প্রাচীন সভ্যতা-প্রাচীন সভ্যতার ইতিহাস-প্রাচীন সভ্যতা সমূহ

প্রাচীন সভ্যতা বা বিশ্ব সভ্যতার যাত্রা শুরু হয় আনুমানিক খ্রিস্টপূর্ব ৫০০০ অব্দে। মিশরের নীলনদ, মেসোপটেমিয়ার জলদা (টাইগ্রিস) ও ফোরাত (ইউফ্রেটিস) নদী, ভারতের সিন্ধু নদ এবং চীনের হোয়াংহো ও ইয়াংসিকিয়া নদীর উপত্যকায় পূর্বের ভূখণ্ডের গড়ে উঠেছিল নগর সভ্যতা সমূহ। প্রাথমিক সভ্যতা বিকশিত অঞ্চলগুলোতে গড়ে উঠেছিল কিছু নগর রাষ্ট্র (City State) যেমন- এথেন্স, স্পার্টা, থেব্স ।
প্রাচীন সভ্যতা-প্রাচীন সভ্যতার ইতিহাস-প্রাচীন সভ্যতা সমূহ
ইতালিতে গড়ে ওঠা নগর রাষ্ট্রগুলো হলো- পিসা, ফ্লোরেন্স, ভেনিস, জেনোয়া। বর্তমান বিশ্বের একমাত্র নগর রাষ্ট্র হল ভ্যাটিকান সিটি।

পোষ্ট সুচিপত্রঃ- প্রাচীন সভ্যতা-প্রাচীন সভ্যতার ইতিহাস-প্রাচীন সভ্যতা সমূহ

মেসোপটেমিয়া সভ্যতা ('The Mesopotamian Civilization)

বিশ্বের সবচেয়ে প্রাচীন সভ্যতা হলো মেসোপটেমিয়া সভ্যতা। আনুমানিক খ্রিস্টপূর্ব ৫০০০ অব্দে ইরাকের টাইগ্রিস ও ইউফ্রেটিস নদীর উর্বর তীরাঞ্চলে মেসোপটেমীয় সভ্যতার বিকাশ ঘটে ছিলো। এদের ভিন্ন ভিন্ন নাম থাকলেও একই ভূ-খণ্ডে গড়ে উঠায় একত্রিতভাবে এ সভ্যতাসমূহকে বলা হয় মেসোপটেমীয় সভ্যতা। 'মেসোপটেমিয়া' একটি গ্রিক শব্দ। এর অর্থ দুই নদীর মধ্যবর্তী ভূমি। মেসোপটেমিয়ার পূর্বে অবস্থিত টাইগ্রিস নদী এবং পশ্চিমে অবস্থিত ইউফ্রেটিস নদী।
মেসোপটেমিয়ার অন্তর্ভুক্ত অন্যান্য সভ্যতার সমূহ হলো- সুমেরীয় সভ্যতা, ব্যাবিলনীয় সভ্যতা, আসিরীয় সভ্যতা, ক্যালডিয় সভ্যতা। আধুনিক তুরস্ক, সিরিয়া, ইরান, ইরাক ও কুয়েত রাষ্ট্রগুলো প্রচীন এই সভ্যতার অংশ ছিল। তবে বেশির ভাগ বর্তমানে ইরাকে অবস্থিত। মেসোপটেমিয়া সভ্যতার অন্তর্ভুক্ত রয়েছে সুমেরীয় সভ্যতা, ব্যাবিলনীয় সভ্যতা, অ্যাসেরীয় সভ্যতা ও ক্যালডেরীয় সভ্যতা।

সুমেরীয় সভ্যতা (The Sumerian Civilization)

মেসোপটেমিয়ার সবচেয়ে প্রাচীন সভ্যতা হলো সুমেরীয় সভ্যতা।, প্রাচীন এই সুমেরীয় সভ্যতা গড়ে তুলেছিল সুমেরীয়গণ। সুমেরীয়দের আদিবাস ছিল উত্তর পূর্বে অবস্থিত এলামের পাহাড়ি অঞ্চলে। খ্রিস্টপূর্ব ৪০০০ অব্দে এদের একটি শাখা মেসোপটেমিয়ার দক্ষিণে বসতি গড়ে তোলে। সুমেরীয়দের আয়ের মূল উৎস ছিল কৃষি। তারা উন্নত সেচব্যবস্থা গড়ে তুলেছিল। সুমেরীয়গণ ‘কিউনিফর্ম' (Cuneifom) নামে কিউনিফর্ম একটি নতুন লিপির উদ্ভাবন করে। কিউনিফর্মকে বলা হয় অক্ষরভিত্তিক বর্ণলিপি (Letter Based alphabet)। সুমেরীয়দের বর্ণমালার কোন কোনটি দেখতে ইংরেজি বর্ণমালার V এর মত। জলঘড়ি ও চন্দ্রপঞ্জিকার আবিষ্কার সুমেরীয়দের গুরুত্বপূর্ণ অবদান। সভ্যতায় সুমেরীয়দের সবচেয়ে বড় অবদান 'চাকা' (Wheel) আবিষ্কার। সুমেরীয়দের ধর্ম মন্দির কে বলা হয় জিগগুরাত।

