতি (Memory), নিয়ন্ত্রণ ইউনিট (Control Unit) ইনপুট/আউটপুট (Input/Output)
অন্তর্ভুক্ত ছিল।
উদাহরণঃ IBM 3033, HP 3000, IBM 4341 ইত্যাদি।
পঞ্চম প্রজন্মের কম্পিউটার (Fifth Generation Computer) (ভবিষ্যৎ প্রজন্ম)ঃ
(১) উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন দ্রুতগতির হাজার হাজার মাইক্রোপ্রসেসর সংযুক্তিকরণ।
(২) ন্যাচারাল ল্যাঙ্গুয়েজ প্রোগ্রামিং।
(৩) কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও রোবটিক প্রযুক্তির চরম বিকাশ।
(৪) ইনপুট এবং আউটপুট যন্ত্রের সীমাবদ্ধতার বিলোপ সাধন।
(৫) বিশ্বের সকল ভাষায় কম্পিউটার এবং কণ্ঠস্বর সনাক্তকরণ।
(৬) ডায়নামিক এবং ইন্টার একটিভ মাল্টিমিডিয়া সহ সব ধরনের তথ্য আদান-প্রদান, প্রক্রিয়াকরণ এবং ডাটা ধারণ করার বিপুল ক্ষমতা অর্জন।
(৭) ডাটা এস্টোরেজ এবং সহযোগী যন্ত্রের ব্যাপক সম্প্রসারণ।
(৮) কম্পিউটার বর্তনীতে অপটিক্যাল ফাইবারের ব্যবহার।
(৯) একসাথে অনেক কাজ করা বা মাল্টি প্রসেসিং ও মাল্টি টাস্কিং সিস্টেমের ব্যাপক ব্যবহার।
অবিশ্বাস্যভাবে কম্পিউটার দ্রুত গতিতে কাজ করতে সক্ষম। কম্পিউটারের এই দ্রুতগতিসম্পন্ন হিসাবের কাজকে মিলিসেকেন্ড, মাইক্রোসেকেন্ড, ন্যানোসেকেন্ড এবং পিকোসেকেন্ড ইত্যাদি সময়ের একক হিসেবে ভাগ করা হয়।
১ মিলি সেকেন্ড = ১ সেকেন্ডের এক হাজার ভাগের এক ভাগ (১০-৩ সেকেন্ড)
১ মাইক্রো সেকেন্ড = ১ সেকেন্ডের দশ লক্ষ ভাগের এক ভাগ (১০-৬ সেকেন্ড)
১ ন্যানো সেকেন্ড = ১ সেকেন্ডের একশত কোটি ভাগের এক ভাগ (১০-৯ সেকেন্ড)
১ পিকো সেকেন্ড = ১ সেকেন্ডের একলক্ষ কোটি ভাগের এক ভাগ (১০-১২ সেকেন্ড)
সমস্যাঃ
কোন কম্পিউটারের একটি সাধারণ যোগ করতে যদি ৫০ ন্যানোসেকেন্ড সময় লাগে, তাহলে ১ সেকেন্ডে এরূপ কতটি যোগ করতে পারবে?
সমাধানঃ
১ ন্যানো সেকেন্ড = ১০-৯ সেকেন্ড
৫০ ন্যানো সেকেন্ড = ৫০×১০-৯ সেকেন্ড = ৫০×১০-৮
কম্পিউটারটি ৫০×১০-৮ সেকেন্ডে করে = ১ টি যোগ
১ সেকেন্ডে করে = ১/৫০×১০-৮ = ১০৮ /৫
= ২ x ১০৭ টি = ২ কোটি।
(২) নির্ভুলতা (Correctness )
(৩) সুক্ষ্মতা (Accuracy)
(৪) বিশ্বাসযোগ্যতা (Reliability)
(৫) ক্লান্তিহীনতা (Dilligence): পুনরাবৃত্তিমূলক কাজ নির্ভুলভাবে সম্পন্ন করতে কম্পিউটারের উৎসাহ, মনোযোগ এবং সহিষ্ণুতার একটুও ঘাটতি হয় না।
আধুনিক কম্পিউটারের জনকঃ
হাঙ্গেরির একজন বিখ্যাত গণিতবিদ জন ভন নিউম্যান ১৯৪০ এর দশকের মধ্যভাগে একটি
নিবন্ধে লিখেছিলেন-
(ক) কম্পিউটার যন্ত্রের জন্য বাইনারি পদ্ধতি ব্যবহার করা যেতে পারে।
(খ) কম্পিউটার যন্ত্রের মধ্যেই ডেটা ও নির্বাহ সংকেত মজুদ করা যেতে পারে। জনভন নিউম্যান এর এই ধারণাটি সংরক্ষিত প্রোগ্রাম (Stored Program) নামে খ্যাত।
(ক) কম্পিউটার যন্ত্রের জন্য বাইনারি পদ্ধতি ব্যবহার করা যেতে পারে।
(খ) কম্পিউটার যন্ত্রের মধ্যেই ডেটা ও নির্বাহ সংকেত মজুদ করা যেতে পারে। জনভন নিউম্যান এর এই ধারণাটি সংরক্ষিত প্রোগ্রাম (Stored Program) নামে খ্যাত।
1102আরো পড়ুনঃবুটিং কি - বুটিং কত প্রকার ও কি কি?
