জীববিজ্ঞানীদের পরিচয়
জীববিজ্ঞানকে আমরা এখন যেভাবে দেখছি আজ থেকে পঞ্চাশ বছর আগে কিন্তু এ রকম ছিল না।
এক সময় ধারণা ছিল যে পুরুষের ঘামে ভেজা গরম কাপড় এবং কিছু গম একটা বাক্সে যত্ন
করে রেখে দিলে কিছুদিন পরে তা থেকে ইঁদুর জন্মাবে।
জীবনের উৎপত্তি সম্পর্কে এ ভ্রান্ত ধারণা বহুদিন চালু ছিল। পরবর্তীকালে বিভিন্ন
বিজ্ঞানীদের গবেষণার ফলে জীবনের উৎপত্তি সম্পর্কে ধারণার বহুল পরিবর্তন হয়। যে সব
গবেষকদের গবেষণা ও চিন্তার ফল হিসেবে আমরা আজকের জীববিজ্ঞান পেয়েছি তাদের মধ্য
থেকে কয়েক জন জীব বিজ্ঞানীর সংক্ষিপ্ত পরিচিতি আপনাদের জানার জন্যই এই আর্টিকেল।
এ্যারিস্টোটল (Aristotle ৩৮৪-৩২২ খ্রি. পৃ)
মহাজ্ঞানী গ্রীক বিজ্ঞানী এ্যারিস্টোটলকে প্রাণিবিজ্ঞানের জনক বলা হয়। তিনি
সর্বপ্রথম প্রাণিবিজ্ঞানকে বিজ্ঞানের একটা শাখা হিসেবেও প্রতিষ্ঠিত করেন।
এ্যারিস্টোটল একাধারে একজন বিজ্ঞানী, কবি, চিন্তাবিদও দার্শনিক ছিলেন।
তিনিই প্রথম প্রাণী এবং উদ্ভিদের মূল গঠনের সামঞ্জস্যের কথা উল্লেখ করেন। তিনি
‘লেছবছ’ নামে একটা দ্বীপে একটানা পাঁচ বছর অবস্থান করে প্রাণীদের উপর গবেষণা
করেন। প্রাণীদের সম্মন্ধে তিনি "Historia ani- malium" নামে একখানা জ্ঞানগর্ভ ও
তথ্য বহুল পুস্তক রচনা করেন।
থিওফ্রাসটাস (Theophrastus খ্রি. পৃ. ৩৭০-২৮৫)
থিওফ্রাসটাস একজন গ্রীক দার্শনীক ছিলেন। তাঁর কাজের খুব কম সংখ্যক কাজের সন্ধান পাওয়া গেছে। তার কাজের মধ্যে
“On the History of Plants” এর নয়টি এবং “On the Causes of Plants” এর ছয়টি খন্ড
উল্লেখযোগ্য। থিওফ্রাসটাস বিখ্যাত দার্শনিক অ্যারিস্টটলের ছাত্র ছিলেন।
তিনি সমস্ত উদ্ভিদকে চার ভাগে ভাগ করেন। যথা- Trees (বৃক্ষু), Shrubs (গুল্ম), Undershrubs (উপগুলু) এবং
Herbs (বীরুৎ)। তাই তাঁকে উদ্ভিদ বিজ্ঞানের জনক বলা হয়।
আলবিরুনী (AL Birun: ১৭৩-১০৪৮)
বিশ্বখ্যাত, শিক্ষাবিদ এবং বিজ্ঞানী হিসেবে পরিচিত আলবিরুনী একজন আরবীয় নাগরিক
ছিলেন। তার প্রকৃত নাম আবু রায়হান মোহাম্মদ ইবনে আহমদ আল বিরুনী।
বিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখায় তিনি বিশেষ অবদান রেখেছেন। গজনীর সুলতান মাহমুদের সময়ে
তিনি ভারতবর্ষে বেড়াতে আসেন এবং সে সময়ে ভারতবর্ষের অবস্থা সুন্দরভাবে লিপিবদ্ধ
করেন।
ইবনে সিনা (Ibn Sina ৯৮০- ১০৩৭)
ইবনে সিনা একজন বিখ্যাত মুসলিম দার্শনিক ও বিজ্ঞানী ছিলেন। রসায়নবিদ্যা,
চিকিৎসাবিদ্যা, গণতিশাস্ত্র, জ্যোর্ভিবিদ্যায় এবং ভাষাবিদ্যায় তাঁর অসামান্য
পারদর্শিতা ছিল। তাঁর সম্পূর্ণ নাম ছিল আবু আলী হুসাইন ইবনে আবদুল্লাহ ইবনে সিনা।
তিনি বিভিন্ন বিষয়ের উপর একশতেরও বেশি বই লিখেন। তার মধ্যে ১৬ খানা বই চিকিৎসা
শাস্ত্রের উপর। তিনি চিকিৎসা শাস্ত্রের উপর “আলকানুন” নামক ১৪ খণ্ডাংশের বই