ব্যাবিলনীয় সভ্যতা (The Babylonian Civilization)

সিরিয়ার মরুভূমি অঞ্চলের অ্যামোরাইট জাতি আনুমানিক ২০৫০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে মেসোপটেমিয়া অঞ্চলে একটি নগর সভ্যতা গড়ে তোলে। ব্যাবিলনীয় সভ্যতার স্থপতি ছিলেন বিখ্যাত আমোরাইট নেতা হাম্মুরাবি। পৃথিবীতে প্রথম লিখিত আইনের প্রচলন হয় ব্যাবিলনে। প্রথম লিখিত আইন প্রণেতা ছিলেন ব্যাবিলনীয় সভ্যতার স্থপতি হাম্মুরাবি। এই সভ্যতায় আইন সংক্রান্ত 'হাম্বুরাবি কোড' প্রণীত হয়েছিল। সুমেরীয়দের অনুকরণে ব্যাবিলনীয়রা সাহিত্য রচনা করে।

কিউনিফর্ম লিপিতে লেখা হয় বিখ্যাত মহাকাব্য 'গিলগামেশ' (Gilgamesh)। পৃথিবীর প্রাচীনতম মানচিত্র পাওয়া যায় ব্যাবিলনের উত্তরের গাথুর শহরের ধ্বংসাবশেষে। এটি ছিল ভ্রমণকারীদের পথ নির্দেশ করার জন্য সহজ বল প্রকারের মানচিত্র। ব্যাবিলনের প্রধান দেবতা হলো- ন‘মারডুক’, এবং প্রধান দেবী হল ‘ইশতার’। ব্যাবিলনের ঝুলন্ত উদ্যান অবস্থিত ইরাকে। এই ঝুলন্ত উদ্যান নির্মাণ করেছিলেন রাজা নেবুচাদ নেজার।

অ্যাসেরীয় সভ্যতা (The Assyrian Civilization)

ব্যাবিলন থেকে প্রায় দুইশত মাইল উত্তরে টাইগ্রিস নদীর তীরে 'আশুর' নামে একটি সমৃদ্ধ শহর গড়ে উঠে। 'আশুর অধিবাসীদেরকে আসিরীয় বলা হয়। ইতিহাসে আসিরীয়রা সামরিক রাষ্ট্র হিসেবে পরিচিত। আসিরীয় সম্রাট নিজেকে মনে করতেন সূর্যদেবতা শামসেরু প্রতিনিধি। তারাই প্রথমে লোহার অস্ত্রে সজ্জিত বাহিনী গঠন করে এবং যুদ্ধরথের ব্যবহার করে। আসিরীয়রা প্রথম গোলন্দাজ বাহিনী গঠন করে। আসিরীয়রা প্রথম বৃত্তকে ৩৬০° তে ভাগ করে। পৃথিবীকে সর্বপ্রথম তারা অক্ষাংশ (Latitudes) ও দ্রাঘিমাংশে (Longitudes ) ভাগ করেছিল। আসিরীয়দের আয়ের প্রধান উৎস ছিল বিভিন্ন দেশ থেকে লুট করে আনা ধন-সম্পদ। আসিরীয় সভ্যতা ধ্বংস হয়েছিল ৬১২ অব্দে।

ক্যালডীয় সভ্যতা (The Chaldean Civilization)

