কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত-কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত হোটেল ভাড়া
বাংলাদেশের অনেকগুলো দর্শনীয় স্থানের মধ্যে কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত অন্যতম।
কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়া উপজেলার মহিপুর থানার কুয়াকাটা
পৌরসভা অবস্থিত। ঢাকা থেকে সড়ক পথের দূরত্ব ৩৮০ কিলোমিটার এবং বরিশাল থেকে ১০৮
কিলোমিটার।
পটুয়াখালী শহর থেকে কুয়াকাটা ৭০ কিলোমিটার দক্ষিনে অবস্থিত। আজকের এই পোস্টে
আমরা কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত এবং কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত হোটেল ভাড়া সম্পর্কে
আলোচনা করব।
সূচিপত্রঃ- কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত - কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত হোটেল ভাড়া
- ভুমিকা
- কুয়াকাটা সম্পর্কে তথ্য
- কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতের ইতিহাস
- কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত কোথায় অবস্থিত
- কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতের দৈর্ঘ্য কত
- কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত কিসের জন্য বিখ্যাত
- কুয়াকাটা দর্শনীয় স্থান সমূহ
- কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতের বিখ্যাত খাবার
- কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে ভ্রমণ প্যাকেজ
- কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত হোটেল ভাড়া ২০২৩
- শেষকথা
ভুমিকাঃ
বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে অবস্থিত একটি সমুদ্র সৈকত ও পর্যটন কেন্দ্র হলো
কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত। এর দৈর্ঘ্য ১৮ কিলোমিটার। সৌন্দর্যের দিক থেকে কুয়াকাটা
বাংলাদেশের অন্যতম সমুদ্র সৈকত। কুয়াকাটা বাংলাদেশের একমাত্র সমুদ্র সৈকত যেখান
থেকে সব সময় সূর্যোদয় এবং সূর্যাস্ত দেখা যায়। সূর্যোদয় সবচেয়ে ভালো দেখা
যায় সৈকতের গঙ্গামতির থেকে আর সূর্যাস্ত দেখা যায় পশ্চিমের সৈকত থেকে।
পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়া উপজেলার লতাচাপলী ইউনিয়নে কুয়াকাটা অবস্থিত।
কুয়াকাটা সম্পর্কে তথ্যঃ
পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়া উপজেলার মহিপুর থানার কুয়াকাটা পৌরসভা অবস্থিত। ঢাকা
থেকে সড়ক পথের দূরত্ব ৩৮০ কিলোমিটার এবং বরিশাল থেকে ১০৮ কিলোমিটার। পটুয়াখালী
শহর থেকে কুয়াকাটা ৭০ কিলোমিটার দক্ষিনে অবস্থিত।
কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতের ইতিহাসঃ
কুয়াকাটা নামের পেছনে জড়িত রয়েছে এদেশে আরাকানিদের আগমনের ইতিহাস। কুয়া
শব্দটি আগত হয়েছে কূপ থেকে। ধারণা করা হয় ১৮ শতকের দিকে মুঘল শাসকদের দ্বারা
বিতাড়িত হয়ে আরাকানীরা বার্মা থেকে এই অঞ্চলে এসে বসবাস শুরু করে। তারা এখানে
সুপেয় জলের অভাব পূরণ করার জন্য প্রচুর পরিমাণে কূপ খনন করেছিলেন। প্রথম থেকে
অঞ্চলের নাম দেওয়া হয় কুয়াকাটা।
কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত কোথায় অবস্থিতঃ
কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলের একটি সমুদ্র সৈকত যা সাগর কন্যা
নামে পরিচিত। এটি পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়া উপজেলায় অবস্থিত। এই সমুদ্র সৈকতের
দৈর্ঘ্য ১৮ কিলোমিটার এবং এটি ৩ কিলোমিটার জুড়ে বিস্তৃত। এই সমুদ্র সৈকতের
অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে এখানে সূর্যোদয় এবং সূর্যাস্ত
দেখা যায়। সমুদ্রের বুকে চর জাগার ফলে এই সৈকতের সৃষ্টি হয়েছে।
কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতের দৈর্ঘ্য কতঃ
কুয়াকাটা বাংলাদেশের অন্যতম সৌদর্যে ঘেরা সমুদ্র সৈকত যার দৈর্ঘ্য ১৮ কিলোমিটার
বা ১১ মাইল এবং প্রস্থে ৩ কিলোমিটার বা ১.৯ মাইল।
কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত কিসের জন্য বিখ্যাতঃ
কুয়াকাটা বাংলাদেশের একটি অন্যতম পর্যটনের এলাকা। এখানে অনেক দর্শনীয় স্থানের
মধ্যে রয়েছে কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত যা সাগর কন্যা হিসেবে পরিচিত। এই সমুদ্র সৈকত