লিখেন।
আল-নাফীস (Al Nafis)
আননাফীস একজন আবরীয় বৈজ্ঞানিক ছিলেন। ইনি সর্বপ্রথম (উইলিয়াম হার্ভের ৩০০ বৎসর
পূর্বে) মানুষের রক্ত সঞ্চালন সম্মন্ধে সঠিক বর্ণনা করেন। তিনি একজন সফল
চিকিৎসাবিদও ছিলেন।
তার প্রকৃত নাম ইবনোন নাফীস। তিনি সুদীর্ঘকাল বিজ্ঞানের সাধনা করে প্রায় ৮০ বৎসর
বয়সে দামেস্কে পরলোকগমন করেন।
উইলিয়াম হার্ভে (wilium Hurvey: ১৫৭৮- ১৬৫৭)
উইলিয়াম হার্ভে একজন বৃটিশ বিজ্ঞানী ছিলেন। তিনি ১৬২৮ সালে রক্ত সঞ্চালন
প্রক্রিয়া পুনরায় আবিষ্কার করেন এবং অতীতের সব ধারণার অবসান ঘটান। ১৬৫১ সালে তিনি
বলেন্দ যে, ডিম্বাণু থেকেই সকল জীবনের সূত্রপাত হয়।
তাঁকে শারীরবিদ্যার জনক বলা হয়। তিনি প্রাণীদের রক্ত সঞ্চালন এবং রেচন প্রক্রিয়ার
সুস্পষ্ট ধারণা দেন ও উভয়ের মধ্যেই সম্পর্ক ব্যাখ্যা করেন। তাঁর প্রকাশিত
গ্রন্থের নাম “On the motion of the heart and blood in animals”.
এ্যান্থনি ভন লিউয়েনহোক (Anthony Von Leeuwenhoek: ১৬৩২-১৭২৩)
ডাচ বিজ্ঞানী লিউয়েনহোক সর্বপ্রথম অণুবীক্ষণ যন্ত্র তৈরি করেন। তবে তার অণুবীক্ষণ
যন্ত্র এখনকার অণুবীক্ষণ যন্ত্রের মত ছিল না।
তিনি তার তৈরি করা অণুবীক্ষণ যন্ত্রের মাধ্যমে ব্যাকটেরিয়া, স্নায়ুকোষ, হাইড্রা,
ভলভক্স ইত্যাদি জীবের যে বর্ণনা লিখে গেছেন তা অত্যন্ত সঠিক বলে প্রমাণিত হয়েছে।
ক্যারোলাস লিনিয়াস (Carolus Linnaeus ১৭০৭-১৭৭৮)
সুইডিস বিজ্ঞানী লিনিয়াস জীবদের দ্বিপদ নামকরণের (Binomial Nomenclature)
প্রবর্তক। পেশাগত জীবনে তিনি ছিলেন ডাক্তার, আপসালা বিশ্ববিদ্যালয়ের
শারীরতত্ত্বের অধ্যাপক। তিনি বহু উদ্ভিদ ও প্রাণী সংগ্রহ করে তাদের শ্রেণীবিন্যাস
ও নামকরণ করেন।
জীবজগতের শ্রেণীবিন্যাসের উপর রচিত “Systema Nature” তার বহুল প্রচলিত গবেষণা
গ্রন্থ। এ ছাড়া “Species Piantarum” এবং “Genera Plantarum” নামে তার আরো দুটি
বিখ্যাত গবেষণামূলক উদ্ভিদ বিজ্ঞানের বই। রয়েছে। তাঁকে শ্রেণীকরণ বিদ্যার জনক বলা
হয়।
চালর্স রবার্ট ডারউইন (Charles Robart Darwin: ১৮০৯-১৮৮২)
প্রাকৃতিক নির্বাচন মতবাদের (Theory of Natural
Selection) প্রবর্তক হলেন চালর্স রবার্ট ডারউইন। তিনি একজন ব্রিটিশ প্রকৃতি বিজ্ঞানী ছিলেন।
গেলাপেগো দ্বীপপুঞ্জের জীবসম্প্রদায় পর্যবেক্ষণ করে ১৮৫১ খ্রিস্টাব্দে তিনি তাঁর
বিখ্যাত গবেষণা পুস্তক “Origin of Species by Means of Natural Selection” এ তিনি
তাঁর মতবাদ প্রকাশ করেন।
আলফ্রেড রাসেল ওয়ালেস (Alfred Russel Wallace: ১৮২৩-১৯১৩)
ইংরেজ প্রকৃতিবিজ্ঞানী ওয়ালেস চার বছর আমাজন নদীর অববাহিকায় ঘুরে ঘুরে পর্যবেক্ষণ
ও গবেষণা করেছেন। তার বিখ্যাত বই “Travels on the Amazon and Rio Negro” এ