ব্যাবিলন শহরকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠায় ক্যালডীয় সভ্যতা ইতিহাসে 'নতুন ব্যাবিলনীয় সভ্যতা' নামেও পরিচিত। ক্যালডীয় সভ্যতার স্থপতি ছিলেন সম্রাট নেবুচাদনেজার। 'ব্যাবিলনের শূন্যউদ্যান" (The Hanging Garden of Babylon) নির্মাণের জন্য তিনি অমর হয়ে আছেন। সম্রাট নেবুচাদ নেজারের সম্রাজ্ঞী বাগান করতে খুব পছন্দ করতেন। তাঁরই উৎসাহে সম্রাট নগর দেওয়ালের উপর তৈরি করলেন আশ্চর্য সুন্দর এক বাগান। ইতিহাসে যা 'শূন্যউদ্যান' নামে পরিচিত। কেলোডিওরা আকাশের বিভিন্ন গ্রহকে দেবতা ভাবতো। তাদের প্রধান দেবতা ছিল ‘জুপিটার’।
শিল্পীর তুলিতে ব্যাবিলনের ঝুলন্ত উদ্যান ব্যাবিলনের ঝুলন্ত উদ্যানের ধ্বংসাবশেষ 'ব্যাবিলনের শূন্যউদ্যান' (The Hanging Garden of Babylon) প্রাচীন পৃথিবীর সপ্তাশ্চর্যের একটি। ক্যালডেরীয়রাই প্রথম সপ্তাহকে ৭ দিনে বিভক্ত করে। আবার প্রতিদিনকে ১২ জোড়া ঘণ্টায় ভাগ করার পদ্ধতি তারা বের করে। ক্যালডেরীয়রা ১২ টি নক্ষত্রপুঞ্জের সন্ধান পান। তা থেকে ১২ টি রাশিচক্রের (12 Zodiac Circles) সৃষ্টি হয়।

প্রাচীন মিশরীয় সভ্যতা (Ancient Civilization of Egypt)

মিশরে নগর সভ্যতা গড়ে উঠেছিল খ্রিস্টপূর্ব ৫০০০ অব্দে। নীল নদকে কেন্দ্র করে মিশরের এ সভ্যত গড়ে উঠেছিল বলে গ্রিক ইতিহাসবিদ হেরোডোটাস মিশরকে বলেছেন 'নীল নদের দান' (Gift of the Nile)। ৫০০০-৩২০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ পর্যন্ত সময়ের মিশরকে প্রাক-রাজবংশীয় যুগ বলা হয়। এ সময় মিশর কতগুলো ছোট ছোট নগর রাষ্ট্রে বিভক্ত ছিল। এগুলোকে বলা হত 'নোমা। ৩২০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে 'মেনেস' নামের এক রাজা সমগ্র মিশরকে একত্রিত করে একটি নগর রাষ্ট্র গড়ে তোলেন। দক্ষিণ মিশরের 'মেম্ফিস' হয় এর রাজধানী। এভাবে মিশরে রাজবংশের সূচনা হয়।

সিন্ধু সভ্যতা (The Indus Civilization)

মিশর ও মেসোপটেমিয়ায় যখন গড়ে উঠেছিল নগর সভ্যতা, প্রায় কাছাকাছি সময়ে ভারতবর্ষেও গড়ে উঠেছিল নগর সভ্যতা। এটি ব্রোঞ্জযুগের সভ্যতা। এখানে লোহার কোনো জিনিস পাওয়া যায়নি । প্ৰায় ৩৫০০ বছর পূর্বে দ্রাবিড় জাতি এ সভ্যতা গড়ে তুলেছিল বলে মনে করা হয়। এ প্রাচীন সভ্যতা আবিষ্কৃত হয় ১৯২১ সালে। সভ্যতাটি সিন্ধু নদীর তীরে গড়ে উঠেছিল বলে এটি ‘সিন্ধু সভ্যতা' নামে পরিচিত দ্রাবিড় জাতি এ সভ্যতা গড়ে তুলেছিল বলে মনে করা হয়। হরল্লা নগরীটি গড়ে উঠেছিল সিন্ধুর উপনদী বাতী'র তীরে। এটি অবস্থিত বর্তমান পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশে। আর মূল সিন্ধুনদের তীরে এক বর্গমাইল এলাকা জুড়ে গড়ে উঠেছিল মুহেডোদারো নগরী।

ফিনিশীয় সভ্যতা (The Phoenician Civilization)

লেবানন পর্বত এবং ভূমধ্যসাগরের মাঝামাঝি এক ফালি সরু ভূমিতে ফিনিশীয় রাষ্ট্র গড়ে উঠেছিল। কৃষিকাজ করার মত এখানে উর্বর জমি ছিলনা। তাদের আয়ের একমাত্র উৎস বাণিজ্য।