থেকে সূর্যোদয় এবং সূর্যাস্ত দুটোই দেখা যায় তাই কুয়াকাটা প্রধানত সমুদ্র
সৈকতের জন্য বিখ্যাত।
কুয়াকাটার দর্শনীয় স্থান সমূহঃ
কুয়াকাটায় রয়েছে অনেক দর্শনীয় স্থান তার মধ্যে প্রধান আকর্ষণ হলো সমুদ্র
সৈকত। সমুদ্র সৈকতে দাঁড়িয়ে যতদূর চোখ যাই শুধু নীল আকাশ। কুয়াকাটা পর্যটকদের
জন্য রয়েছে বসার জায়গা, ঘোড়ার গাড়ি, খাবার সহ বিভিন্ন ব্যবস্থা। এখানকার
পর্যটকদের জন্য রয়েছে পর্যটন পুলিশের নিরাপত্তা ব্যবস্থা। কুয়াকাটার দর্শনীয়
স্থান সমূহের নাম গুলো নিচে দেওয়া হল।
- ফাতরার বন
- কুয়াকাটার কুয়া
- শ্রীমঙ্গল বৌদ্ধবিহার
- গঙ্গামতির চর
- নৌকা জাদুঘর
- কেরানি পাড়া
- কুয়াকাটা জাতীয় উদ্যান
- মিশ্রিপাড়া সীমাবৌদ্ধবিহার বিহার
- রাখাইন পল্লী
- ইলিশ পার্ক এন্ড রিসোর্ট
- আলিপুর ও মহিপুর মৎস্য বন্দর
- শুটকি পল্লী
- নয়াপাড়া বৌদ্ধবিহার
- লেবুর বন
- লাল কাকড়ার চর
- পানি জাদুঘর
কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতের বিখ্যাত খাবারঃ
কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতের বিখ্যাত খাবারের মধ্যে রয়েছে সামুদ্রিক মাছ, কাকড়া,
ইলিশ মাছ এবং শুটকি। পর্যটকদের জন্য ক্ষতিকারক কেমিক্যাল ছাড়াই শুধুমাত্র লবণ
দিয়ে প্রক্রিয়াজাত করা হয় বিষমুক্ত শুটকি। সমুদ্র পারে খোলা আকাশের নিচে রোদে
শুকিয়ে তৈরি করা হয় এই বিষমুক্ত শুটকি এবং তা পর্যটকদের চাহিদা অনুযায়ী বিক্রি
করা হয়।
পর্যটকদের কাছে এখন জনপ্রিয় হলো এই কুয়াকাটার বিষমুক্ত শুটকি। কুয়াকাটার
শুটকির ঐতিহ্য ধরে রাখার জন্য এখানকার ব্যবসায়ীরা শুটকি পল্লী নির্মাণের দাবী
জানায়। কুয়াকাটার বিষমুক্ত শুটকি পর্যটকদের খাদ্য তালিকায় এক নতুন মাত্রা যোগ
করেছে, যা অর্থনীতিতে ব্যাপক ভূমিকা পালন করে। এছাড়াও সমুদ্র সৈকতের বিভিন্ন
জায়গায় সামুদ্রিক মাছ ও কাঁকড়া ফ্রাই করেও বিক্রি করছে এখানকার স্থানীয় হোটেল
গুলো।
কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে ভ্রমণ প্যাকেজঃ
বিভিন্ন ট্রাভেল এজেন্সী গুলো কুয়াকাটা ভ্রমণের জন্য বিভিন্ন ধরনের ভ্রমণ
প্যাকেজ সরবরাহ করে থাকে। এর জন্য পর্যটককে কুয়াকাটা ভ্রমণের পূর্বে ট্রাভেল
এজেন্সি গুলোর সাথে যোগাযোগ করে ভ্রমণ প্যাকেজ ক্রয় করে নিতে হয়।
কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত হোটেল ভাড়া ২০২৩ঃ
প্রতিবছর হাজার হাজার পর্যটকের ভিড় জমে এই কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে। পর্যটকদের
চাহিদা মেটানোর জন্য কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত কর্তৃপক্ষ এবং স্থানীয়ভাবে অনেক
হোটেল এবং মোটেল গড়ে তুলেছে। পর্যটকদের চাহিদা এবং ডিমান্ড অনুযায়ী কুয়াকাটা
সমুদ্র সৈকত হোটেল ভাড়া বিভিন্ন হয়ে থাকে।
পর্যটকদের কথা বিবেচনা করে দিন দিন এখানকার হোটেল এবং হোটেলের সংখ্যা বৃদ্ধি
পাচ্ছে। আপনাদের সুবিধার্থে আমরা এই অনুচ্ছেদ এর নিচে কুয়াকাটার বিখ্যাত হোটেলের
তালিকা, কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত হোটেল ভাড়া এবং যোগাযোগ নম্বর সংযুক্ত করে
দিয়েছি। কুয়াকাটা থাকার জন্য নরমালি ১ হাজার থেকে ৫ হাজার টাকার মধ্যে হোটেল
পাওয়া যায়।
তবে কেউ যদি বিলাসবহুল ভাবে থাকতে চাই তাহলে তাদের জন্য খরচ করতে হবে ১০ হাজার
থেকে ৪০ হাজার টাকা। কুয়াকাটাই সকল শ্রেণীর হোটেল এবং মডেলের ব্যবস্থা রয়েছে।
দুটো ডাক বাংলা এবং সাগর কন্যা পর্যটন হলিডে হোমস রয়েছে এই কুয়াকাটায়।
বিলাসবহুল ভাবে রাত্রিযাপন করার জন্য রয়েছে দুইটি রাখাইন কালচার একাডেমি রেস্ট
হাউস। বলতে গেলে সব মিলিয়ে পর্যটকদের জন্য রয়েছে থাকার সুব্যবস্থা।
শেষকথাঃ
পরিশেষে বলা যায় যে, কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত হলো প্রাকৃতিক এবং অপরূপ সৌন্দর্যের
সমুদ্র সৈকত। কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের পরেই কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত এর অবস্থান।
সাগরকন্যা খ্যাত কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে পর্যটকদের ভিড় দিন দিন বেড়ে চলেছে।
দেশের এবং দেশের বাইরের অনেক পর্যটকরা এখানে প্রতিদিনই ভ্রমণ করতে আসছে। এর ফলে
পর্যটন শিল্পে বাংলাদেশ অর্থনৈতিকভাবে অনেক এগিয়ে যাচ্ছে।
Timeline Treasures নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url