এই সংরক্ষিত প্রোগ্রামের ধারণার উপর ভিত্তি করে US Army এডভ্যাক (EDVAC=
Electronic Discrete Variable Automatic Computer) তৈরি করেন। জনঘন নিউমোনের এই
প্রস্তাবগুলো আজও আধুনিক কম্পিউটারে ব্যবহৃত হয়। তাই জনগণ নিউমোনকে আধুনিক
কম্পিউটারের জনক বলা হয়।
(১) সার্কিট এর জন্য বায়ুশুন্য টিউব বা ভ্যাকিউম টিউব বিশিষ্ট ইলেকট্রনিক বর্তনীর ব্যবহার
(২) ইনপুট অথবা আউটপুট ব্যবস্থার জন্য পাঞ্চকার্ড এর ব্যবহার।
(৩) ব্যবহারের সময় উত্তর শব্দ তৈরি হয়।
(৪) প্রচন্ড উত্তাপ সৃষ্টি হয়।
(৫) মেমোরির জন্য ম্যাগনেটিক ড্রাম ব্যবহৃত হতো।
(৬) আকৃতিতে বিশাল ছিল এবং বহন করা যেত না।
দ্বিতীয় প্রজন্মের কম্পিউটার (Second Generation Computer) (১৯৫৯-১৯৬৫)ঃ
(১) ভ্যাকুয়াম টিউবের পরিবর্তে ট্রানজিস্টরের ব্যবহার ব্যবহার শুরু হয়। ফলে যন্ত্রপাতির আকার ছোট হয়।
(২) বিদ্যুৎ খরচ কম হতো।
(৩) চুম্বকীয় কোর মেমোরির ব্যবহার এবং ম্যাগনেটিক ডিস্ক এর উদ্ভব হয়।
(৪) COBOL, FORTRAN প্রভৃতি হাই লেভেল প্রোগ্রামিং ভাষার উদ্ভব বিকাশ ও ব্যবহার।
(৫) প্রথম প্রজন্মের কম্পিউটারের তুলনায় আকৃতিতে সংকোচন করা হয়।
(৬) তাপ সমস্যার সমাধান করা হয়।
(৭) কাজের গতি বৃদ্ধি পায়।
উদাহরণঃ Honeywell 200, IBM 1620, IBM 1400, CDC 1604, RCA 301, IBM 1600 ইত্যাদি।
তৃতীয় প্রজন্মের কম্পিউটার (Third Generation Computer) (১৯৬৫-১৯৭১)ঃ
(১) ট্রানজিস্টার এর পরিবর্তে (IC) বা ইন্টিগ্রেটেড সার্কিট এর ব্যবহার শুরু হয়।
(২) অপরিবাহী মেমোরির উদ্ভব ও বিকাশ ঘটে।
(৩) উচ্চতর প্রোগ্রামিং ভাষার ব্যবহার।
(৪) আউটপুটের জন্য ভিডিও ডিসপ্লে ইউনিট এবং লাইন প্রিন্টার এর ব্যবহার।
উদাহরণঃ IBM 360, ICL 2900, IBM 370, PDP-8, GE 600 ইত্যাদি।
চতুর্থ প্রজন্মের কম্পিউটার (Four thGeneration Computer) (১৯৭৫-বর্তমান)ঃ
(১) এই প্রজন্মের কম্পিউটারে (ভেরি লার্জ স্কেল ইন্টিগ্রেশন) (VLSI= Very Large Scale Integration) চিপের ব্যপক ব্যবহার ও অভাবনীয় উন্নয়ন এবং বিকাশ ঘটে।
(২) মাইক্রোপ্রসেসর ও মাইক্রো কম্পিউটারের প্রসার ও প্রচলন ঘটে।
(৩) অতিরিক্ত ডাটা ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন।
(৫) নির্ভরযোগ্য, সম্প্রসারণযোগ্য, মাল্টিমিডিয়া, মাল্টি প্রসেসিং সমন্বিত সেবা প্রদানকারী মাল্টিমিডিয়া সক্ষম অপারেটিং সিস্টেমের বিকাশ ঘটে।
(৬) অবজেক্ট ওরিয়েন্টেড প্রোগ্রামিং প্যাকেজ এবং কাস্টমাইজ সফটওয়্যার এর আনয়ন।
(৭) বহুমুখী কাজে বহুমুখী ইনপুট/আউটপুট যন্ত্রের আবির্ভাব।