ফিনিশীয়দের অবদান

প্রাচীন সভ্যতার ইতিহাসে ফিনিশীয়দের পরিচয় শ্রেষ্ঠতম নাবিক ও জাহাজ নির্মাতা হিসাবে। ধ্রুবতারা (North Star) দেখে তারা দিক নির্ণয় করত। এ কারণে ধ্রুবতার অনেকের কাছে ফিনিশীয় তারা' (Phonecian Star) নামে পরিচিত ছিল।

সাংস্কৃতিক উন্নতি

সভ্যতার ইতিহাসে ফিনিশীয়দের সবচেয়ে বড় অবদান হল। বর্ণমালা (Alphabet) এর উদ্ভাবন। তারা ২২ টি ব্যঞ্জনবর্ণের (Consonants) উদ্ভাবন করে। আধুনিক বর্ণমালার সূচনা হয় এখান থেকে। ফিনিশীয়দের উদ্ভাবিত বর্ণমালার সাথে পরবর্তীতে গ্রিকরা স্বরবর্ণ (Vowels) যোগ করে বর্ণমালাকে সম্পূর্ণ করে ।

কারিগরি দক্ষতা

ফিনিশীয়রা মাটির পাত্র তৈরি করতে পারত। দক্ষতার সাথে কাপড় তৈরি ও রং করতে পারত ।

পারস্য সভ্যতা (The Persian Civilization)

আজকের ইরান প্রাচীনকালে পারসা নামে পরিচিত ছিল। খ্রিস্টপূর্ব ২০০০ অব্দ থেকে ৬০০ অব্দের মধ্য এখানে আর্যরা এক উন্নত সভ্যতা গড়ে তোলে। এ সভ্যতার অধিবাসীরা সামরিক শক্তিতে খ্যাতিমান ছিল। পারশিয়ারা মনে করত তাদের পূর্বপুরুষ ছিলি ‘একিমেনিস’। তাই একে ‘একিমেনডি’ সাম্রাজ্য বলা হত। সভ্যতার ইতিহাসে দুইটি ক্ষেত্রে পারসীয়দের অবদান ছিল গুরুত্বপূর্ণ।
প্রথমটি সুষ্ঠ ও দক্ষ প্রশাসন ব্যবস্থা গড়ে তোলা এবং দ্বিতীয়টি ধর্মীয় ক্ষেত্রে নতুন ধারণা নিয়ে আসা। অরপুষ্ট নামে পারস্যে এক ধর্মগুরু ও দার্শনিকের আবির্ভাব ঘটে। জরথুষ্ট্র কর্তৃক প্রবর্তিত ধর্ম ‘জরথুস্ট্রবাদ' নামে পরিচিত। পারস্যের ইতিহাসে কাইরাস ও দারিয়ুস ছিলেন সবচেয়ে সফল শাসক। ৩০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে গ্রিক বীর আলেকজান্ডার অধিকার করে নেন সমগ্র পারস্য সাম্রাজ্যকে।

হিব্রু সভ্যতা (The Hebrew Civilization)

প্যালেস্টাইনের জেরুজালেম নগরীকে কেন্দ্র করে গড়ে হিব্রু সভ্যতার বিকাশ ঘটেছিল। হিব্রু কোন জাতির নাম নয়। 'হিক' একটি সেমাটিক ভাষা। এ ভাষায় কথা বলা লোকেরাই হিব্রু নামে পরিচিত। হিব্রুদের আদিবাস ছিল আরব মরুভূমিতে। বর্তমান ইসরাইলের অধিবাসীরা হিব্রুদের বংশধর। হিব্রুরা তাদের অবদানের পুরোটাই রেখেছে ধর্মীয় ক্ষেত্রে। হিব্রুরা সর্বপ্রথম একেশ্বরবাদের কথা ব্যাপকভাবে প্রচার করে। অবশ্য অনেককাল পূর্বে মিশরের ফারাও ইখনাটন এক দেবতার আরাধনার আহবান... জানিয়েছিলেন। কিন্তু তা তেমন জনপ্রিয় হতে পারেনি। হিব্রুদের নবী হযরত মুসা (আ.), হযরত দাউদ (আ.) এবং হযরত সুলায়মান (আ.) মানুষের প্রচলিত ধর্মীয় চেতনায় নতুন আলোড়ন তোলেন।

প্রাচীন চৈনিক সভ্যতা (The Ancient Chiness Civilization)