অভিজ্ঞতা থেকেই লেখা। আট বছর ধরে তিনি মালয় উপদ্বীপে গবেষণা করেন। গবেষণার ফলে তিনি “The Malay
Archipelago” বইটি লিখেছেন।
তার পোকা মাকড়ের বিরাট সংগ্রহ অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের হোপ সংগ্রহশালায় রক্ষিত
আছে। তিনি চার্লস ডারউইনের সাথে প্রাকৃতিক নির্বাচন মতবাদ তত্ত্ব ঘোষণার জন্য
খ্যাতি লাভ করেন।
গ্রেগর জোহান মেনডেল (Gregor Johann Mendel: ১৮২২-১৮৮৪)
গ্রেগর জোহান মেনডেল একজন অস্ট্রিয়ান ধর্মযাজক ছিলেন। তিনি তার গির্জার বাগানে মটরশুঁটি উদ্ভিদ নিয়ে দীর্ঘদিন
গবেষণা করেন।
এ গবেষণা থেকে তিনি ১৮৮৬ খ্রিস্টাব্দে বংশগতি বা জেনেটিক্স এর দুটি সূত্র প্রকাশ
করেন যা এখনো যথাযথ আছে। তাঁকে জেনেটিক্স এর জনক বলে আখ্যায়িত করা হয়।
জর্জ বেনথাম (George Bentham: ১৮০০- ১৮৮৪)
জর্জ বেনথাম ছিলেন একজন ইংরেজ উদ্ভিদবিজ্ঞানী। তিনি স্যার জোসেফ ড্যালটন
হুকার এর সাথে অনেকদিন একসাথে কাজ করেন। তাঁরা দুইজনে একত্রে তিন ভল্যুম এর “Genera Plantarum” গ্রন্থটি লিখেছেন। এটিই ছিলো বেনথামের সবচেয়ে বিখ্যাত কাজ।
এছাড়া তাঁর রচিত অন্যান্য বই হচ্ছে “Handbook of the British Flora”, “Flora
Hongkongensis”, “Flora Australiensis” ইত্যাদি।
থমাস হেনলি হাক্সলী (Thomas Henly Huxley: ১৮২৫-১৮৯৫)
বিখ্যাত ইংরাজ প্রাণিবিদ টি.এইচ হাক্সলী পাখিদের উপর অনেক কাজ করেন। তিনি পাখিকে
মহিমান্বিত সরীসৃপ' বলে উল্লেখ করেন এবং প্রমাণ করেন যে, সরীসৃপ পূর্বপুরুষ থেকে
বিবর্তনের ধারায় পাখীদের উদ্ভব হয়েছে।
এছাড়া তিনি প্রাণিবিদ্যার উপর অনেক গবেষণা করেন। তিনি চালর্স ডারউইনের প্রাকৃতিক
নির্বাচনবাদের বিশিষ্ট সমর্থক ছিলেন। হাক্সলী প্রোটোপ্লাজমকে জীবনের ভৌত ভিত্তি
হিসেবে বর্ণনা করেন।
আলেকজান্ডার ফ্লেমিং (Alexander Fleming: ১৮৮১-১৯৫৫)
আলেকজান্ডার ফ্লেমিং ছিলেন একজন জীবাণুবিদ। ১৯২৮ সালে তিনি দেখলেন ব্যাকটেরিয়া
কালচার পাত্রে পেনিসিলিন জন্মালে তার চারপাশে কোন ব্যাকটেরিয়া জন্মাতে পারে না।
তার এ পর্যবেক্ষণ থেকে তিনি অনুসন্ধান শুরু করেন।
এ অনুসন্ধান এবং গবেষণা থেকে তিনি পরবর্তীকালে পেনিসিলিন ওষুধ আবিষ্কার করেন যা
লক্ষ লক্ষ লোকের জীবন রক্ষা করছে। অন্য দুইজন বিজ্ঞানীর সাথে মিলিতভাবে তিনি ১৯৪৫
সালে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন।
জন হাচিনসন (John Hutchinson: ১৮৮৪- ১৯৭২)
ইংরেজ বিজ্ঞানী হাচিনসন কিউ রয়েল বোটানিকেল গার্ডেনে চাকরি করতেন। তিনি দুই
ভল্যুমে লেখা বই The Families of Flowering Plants এর জন্য খ্যাত।
প্রথম ভল্যুমে তিনি দ্বিবীজপত্রী উদ্ভিদ এবং দ্বিতীয় ভল্যুমে একবীজপত্রী উদ্ভিদ
সম্পর্কে লিখেছেন। তাঁর আর একটি বিখ্যাত বই হচ্ছে “British Flowering Plants”.
