বিশ্বায়ন কি-বিশ্বায়নের কারণ-বিশ্বায়নের প্রভাব
“বিশ্বায়ন কি” এটি বর্তমানে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক,
সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনে এক বহুল আলোচিত বিষয়। ধারণাগত অর্থে “বিশ্বায়ন কি”
বলতে বোঝানো হয় "বিশ্বের জ্ঞান-বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও সংস্কৃতি, অর্থনীতি ও
পরিবেশের তাত্ত্বিক ও প্রায়োগিক দৃষ্টিকোণ থেকে একই দিকে উত্তরণ।”
বিশ্বায়নের মূল উদ্দেশ্য হলো উত্তর-দক্ষিণ ও পূর্ব-পশ্চিম এর মধ্যে একটি ঐক্য
সৃষ্টি করা। আমরা আজকের এই পোস্টে বিশ্বায়ন কি, বিশ্বায়নের কারণসমূহ,
বিশ্বায়নের ইতিবাচক প্রভাব এবং বিশ্বায়নের নেতিবাচক প্রভাব সম্পর্কে আলোচনা
করবো।
সূচিপত্রঃ- বিশ্বায়ন কি-বিশ্বায়নের কারণ-বিশ্বায়নের প্রভাব
ভূমিকাঃ
সৃষ্টির প্রথম থেকে মানুষকে প্রতিকূলতার সাথে সংগ্রাম করতে হয়েছে। মানুষই
একমাত্র প্রাণী যারা যে কোন অবস্থার সাথে খারাপ খাওয়াতে এবং নতুন কিছু সৃষ্টি
করতে সক্ষম। যেমন বেঁচে থাকার জন্য প্রয়োজনীয় চাহিদা পূরণ করতে গিয়ে মানুষ
নতুন নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছে এবং করছে যা অন্য কোন প্রাণী দ্বারা সম্ভব
নয়। বাংলাদেশ তৃতীয় বিশ্বের একটি দেশ হিসেবে পীর সাহেবন প্রক্রিয়ার একটি
অবিচ্ছেদ্য অংশে পরিণত হয়েছে। তাই বর্তমান প্রেক্ষাপটে অন্যান্য উন্নয়নশীল
দেশের সাথে বাংলাদেশের ওপর বিশ্বায়নের প্রভাব সম্পর্কে আলোচনা অত্যন্ত
সময়োপযোগী একটি বিষয়।
বিশ্বায়ন কিঃ
বিশ্বায়ন হলো এমন একটি পদ্ধতি যার মাধ্যমে বিভিন্ন জাতির সরকার, প্রতিষ্ঠান
এবং জনগণের মধ্যে সমন্বয় ও মিথস্ক্রিয়া সৃষ্টির মাধ্যমে পারস্পরিক ক্রিয়া
এবং আত্মসংযোগ সৃষ্টি করে। অন্যভাবে বলা যায়, ফ্যান হলো এমন একটি প্রক্রিয়া
যার মাধ্যমে রাষ্ট্রকেন্দ্রিক সংস্থাগুলো বিশ্বব্যাপী অন্তরাষ্ট্রীয় সম্পর্ক
গড়ে তোলে।
বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশের ক্ষেত্রে বিশ্বায়ন বলতে বিশ্ব অর্থনীতির সাথে
একাত্মতা প্রকাশ করাকে বোঝায়। অর্থনৈতিক দিক থেকে সাধারণ অর্থে বিশ্বায়ন বলতে
সারা বিশ্বকে একটি মাত্র বিশাল বাজারে একত্রীকরণ কে বোঝানো হয়। এ ধরনের
একত্রীকরণের মাধ্যমে বিভিন্ন দেশের মধ্যকার সকল প্রকার বাণিজ্যিক প্রতিবন্ধকতা
দূরীভূত হয়।
বিশ্বায়নের কারণঃ
বিশ্বায়নের বহুবিধ কারণ রয়েছে। অন্যান্য কারণগুলোর মধ্যে মুনাফা অর্জন ও
আর্থিক আধিপত্য বিস্তার সবচেয়ে বড় কারণ। বিশ্বায়নের অন্যান্য কারণগুলো
নিম্নে বর্ণনা করা হলো-
পৃথিবী ছোট হয়ে আসছেঃ
