তথ্য প্রযুক্তি ও বাংলাদেশ রচনা

বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে আলোচিত ও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি। শিল্প বিপ্লবের পর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির উন্নয়ন পৃথিবীতে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ঘটনা। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ক্ষেত্রে ব্যপক উন্নতির ফলে সমগ্র বিশ্ব আজ মানুষের হাতের মুঠোই এসেছে।
তথ্য প্রযুক্তি ও বাংলাদেশ রচনা
যা গ্লোবাল ভিলেজে নামে পরিচিত। বিশ্বের সকল অগ্রসর ও উন্নয়নের পেছনে রয়েছে বর্তমান তথ্যপ্রযুক্তি। যে জাতি তথ্যপ্রযুক্তিতে যত বেশি দক্ষ, সে জাতি তত বেশি উন্নত।

সূচিপত্রঃ- তথ্য প্রযুক্তি ও বাংলাদেশ রচনা

তথ্যপ্রযুক্তি কি

তথ্য সংরক্ষণ, প্রক্রিয়াকরণ, ব্যবস্থাপনা এবং বিতরণের জন্য ব্যবহৃত প্রক্রিয়া ও পদ্ধতির সমন্বয়কে তথ্যপ্রযুক্তি বলা হয়।

তথ্যপ্রযুক্তির কয়েকটি বিশেষ দিক

ডেটাবেস উন্নয়ন প্রযুক্তি, সফটওয়্যার উন্নয়ন প্রযুক্তি, নেটওয়ার্ক, মুদ্রণ ও রিপ্রোগ্রাফিক প্রযুক্তি, তথ্যভাণ্ডার প্রযুক্তি, বিনোদন প্রযুক্তি, শিক্ষণ-প্রশিক্ষণ ব্যবস্থা ইত্যাদি সবই তথ্যপ্রযুক্তির এক-একটি উল্লেখযোগ্য দিক।

তথ্যপ্রযুক্তির বৈশিষ্ট্য

তথ্যপ্রযুক্তির নিম্নলিখিত বৈশিষ্ট্যসমূহ লক্ষ্য করা যায়ঃ-
  • তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহারের ফলে সময় বাড়ার সাথে সাথে কাজের খরচ কমতে থাকে।
  • তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহারের ক্ষেত্র ও কাজের পরিমাণ ক্রমান্বয়ে বাড়তে থাকে।
  • উন্নত প্রযুক্তির মাধ্যমে লেনদেন ও তথ্য যোগাযোগের ক্ষেত্রে দ্রুত পরিবর্তন সম্ভব হয়েছে।
  • তথ্যপ্রযুক্তি চিকিৎসা, শিক্ষণ ও সংশ্লিষ্ট কর্মকাণ্ডের গতিকে ত্বরান্বিত ও সহজ করে।
  • তথ্যপ্রযুক্তি উৎপাদনের সকল ক্ষেত্রে অপচয় হ্রাস করে।
  • তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবসা-বাণিজ্যে লাভজনক প্রক্রিয়া সৃষ্টি করে।

তথ্যপ্রযুক্তি ও বর্তমান বাংলাদেশ

গত ২০ বছরে বিশ্বজুড়ে তথ্যপ্রযুক্তির অভাবনীয় পরিবর্তন ঘটেছে । তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে মানুষ সময় ও দূরত্বকে কমিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছে । বিশ্ব এসেছে মানুষের হাতের মুঠোয়। বাংলাদেশও তথ্যপ্রযুক্তির এ জীয়নকাঠির স্পর্শে ধীরে ধীরে জেগে উঠছে। গত এক দশকে পৃথিবীর অন্যান্য দেশের মত বাংলাদেশেও তথ্যপ্রযুক্তির ব্যপক প্রসার ঘটেছে। তথ্যপ্রযুক্তি ছাড়া উন্নয়ন যে সম্ভব নয় এ কথা আজ সর্বজন স্বীকৃত।

তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার

তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার যে জীবনযাত্রার মান বদলে দিতে পারে তা বিশ্বাস করতে এখন আর কেউ ভুল করছে না। তাই তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার বাংলাদেশে এখন অনেক বেড়েছে। স্কুল থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত কম্পিউটার শিক্ষা কার্যক্রম প্রবর্তন করা হয়েছে। প্রতিনিয়ত কম্পিউটারের ব্যবহার বাড়ছে। দেশে এখন কম্পিউটার হার্ডওয়্যার, সফটওয়্যার, ইন্টারনেট ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ৯ থেকে ১০ হাজারের মতো। সারা দেশে কম্পিউটার হার্ডওয়্যারের শো-রুম বয়েছে সহস্রাধিক। ঢাকাতেই গড়ে উঠেছে ৫ শতাধিক হার্ডওয়্যার প্রতিষ্ঠান। সফটওয়্যার প্রতিষ্ঠানের সংখ্যাও শতাধিক।