ডেভিড প্রেইন (David Prain)
ডেভিড প্রেইন একজন ইংরেজ চিকিৎসক। এবার্ডিন এবং এডিনবরা থেকে মেডিসিনে ডিগ্রি লাভ
করে তিনি ভারতীয় মেডিক্যাল সার্ভিস-এ যোগদান করে ১৮৮৩ সালে ভারতবর্ষে আসেন। তাঁর
প্রথম কর্মস্থল ছিল নোয়াখালীর লক্ষ্মীপুরে। আসার পরে তিনি নোয়াখালীর লক্ষ্মীপুর অঞ্চলের উদ্ভিদ নিয়ে
গবেষণা শুরু করেন।
১৮৮৭ থেকে ১৮৯৭ সাল পর্যন্ত তিনি কলিকাতা বোটানিক্যাল গার্ডেনের ডাইরেক্টর ছিলেন।
বাংলাদেশ ও এর আশপাশের অঞ্চলের গাছপালার বিবরণ সংক্রান্ত তাঁর প্রসিদ্ধ গ্রন্থ হল
দুই খণ্ডে প্রকাশিত “Bengal Plants”। তাঁর আর একটি উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ হল “Flora
of Sundribuns”।
সলিম আলী (Salim Ali: ১৮৯৬-১৯৮৭)
সলিম আলী ভারতের “The Birdman of india” নামে পরিচিত বিশিষ্ট পক্ষীবিদ। তিনি
ভারতের সকল পাখিকে বিজ্ঞান ভিত্তিক ভাবে পর্যবেক্ষণ করে “The Indian Birds” নামে
একখানা তথ্যবহুল গ্রন্থ রচনা করেন।
এ ছাড়াও তিনি পাখিদের সম্মন্ধে আরো অনেক গ্রন্থ রচনা করেন। তাঁর নিজের আত্মজীবনী
ও বেশ-বিখ্যাত গ্রন্থ। ১৯৮৩ সালে ভারত সরকার সলিম আলীকে তাঁর গবেষণার স্বীকৃতি
সরূপ পদ্মভূষণ উপাধিতে ভূষিত করেন।
স্যার হ্যানস ক্রেবস (Sir Hans Krebs 2 ১১০০-১৯৮১)
স্যার হ্যানস ক্রেবস একজন ব্রিটিশ বিজ্ঞানী। তিনি ১৯৫৩ সালে কোষীয় বিপাকের উপর গবেষণা করার জন্য F. A. Lipmann
এর সাথে মেডিসিন এবং ফিজিওলজিতে নোবেল পুরস্কার পান।
১৯৫৪ সালে তিনি অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োকেমিস্ট্রির বিভাগীয় প্রধান
নিযুক্ত হন। জীবের শ্বসন প্রক্রিয়ার ক্রেবস চক্র তারই আবিষ্কার।
জেমস্ ওয়াটসন এবং ফ্রেনসিস ক্রীক (James Watson and Francis Crick)
ওয়াটসন এবং ক্রীক দুজন ব্রিটিশ বিজ্ঞানী মানুষের বংশগতির ধারক DNA অণুর আণবিক গঠন
আবিষ্কারের জন্য বিখ্যাত। ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে Ph.D. ডিগ্রীর জন্য গবেষণা
করার সময় তারা ১৯৫৩ সালে DNA অণুর আণবিক গঠন আবিষ্কার করেন।
এ আবিষ্কারের জন্য তারা ১৯৬৩ সনে নোবেল পুরষ্কারে ভূষিত হন। ওয়াটসন এবং ক্রীক
সর্বপ্রথম প্রকাশ করেন যে DNA অণু দ্বিসূত্রক এবং হেলিক্যাল।
স্যার মেলভিন ক্যালভিন (Sir Melvin Calvin: জন্ম ১৯১১)
আমেরিকার ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ক্যালভিন সবুজ উদ্ভিদে কার্বন
বিজারণ পথ সংক্রান্ত গবেষণার জন্য বিখ্যাত।
ক্যালভিন আর একজন বিজ্ঞানী ব্যাশাম এর সহযোগিতায় উদ্ভিদে কার্বন বিজারণ-এর যে
প্রক্রিয়া আবিষ্কার করেন তা ক্যালভিন-ব্যাশাম এর পথ নামে পরিচিত। তিনি ১৯৬১ সালে
নোবেল পুরস্কার লাভ করেন।
Timeline Treasures নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url