প্রযুক্তির উন্নয়নের সাথে সাথে গতিশীল যোগাযোগ ব্যবস্থা, উন্নত যাতায়াত
ব্যবস্থা, ক্রমবর্ধমান আর্থিক সঞ্চালন, এবং প্রযুক্তিগত উৎকর্ষের ফলে সময় ও
দূরত্বের ব্যবধান এতটাই কমেছে যে পৃথিবী মানুষের হাতের মুঠোয় এসেছে। যার ফলে
বড় বড় ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের পক্ষে খুব অল্প সময়ে দ্রুতগতিতে পৃথিবীর এক
প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে বিচরণ করা সম্ভব হচ্ছে।
দেশীয় বাজারের অপর্যাপ্ততাঃ
বড় বড় কোম্পানিগুলোর কাছে নিজের দেশের বাজার ছোট এবং অপর্যাপ্ত বলে মনে হতে
পারে। যে সকল ছোট ছোট দেশে বড় বড় কোম্পানি রয়েছে তারা বহির বিশ্বে তাদের
ব্যবসা প্রচারের জন্য বাধ্য হচ্ছে।
আকর্ষণীয় পণ্যের বাজার বিস্তৃতিঃ
যেকোনো আকর্ষণীয় পণ্যের বাজার খুব সহজেই এক দেশ থেকে অন্য দেশে প্রসারিত হয়।
যেমন- কোকাকোলা, পেপসি এবং টয়োটা গাড়ির কথা উল্লেখ করা যেতে পারে।
আরো পড়ুনঃ
যানজট সমস্যা ও তার প্রতিকার
যে কোনো আকর্ষণীয় পণ্যের বাজার সহজেই এক দেশ থেকে অন্য দেশে পরিব্যাপ্ত হয়।
সস্তা শ্রম ও কাঁচামাল ব্যবহারঃ
উন্নত দেশগুলোতে শ্রম ও কাঁচামালের ব্যয় প্রচুর। সেসকল দেশের বড় বড়
কোম্পানিগুলো গ্লোবাল পর্যায়ে কার্যক্রম গ্রহণের মাধ্যমে সস্তা শ্রম এবং
কাঁচামাল ব্যবহারের সুযোগ গ্রহণ করতে আগ্রহী হয়।
বিক্রয় ও মুনাফা বৃদ্ধিঃ
হাইটেক শিল্প-কারখানাগুলো অনেক ক্ষেত্রে তাদের গবেষণা এবং উন্নয়নমূলক কাজে
এতটাই অর্থ ব্যয় করে ফেলে যে তাদের উৎপাদন খরচ কমানোর জন্য বিক্রয় বৃদ্ধি করা
অপরিহার্য হয়ে পড়ে। তাদের বিক্রয় বৃদ্ধি করার জন্য তারা বিশ্বব্যাপী তাদের
বাজার সম্প্রসারণ করা ছাড়া অন্য কোন উপায় থাকে না।
বিনিয়োগের ঝুঁকি হ্রাসঃ
বড় বড় কোম্পানির ব্যবসায়ীরা যেকোনো একক দেশে বিনিয়োগ করা অনেক সময়
ঝুঁকিপূর্ণ বলে মনে করে থাকেন। এজন্য ঝুঁকি ওড়ানোর ক্ষেত্রে তারা বিভিন্ন দেশে
বিনিয়োগ ও উৎপাদনের সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন।
পরিবহন ব্যয় হ্রাসঃ
অনেক কোম্পানি পরিবহন ব্যয় কমানোর জন্য বহির বিশ্বে তাদের উৎপাদন সম্প্রসারণ
সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকে। স্বাভাবিকভাবে পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে
পণ্য পরিবহন করা অনেক ব্যয়বহুল। তাই তারা তাদের পরিবহন খরচ কমানোর জন্য
পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে তাদের পূর্ণ উৎপাদনে ব্যবস্থা করে থাকে। পণ্য পরিবহনের
ক্ষেত্রে যেন পণ্যের মূল্য অযথা বৃদ্ধি না পায় সেজন্য তারা ওই দেশে বহু জাতি