(৮) মাল্টি প্রসেসর সিস্টেমের আবির্ভাব।
কম্পিউটারের ইতিহাসঃ
প্রাচীন যুগে গণনার জন্য উদ্ভাবিত বিভিন্ন কৌশল বা প্রচেষ্টাকে কম্পিউটার
ইতিহাসের প্রাথমিক পর্যায়ে হিসেবে ধরা হয়। প্রাচীন কালে মানুষ একসময়
সংখ্যা বুঝানোর জন্য ঝিনুক, নুড়ি, দড়ির গিট ইত্যাদি ব্যবহার করত। কম্পিউটার
বা গণনাকারী যন্ত্র বা যান্ত্রিক পদ্ধতি ব্যবহারের ইতিহাস ধরা হয় অ্যাবাকাস
যন্ত্র আবিষ্কারের সময় থেকে।
এবাকাস কখন কোন দেশে সর্বপ্রথম চালু করা হয় সেটি সঠিকভাবে বলা মুশকিল। তবে
ধারণা করা হয় এটি খ্রিস্টপূর্ব ৩০০০ অব্দে ব্যাবিলনে আবিষ্কৃত হয়। প্রাচীন
যুগে গণনা করার জন্য বিভিন্ন কৌশল বা যন্ত্র ব্যবহার করা হলেও এই অ্যাবাকাস
কেই কম্পিউটার ইতিহাসের প্রথম যন্ত্র হিসেবে ধরা হয়। অ্যাবাকাস দিয়ে সাধারণ
যোগ, বিয়োগ, গুণ এবং ভাগ ছাড়াও বর্গ এবং বর্গমূল নির্ণয় করা যেত।
জাপানে অ্যাবাকাস কে সারোবান ও রাশিয়ায় স্কোসিয়া বলা হয়। ব্রিক প্রমাণ এবং
মিশরীয়রা অ্যাবাকাস ব্যবহার করলেও তাদের হিসাব পদ্ধতিতে শূণ্যকে সূচনা করার
কোন পদ্ধতি ছিল না। সর্বপ্রথম ভারতবর্ষে শূন্যকে একটি চিহ্ন প্রদান করা হয়
এবং হিসাব পদ্ধতিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এসময় দশ ভিত্তিক হিসাব পদ্ধতি শুরু
হলেও অংক গুলোর কোনো স্থানিক মান ছিল না। ৫০০ খ্রিস্টাব্দের দিকে ভারতবর্ষে
দশ ভিত্তিক হিসাব প্রণালীতে অংক গুলোর স্থানিক মান দেয়া হয়।
কম্পিউটারের জেনারেশন ও তাদের বৈশিষ্ট্যঃ
প্রথম প্রজন্মের কম্পিউটার (First Generation Computer) (১৯৫১-১৯৫৯)ঃ(১) সার্কিট এর জন্য বায়ুশুন্য টিউব বা ভ্যাকিউম টিউব বিশিষ্ট ইলেকট্রনিক বর্তনীর ব্যবহার
(২) ইনপুট অথবা আউটপুট ব্যবস্থার জন্য পাঞ্চকার্ড এর ব্যবহার।
(৩) ব্যবহারের সময় উত্তর শব্দ তৈরি হয়।
(৪) প্রচন্ড উত্তাপ সৃষ্টি হয়।
(৫) মেমোরির জন্য ম্যাগনেটিক ড্রাম ব্যবহৃত হতো।
(৬) আকৃতিতে বিশাল ছিল এবং বহন করা যেত না।
উদাহরণঃ UNIVAC I, ENIAC, EDSAC, UNIVAC-1, IBM 650, IBM 704, IBM 709, Mark
II, Mark II ইত্যাদি।
দ্বিতীয় প্রজন্মের কম্পিউটার (Second Generation Computer) (১৯৫৯-১৯৬৫)ঃ
(১) ভ্যাকুয়াম টিউবের পরিবর্তে ট্রানজিস্টরের ব্যবহার ব্যবহার শুরু হয়। ফলে যন্ত্রপাতির আকার ছোট হয়।
(২) বিদ্যুৎ খরচ কম হতো।
(৩) চুম্বকীয় কোর মেমোরির ব্যবহার এবং ম্যাগনেটিক ডিস্ক এর উদ্ভব হয়।
(৪) COBOL, FORTRAN প্রভৃতি হাই লেভেল প্রোগ্রামিং ভাষার উদ্ভব বিকাশ ও ব্যবহার।
(৫) প্রথম প্রজন্মের কম্পিউটারের তুলনায় আকৃতিতে সংকোচন করা হয়।