তিনটি অঞ্চলে প্রাচীন চৈনিক সভ্যতা বেড়ে উঠতে থাকে। প্রথমটি হোয়াংহো (পীত নদী) নদীর তীরে, দ্বিতীয়টি ইয়াংজেকিয়াং নদীর তীরে আর তৃতীয়টি দক্ষিণ চীনে গড়ে উঠেছিল।

দর্শন

চীনের প্রাচীনতম দার্শনিক ছিলেন লাওসে। তাঁর মতবাদের নাম ছিল তাওবাদ। চীনের ইতিহাসে সবচেয়ে প্রভাবশালী দার্শনিক ছিলেন। কনফুসিয়াস (৫৫১-৪৭৯ খ্রি. পূ.)। কনফুসিয়াসের প্রধান অনুসারী ছিলেন মেনসিয়াস।

ইজিয়ান সভ্যতা (The Aegean Civilization)

গ্রিস ও এশিয়া মাইনরকে পৃথক করেছে ইজিয়ান সাগর। এই ইজিয়ান সাগর জুড়ে ছিল ছোট বড় অনেক দ্বীপ ইজিয়ান সাগরের দ্বীপমালা ও এশিয়া মাইনরের উপকূলে একটি উন্নত নগর সভ্যতা গড়ে। উঠে। ইতিহাসে এ সভ্যতা ইজিয়ান সভ্যতা নামে পরিচিত। গ্রিসে সভ্যতা গড়ে তোলার প্রস্তুতিপর্ব ছিল। এ সভ্যতা। ১২০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে ইজিয়ান সভ্যতার পতন ঘটে।

গ্রিক সভ্যতা (The Greek Civilization)

'গ্রিক' ও 'গ্রিস' শব্দ দুটি যথাক্রমে জাতি ও দেশ। গ্রিক সভ্যতায় অনেকগুলো ছোট ছোট নগর রাষ্ট্র গড়ে উঠেছিল। গ্রিসকে গণতন্ত্রের সূতিকাগার বলা হয়। গ্রিসের ভৌগোলিক পরিবেশ ছিল একটু ভিন্ন ধরনের। এ অঞ্চলে অনেকগুলো পাহাড় দাঁড়িয়ে ছিল দেয়ালের মত। ফলে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বেশ কয়েকটি অঞ্চলে ভাগ হয়ে যায় দেশটি। এ ছোট দেশগুলোর নাম হয় নগর রাষ্ট্র। এদের মধ্যে নেতৃস্থানীয় ছিল স্পার্টা ও এথেন্স।

রোমান সভ্যতা (The Roman Civilization)

প্রাচীনকালের অধিকাংশ সভ্যতা নদীমাতৃক হলেও রোমান সভ্যতা নদীমাতৃক ছিল না। ইতালির পশ্চিমাংশে অবস্থিত ছোট্ট শহর রোমকে কেন্দ্র করে রোমান সভ্যতার বিকাশ ঘটেছিল। ইন্দো- ইউরোপীয় গোষ্ঠীর একদল মানুষ ২০০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে উত্তর ইতালিতে বসতি গড়ে তোলে। এদের বলা হত ল্যাটিন। ক্রমে এদের ভাষা 'ল্যাটিন ভাষা' নামে পরিচিতি পায়। ল্যাটিন রাজা রোমিউলাস একটি নগরীর পত্তন করেন। রাজার নামেই নগরীর নাম হয় রোম। দাসশ্রমের উপর নির্ভরশীল ছিল রোমের অর্থনীতি। দাসদের উপর অমানবিক অত্যাচার করা হত। শেষ রোমান সম্রাট ছিলেন রোমিউলাস অগাস্টুলাস।

ইনকা সভ্যতা (The Inca Civilization)

পেরুর দক্ষিণাংশে শক্তিশালী ইনকা সভ্যতার বিকাশ ঘটেছিল। ইনকা সভ্যতার ব্যাপ্তিকাল ছিল ১৪৩৮-১৫৩২ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত। ইনকা সভ্যতার শক্তিশালী সম্রাটগণ তাদের বাসস্থান হিসাবে মাচু-পিচু নগরী গড়ে তুলেছিলেন।

ইনকা সভ্যতার ধ্বংসাবশেষ

মায়া সভ্যতার নিদর্শন পাওয়া যায় মেক্সিকোর দক্ষিণে এবং উত্তর মধ্য আমেরিকাতে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

Timeline Treasures নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url