কোম্পানি হিসেবে পণ্যের উৎপাদন কার্যক্রম শুরু করে।
বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার উদ্ভবঃ
বিশ্বায়ন কে বিস্তার লাভ করানোর জন্য পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ বিভিন্ন ধরনের
আঞ্চলিক এবং আন্তর্জাতিক সংস্থা গঠন করেছে। World Bank, WTO, IMF, EEC, NAFTA,
SAPTA, ASEAN ইত্যাদি আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক সংস্থা গঠনের মাধ্যমে বিশ্বায়ন
প্রক্রিয়া যে বহু গুণে ত্বরান্বিত হয়েছে তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
বিশ্বায়নের প্রভাবঃ
বিশ্বায়নের ধারণা ক্রমেই পরিব্যাপ্তি লাভ করছে। বিশেষ করে, অর্থনীতি ও
প্রযুক্তির ক্ষেত্রে এর প্রভাব ব্যাপকভাবে বিস্তার লাভ করেছে। বিশ্বায়নের
প্রভাবকে ইতিবাচক ও নেতিবাচক এ দুভাবে আলোচনা করা যেতে পারে।
বিশ্বায়নের ইতিবাচক প্রভাবঃ
বর্তমানে প্রযুক্তির দ্রুতপ্রসার এবং জ্ঞান বিজ্ঞানের উন্নয়নের ফলে পৃথিবী যে
সত্যি সত্যি ছোট হয়ে এসেছে তা বলা অপেক্ষায় রাখে না। যেমন ঘরে বসে কম্পিউটার
ও ইন্টারনেট অথবা মোবাইলে ইন্টারনেট ব্যবহারের মাধ্যমে সমগ্র পৃথিবীর সংবাদ
সম্ভব মুহূর্তের মধ্যে জানা সম্ভব হচ্ছে। এসব কিছুই বিশ্বায়নের ফলে সম্ভব
হয়েছে। বিশ্বায়নকে তাই উপেক্ষা করা দুরূহ। বিশ্বায়নের ইতিবাচক প্রভাবসমূহ
নিম্নে বর্ণনা করা হলো-
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক উন্নয়নঃ
বিশ্বায়নের প্রভাবের ফলে বিশ্বের দেশগুলোর মধ্যে পারস্পরিক সুসম্পর্ক দৃঢ়
হচ্ছে। অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও সামাজিক ক্ষেত্রে রাষ্ট্রগুলো একে অপরের ওপর
নির্ভরশীল হচ্ছে। বিভিন্ন ধরনের আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক অথবা আঞ্চলিক অর্থনৈতিক
সমস্যা মোকাবেলার জন্য আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক সহযোগিতামূলক জোট এবং সংস্থাগুলো
একীভূত হচ্ছে। যেমন—সার্ক, সাফটা, বিসমটেকসহ বিভিন্ন গ্লোবাল ফ্রন্টের সক্রিয়
সদস্য হচ্ছে বাংলাদেশ। এভাবেই বিশ্বায়নের প্রভাবে আন্তর্জাতিক সম্পর্কের
উন্নয়ন হচ্ছে।
বৃহদায়তন কর্মকাণ্ডের সুবিধাঃ
বিশ্বায়নের ফলে সারা বিশ্বেই বাজার ব্যবস্থার ব্যাপক পরিসরে বৃদ্ধি পেয়েছে।
যার ফলে বৃহৎ আকারে উৎপাদন ও বিপন্ন সহজ হয়েছে। যার ফলে, একদিকে যেমন উৎপাদন
ব্যয় হ্রাস পেয়েছে, অন্যদিকে মুনাফার পরিমান বেড়েছে।
ভৌগোলিক শ্রমবিভাগ ও বিশেষায়নঃ
বিশ্বায়নের কারণে ভৌগোলিক শ্রম বিভাগ ও বিশেষায়নের ক্ষেত্র ব্যাপকভাবে