(৬) তাপ সমস্যার সমাধান করা হয়।
(৭) কাজের গতি বৃদ্ধি পায়।
উদাহরণঃ Honeywell 200, IBM 1620, IBM 1400, CDC 1604, RCA 301, IBM 1600 ইত্যাদি।
তৃতীয় প্রজন্মের কম্পিউটার (Third Generation Computer) (১৯৬৫-১৯৭১)ঃ
(১) ট্রানজিস্টার এর পরিবর্তে (IC) বা ইন্টিগ্রেটেড সার্কিট এর ব্যবহার শুরু হয়।
(২) অপরিবাহী মেমোরির উদ্ভব ও বিকাশ ঘটে।
(৩) উচ্চতর প্রোগ্রামিং ভাষার ব্যবহার।
(৪) আউটপুটের জন্য ভিডিও ডিসপ্লে ইউনিট এবং লাইন প্রিন্টার এর ব্যবহার।
উদাহরণঃ IBM 360, ICL 2900, IBM 370, PDP-8, GE 600 ইত্যাদি।
চতুর্থ প্রজন্মের কম্পিউটার (Four thGeneration Computer) (১৯৭৫-বর্তমান)ঃ
(১) এই প্রজন্মের কম্পিউটারে (ভেরি লার্জ স্কেল ইন্টিগ্রেশন) (VLSI= Very Large Scale Integration) চিপের ব্যপক ব্যবহার ও অভাবনীয় উন্নয়ন এবং বিকাশ ঘটে।
(২) মাইক্রোপ্রসেসর ও মাইক্রো কম্পিউটারের প্রসার ও প্রচলন ঘটে।
(৩) অতিরিক্ত ডাটা ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন।
(৪) অতি ক্ষুদ্রাকৃতির গ্রহণযোগ্য যন্ত্র নির্মাণ করা হয়।
(৫) নির্ভরযোগ্য, সম্প্রসারণযোগ্য, মাল্টিমিডিয়া, মাল্টি প্রসেসিং সমন্বিত সেবা প্রদানকারী মাল্টিমিডিয়া সক্ষম অপারেটিং সিস্টেমের বিকাশ ঘটে।
(৬) অবজেক্ট ওরিয়েন্টেড প্রোগ্রামিং প্যাকেজ এবং কাস্টমাইজ সফটওয়্যার এর আনয়ন।
(৭) বহুমুখী কাজে বহুমুখী ইনপুট/আউটপুট যন্ত্রের আবির্ভাব।
(৮) মাল্টি প্রসেসর সিস্টেমের আবির্ভাব।
উদাহরণঃ IBM 3033, HP 3000, IBM 4341 ইত্যাদি।
পঞ্চম প্রজন্মের কম্পিউটার (Fifth Generation Computer) (ভবিষ্যৎ প্রজন্ম)ঃ
(১) উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন দ্রুতগতির হাজার হাজার মাইক্রোপ্রসেসর সংযুক্তিকরণ।
(২) ন্যাচারাল ল্যাঙ্গুয়েজ প্রোগ্রামিং।
(৩) কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও রোবটিক প্রযুক্তির চরম বিকাশ।
(৪) ইনপুট এবং আউটপুট যন্ত্রের সীমাবদ্ধতার বিলোপ সাধন।
(৫) বিশ্বের সকল ভাষায় কম্পিউটার এবং কণ্ঠস্বর সনাক্তকরণ।
(৬) ডায়নামিক এবং ইন্টার একটিভ মাল্টিমিডিয়া সহ সব ধরনের তথ্য আদান-প্রদান, প্রক্রিয়াকরণ এবং ডাটা ধারণ করার বিপুল ক্ষমতা অর্জন।
(৭) ডাটা এস্টোরেজ এবং সহযোগী যন্ত্রের ব্যাপক সম্প্রসারণ।
(৮) কম্পিউটার বর্তনীতে অপটিক্যাল ফাইবারের ব্যবহার।
(৯) একসাথে অনেক কাজ করা বা মাল্টি প্রসেসিং ও মাল্টি টাস্কিং সিস্টেমের ব্যাপক ব্যবহার।
আধুনিক কম্পিউটারের বৈশিষ্ট্যঃ