প্রসারিত হচ্ছে। যা প্রতিটি দেশকে তার আপেক্ষিক সুবিধা অনুযায়ী উৎপাদনশীল কাজে
নিয়োজিত থাকতে সাহায্য করছে।
বিশ্ব ভাবমূর্তি উন্নয়নঃ
গ্লোবাল পণ্য উৎপাদন ও বাজারজাতকরণের ফলে সর্বত্র পণ্যের একই রূপ ভাবমূর্তি
সৃষ্টি হয়। যার ফলে দিন দিন পণ্যের গ্রহণযোগ্যতা বাড়ছে। উদাহরণস্বরূপ, বলা
যেতে পারে, কোকাকোলা বা পেপসির এ জাতীয় গ্লোবাল ভাবমূর্তি তৈরি হয়েছে ফলে
বিশ্বব্যাপী এদের গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে।
জ্ঞান, দক্ষতা ও অভিজ্ঞতার স্থানান্তরঃ
কথায় আছে, Think globally, act locally' অর্থাৎ 'চিন্তা করুন বিশ্বব্যাপী, কাজ
করুন কাছাকাছি'। বর্তমান বিশ্বে এর ব্যত্যয় ঘটছে না। বিশ্বের উন্নত দেশগুলোতে
যে জ্ঞান, দক্ষতা ও অভিজ্ঞতার উন্নয়ন সাধিত হচ্ছে তা থেকে শিক্ষা গ্রহণ করে
অন্যান্য দেশ সহজেই নিজেদের সমৃদ্ধ করতে পারছে।
অবাধ বাণিজ্যের সুযোগ সৃষ্টিঃ
বিশ্বায়নের ফলে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মধ্যে অবাধ বাণিজ্য সহজতর হয়েছে। এই
বাণিজ্যের ক্ষেত্রে ই-কমার্স আলাদা ভাবে মাত্রা ও গতি সঞ্চার করেছে। বর্তমানে
পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে বন্যপ্রান্তে ব্যবসায়ের কাজ খুব দ্রুত সমাধান করা
সম্ভব হয়েছে।
আন্তর্জাতিক সংঘাত হ্রাসঃ
বর্তমানে বিশ্বায়নের ফলে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ একে অপরের ওপর বিভিন্নভাবে
নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে। বর্তমানে কোন দেশি নিজেকে এককভাবে বা আলাদাভাবে চিন্তা
করতে পারেনা। এর ফলে বিশ্বায়নের বন্ধন আরো দৃঢ় হয়েছে যা আন্তর্জাতিক
সংঘাত হ্রাস করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
বিশ্বায়নের নেতিবাচক প্রভাবঃ
প্রতিটি জিনিসেরই যেমন ইতিবাচক প্রভাব রয়েছে তেমন তার নেতিবাচক প্রভাব রয়েছে।
যদিও সেই জিনিসটি মানুষের কল্যাণে আসুক না কেন। তবে বিশ্বায়নের নেতিবাচক ফলাফল
বিশেষভাবে লক্ষ্য করা যায় উন্নয়নশীল দেশগুলোর উপর। নিম্নে বিশ্বায়নের
নেতিবাচক প্রভাব সমূহ আলোচনা করা হলো-
অর্থনৈতিক শোষণ ও মেধাপাচারঃ
মুক্তবাজার অর্থনীতির আওতায় দেশগুলোর জন্য বিশ্বসম্পদের দরজা খুলে দিলেও
উন্নয়নশীল, দরিদ্র বা পশ্চাদপদ দেশগুলোর জন্য একটি বড় অভিশাপে পরিণত হয়েছে।
যার ফলে দরিদ্র দেশগুলোর মেধা সম্পন্ন, দক্ষ এবং কুশলী মানুষজন উন্নত দেশগুলোতে
পাড়ি জমাচ্ছেন। যার ফলে উন্নয়নশীল বা দরিদ্র দেশগুলো মেধাশূন্য হয়ে পড়ছে।
এবং এটিকেই মেধা পাচার বা ব্রেন ড্রেন বলা হয়। এতে গরিব দেশ হচ্ছে আরো গরিব,
আর ধনী দেশ হচ্ছে আরো ধনী।
অসম প্রতিযোগিতা বৃদ্ধিঃ
পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের মধ্যে অসম প্রতিযোগিতা বৃদ্ধি পেয়েছে যার কারণ হলো
বিশ্বায়ন। যে সকল দেশ শিল্প এবং শিল্পের অবকাঠামো দিক থেকে দুর্বল সে সকল
দেশগুলো উন্নত দেশের আগ্রাসনের শিকার হচ্ছে। শিল্পী অনুন্নত দেশগুলো
শিল্পক্ষেত্রে প্রতিযোগিতায় টিপতে না পেরে তাদের শিল্পকারখানা বন্ধ করে
দিচ্ছে। যার ফলে সে দেশের লক্ষ লক্ষ মানুষ বেকার হয়ে যাচ্ছে।
রাষ্ট্রীয় গোপনীয়তা রক্ষা কঠিনঃ
তাদের রাষ্ট্রীয় গোপনীয়তার রক্ষা করা কঠিন হয়ে পড়েছে। ইন্টারনেট, ই-মেইল,
ফ্যাক্স ইত্যাদির মাধ্যমে যে কোনো গোপনীয় দলিল, সংবাদ, তথ্য অতি দ্রুত বিদেশী
প্রতিপক্ষের হাতে চলে যেতে পারে। এক্ষেত্রেও পশ্চাৎপদ দেশগুলোই মার খাচ্ছে ধনী
দেশগুলোর কাছে।
শিক্ষাব্যবস্থায় বিপর্যয়ঃ
বর্তমানে বিশ্বায়নের ফলে শিক্ষা ও প্রযুক্তির ক্ষেত্রে অনুন্নত ও গরিব
দেশগুলোর বিরুদ্ধে আগ্রাসী ভূমিকা পালন করতে দেখা যাচ্ছে। উন্নত বিশ্বের শিক্ষা
ও প্রযুক্তি উন্নত। অনুন্নত এবং গরিব দেশগুলো তাদের উন্নত শিক্ষাও প্রযুক্তি
থেকে উপকৃত হতে প্রচুর অর্থ ব্যয় করতে হচ্ছে যার ফলে সে সকল দেশের নিজস্ব
শিক্ষা ব্যবস্থা ও প্রযুক্তি ভিত্তি ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে।
সাংস্কৃতিক বিপর্যয়ঃ
বিশ্বায়নের ফলে সাংস্কৃতিক অঙ্গনে নৈরাজ্য সৃষ্টি হয়েছে। বিশ্বের ধনী ধনী
দেশগুলোর অপসংস্কৃতির শিকার হচ্ছে গরীব ও অনুন্নত দেশের যুবক যুবতীরা। যার ফলে
উন্নয়নশীল এবং অনুন্নত দেশগুলোর নিজস্ব সংস্কৃতি বিলুপ্তির দিকে ধাবিত হচ্ছে।
বেকার সমস্যা বৃদ্ধিঃ
প্রযুক্তির উন্নয়নের ফলে এবং বিশ্বায়নের কারণে উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহারের ফলে
তৃতীয় বিশ্বের অনেক দেশের শিল্প কারখানা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। যার ফলে সেসব
কারখানায় যে সকল শ্রমিকরা কাজ করতো তারা কর্মহীন হয়ে পড়ছে। ফলশ্রুতিতে দেখা
দিয়েছে ভয়াবহ বেকারত্ব।
উপসংহারঃ
আধুনিক সভ্যতার গতিশীল চক্রের এক অবশ্যম্ভাবী ফল হল বিশ্বায়ন। বিশ্বায়নের ফলে
পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ যেমন উপকৃত হচ্ছে এমন অনেক দেশ রয়েছে যারা ক্ষতিগ্রস্ত
হচ্ছে। সেনকে যত নেতিবাচক বিশেষণেই ভূষিত করা হোক না কেন বিশ্বায়ন তার আপন
গতিতে এগিয়ে যাবে। তাই এরূপ বৈশ্বিক প্রেক্ষাপট থেকে কোন রাষ্ট্রের পক্ষে দূরে
থাকা সম্ভব নয়।
Timeline Treasures নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url