(১) দ্রুত গতি সম্পন্ন (High Speed)ঃঅবিশ্বাস্যভাবে কম্পিউটার দ্রুত গতিতে কাজ করতে সক্ষম। কম্পিউটারের এই দ্রুতগতিসম্পন্ন হিসাবের কাজকে মিলিসেকেন্ড, মাইক্রোসেকেন্ড, ন্যানোসেকেন্ড এবং পিকোসেকেন্ড ইত্যাদি সময়ের একক হিসেবে ভাগ করা হয়।
১ মিলি সেকেন্ড = ১ সেকেন্ডের এক হাজার ভাগের এক ভাগ (১০-৩ সেকেন্ড)
১ মাইক্রো সেকেন্ড = ১ সেকেন্ডের দশ লক্ষ ভাগের এক ভাগ (১০-৬ সেকেন্ড)
১ ন্যানো সেকেন্ড = ১ সেকেন্ডের একশত কোটি ভাগের এক ভাগ (১০-৯ সেকেন্ড)
১ পিকো সেকেন্ড = ১ সেকেন্ডের একলক্ষ কোটি ভাগের এক ভাগ (১০-১২ সেকেন্ড)
সমস্যাঃ
কোন কম্পিউটারের একটি সাধারণ যোগ করতে যদি ৫০ ন্যানোসেকেন্ড সময় লাগে, তাহলে ১ সেকেন্ডে এরূপ কতটি যোগ করতে পারবে?
সমাধানঃ
১ ন্যানো সেকেন্ড = ১০-৯ সেকেন্ড
৫০ ন্যানো সেকেন্ড = ৫০×১০-৯ সেকেন্ড = ৫০×১০-৮
কম্পিউটারটি ৫০×১০-৮ সেকেন্ডে করে = ১ টি যোগ
১ সেকেন্ডে করে = ১/৫০×১০-৮ = ১০৮ /৫
= ২ x ১০৭ টি = ২ কোটি।
(২) নির্ভুলতা (Correctness )
(৩) সুক্ষ্মতা (Accuracy)
(৪) বিশ্বাসযোগ্যতা (Reliability)
(৫) ক্লান্তিহীনতা (Dilligence): পুনরাবৃত্তিমূলক কাজ নির্ভুলভাবে সম্পন্ন করতে কম্পিউটারের উৎসাহ, মনোযোগ এবং সহিষ্ণুতার একটুও ঘাটতি হয় না।
কম্পিউটার প্রোগ্রামে, একই নির্দেশনা বার বার সম্পন্ন করার প্রক্রিয়াকে
লুপিং (Looping) বলে।
(৬) স্মৃতিশক্তি (Memory)।
(৭) স্বয়ংক্রিয়তা (Automation)।
(৮) বহুমুখিতা (Versatility)।
(৯) যুক্তিসঙ্গত সিদ্ধান্ত (Logical Decision)।
(১০) অসীম জীবনীশক্তি (Endless Life)।
(৬) স্মৃতিশক্তি (Memory)।
(৭) স্বয়ংক্রিয়তা (Automation)।
(৮) বহুমুখিতা (Versatility)।
(৯) যুক্তিসঙ্গত সিদ্ধান্ত (Logical Decision)।
(১০) অসীম জীবনীশক্তি (Endless Life)।
কম্পিউটার কি নির্বোধ যন্ত্রঃ
অবিশ্বাস্য দ্রুতগতিতে কম্পিউটার অনেক বড় এবং জটিল সমস্যার সমাধান ও হিসেব-নিকেশের কাজ খুব সহজে এবং নির্ভুলভাবে করতে পারলেও কম্পিউটারে নিজস্ব কোন বুদ্ধিমত্তা নেই। কম্পিউটার নিজে নিজে বুদ্ধি খাটিয়ে কোন কিছু করতে পারে না। মানুষের তৈরি করে দেওয়া প্রোগ্রাম বা নির্দেশমালা অনুসরণ করেই কম্পিউটার সকল ধরনের কাজ সম্পন্ন করে।উপসংহারঃ
তথ্যপ্রযুক্তির যুগে কম্পিউটার একটি যুগান্তকারী আবিষ্কার। জীবনের প্রতিটি
ক্ষেত্রে কম্পিউটারের ব্যবহার রয়েছে। একাডেমিক জীবন, কর্মজীবন, চাকরিজীবী,
প্রত্যেকটা ব্যক্তির জন্য কম্পিউটার জানা বাধ্যতামূলক। বিশেষ করে
কম্পিউটারের বেসিক ধারণা অবশ্যই থাকা উচিত।
Timeline Treasures নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url