তথ্যপ্রযুক্তির প্রসারে সরকারের পদক্ষেপ

বর্তমান সরকারের (শেখ হাসিনা সরকার) অন্যতম নির্বাচনী অঙ্গীকার ছিল তথ্যপ্রযুক্তির সম্ভাব্য সর্বোচ্চ বিকাশের মাধ্যমে মানবসম্পদ উন্নয়ন। এ লক্ষ্যে বর্তমান সরকারের শাসনামলে তথ্যপ্রযুক্তির বিকাশে সহায়ক কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। যেমন-
তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার বাড়াতে হলে সর্ব প্রথমে আধুনিক যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহার বৃদ্ধি করতে হবে। তাই সারা দেশকে ধীরে ধীরে ডিজিটাল টেলিফোনের আওতায় নিয়ে আসা হচ্ছে। ইতোমধ্যেই দেশের প্রতিটি জেলায় ইন্টারনেট পৌঁছে গেছে। শিগগিরই উপজেলা পর্যায়ে পৌছে যাবে। তথ্যপ্রযুক্তির দ্রুত প্রসারের লক্ষ্যে সরকার 'জাতীয় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি নীতিমালা' অনুমোদন করেছে।

এই নীতিমালার সুষ্ঠু বাস্তবায়নের প্রয়াসে সরকার ঢাকার প্রাণকেন্দ্র কারওয়ান বাজারে ৭০ হাজার বর্গফুট আয়তনের ফ্লোরে অত্যাধুনিক সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত একটি 'আইসিটি ইনকিউবেটর' স্থাপন করেছে। বিদেশে বাংলাদেশের সফটওয়্যার ও তথ্যপ্রযুক্তি পণ্য বাজারজাতকরণের লক্ষ্যে 'আইসিটি বিজনেস প্রমোশন সেন্টার' স্থাপন করা হয়েছে। তথ্যপ্রযুক্তি প্রসারের লক্ষ্যে ঢাকার অদূরে কালিয়াকৈরে ২৬৫ একর জমিতে হাইটেক পার্ক স্থাপন করা হচ্ছে। সম্প্রতি রেলওয়ের ফাইবার অপটিক লাইন সবার ব্যবহারের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়েছে।

দেশের সকল অঞ্চলে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির প্রসার এবং এ বিষয়ে দক্ষ জনশক্তি গড়ে তোলার লক্ষ্যে মাধ্যমিক স্কুল পর্যায়ে কম্পিউটার শিক্ষা কোর্স প্রবর্তন এবং কম্পিউটার প্রদান কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। কম্পিউটার সায়েন্সে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পরীক্ষায় উত্তীর্ণ ছাত্রছাত্রীদের জন্য চালু করা হয়েছে আইসিটি ইন্টার্নশীপ কর্মসূচি। এছাড়াও তথ্যপ্রযুক্তি ও যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের লক্ষ্যে বেশ কয়েকটি উন্নয়নমূলক কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।

অর্থনৈতিক উন্নয়নে তথ্যপ্রযুক্তির ভূমিকা

তথ্যপ্রযুক্তিতে উন্নয়নের যে জোয়ার বইছে উন্নত দেশগুলোতে, দক্ষিণ এশীয় দেশগুলোর মধ্যে ভারতে তার প্রভাব অনেক আগে পড়লেও আমরা তা থেকে অনেক পেছনে পড়ে আছি। তথ্যপ্রযুক্তিকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে এবং মেধা ও শ্রমকে কাজে লাগানোর মাধ্যমে সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, তাইওয়ান, ভারত, থাইল্যান্ড প্রভৃতি দেশ উন্নতির শীর্ষ বিন্দুতে পৌঁছে গেছে।

সম্ভাবনাময় সফটওয়্যার শিল্প

বাংলাদেশে বর্তমানে সফটওয়্যার শিল্প সবচেয়ে সম্ভাবনাময় শিল্প হিসেবে দেখা দিয়েছে। হার্ডওয়্যার নির্মাণের সঙ্গে এখনো বাংলাদেশ তেমনভাবে জড়িত হয়নি। এ দেশে সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট তিনটি ক্যাটাগরিতে হচ্ছে। এগুলো হলো-কাস্টমাইজড সফটওয়্যার, মাল্টিমিডিয়া সফটওয়্যার ও ওয়েব সফটওয়‍্যার। বাংলাদেশ থেকে সফটওয়্যার রপ্তানি হচ্ছে অস্ট্রেলিয়া, বেলজিয়াম, ভুটান, কানাডা, সাইপ্রাস, দুবাই, জার্মানি, ভারত, মালয়েশিয়া, কোরিয়া, যুক্তরাজ্য ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে। এর মধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সবচেয়ে বেশি সফটওয়্যার রপ্তানি হচ্ছে।

কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে তথ্যপ্রযুক্তি শিল্প

বাংলাদেশে বর্তমানে কম্পিউটার হার্ডওয়্যার, সফটওয়্যার, ইন্টারনেট ও তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক প্রশিক্ষণ প্রদানের জন্য ৯-১০ হাজার প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। এ সকল প্রতিষ্ঠানে বিপুল সংখ্যক বেকার যুবক-যুবতীর কর্মসংস্থান হচ্ছে।

তথ্যপ্রযুক্তির উন্নয়নের জন্য করণীয়

বর্তমান একবিংশ শতাব্দীর প্রতিযোগিতামূলক বিশ্বে বাংলাদেশকে টিকে থাকতে হলে তথ্যপ্রযুক্তির উন্নয়নের বিকল্প নেই। আমাদের দেশের শিক্ষিত তরুণ সম্প্রদায় তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় তাদের যোগ্যতা বারবারই প্রনাণ করেছে। এজন্য নিম্নলিখিত পদক্ষেপসমূহ গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করা দরকার।
জাতীয় তথ্য অবকাঠামো গঠন
জাতীয় তথ্য অবকাঠামো গড়ে তোলা ব্যতীত বিশ্বব্যাপী তথ্যপ্রযুক্তি বিপ্লবের অংশীদার হওয়া সম্ভব নয়, যে রকম সংযোগ সড়ক ছাড়া মহাসড়কে পৌছানো সম্ভব নয়। তথ্য অবকাঠামো ব্যতীত গ্রামীণ বাংলাদেশ তথ্য বৈষম্যের শিকার হবে, যা। বাজার অর্থনীতি, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে সুবিধালাভের সম্ভাবনাকে সংকুচিত করে ফেলবে।
টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন
টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা তথ্য অবকাঠামোর মেরুদণ্ড। শক্তিশালী ও সুবিস্তৃত টেলিযোগাযোগ ব্যাবস্থা ব্যতীত তথ্যপ্রযুক্তির উন্নয়ন একেবারেই অসম্ভব। তাই দেশের তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পের উন্নয়নে নিম্নোক্ত কর্মসূচিগুলো গ্রহণ করা যেতে পারে-
  • টেলিনেটওয়ার্ক সম্প্রসারণে বার্ষিক লক্ষ্য নির্ধরণ ও তার বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা।
  • টেলি নিয়ন্ত্রণ কমিশনকে (TRC) সর্বজনীন সেবার লক্ষ্যমাত্রা বাস্তবায়নের দায়িত্ব দেয়া।
  • টেলিঘনত্ব ও টেলিনাগালের হার বৃদ্ধি করা।
  • টেলিযোগাযোগ খরচ সাধারণ মানুষের আয়ত্তের মধ্যে আনা।
  • দ্রুতগতির তথ্য সংযোগ (High speed data network) প্রকল্প দ্রুত বাস্তবায়ন করা।
  • জরুরিভিত্তিতে ডাকঘর, স্বাস্থ্যকেন্দ্র, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, গণগ্রন্থাগার, রেলস্টেশন, স্থানীয় কমিউনিটি সেন্টার, হাট-বাজার, এনজিও শাখায় ইন্টারনেট স্থাপন করা।
  • সর্বজনীন টেলিসেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে টিএন্ডটিকে (T&T) সম্পূর্ণভাবে বেসরকারি খাতে ছেড়ে দেয়া।
  • অপটিক্যাল ফাইবার ব্যাকবোনের যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করা।
মানবসম্পদ উন্নয়ন
দক্ষ মানবসম্পদ উন্নয়ন ছাড়া কোনো অবস্থাতেই দারিদ্রদ্র্য দূরীকরণ এবং তথ্যপ্রযুক্তির বিকাশ সাধন সম্ভব নয়। তাই মানবসম্পদ উন্নয়নের জন্য নিচের পদক্ষেপগুলো গ্রহণ করা যেতে পারে-
  • বাজারের চাহিদার প্রেক্ষিতে তথ্যপ্রযুক্তি শিক্ষার কারিকুলাম দ্রুত নবায়নের ব্যবস্থা করা।
  • সরকারি ও বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলোতে বাধ্যতামূরক তথ্যপ্রযুক্তি শিক্ষার ব্যবস্থা নিশ্চিত করা।
  • ডিগ্রি পর্যন্ত বাধ্যতামূলক কম্পিউটার শিক্ষা চালু করা।
  • বেকার জনগোষ্ঠীর জন্য তথ্যপ্রযুক্তি শিক্ষার ব্যবস্থা করা।
  • ইংরেজি শিক্ষাকে প্রযুক্তি শিক্ষা হিসেবে গুরুত্ব দেয়া।
  • কর্ম ক্ষেত্রে দক্ষতা অর্জনের জন্য শিল্প ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে তথ্যপ্রযুক্তি শিক্ষার প্রসারের ব্যবস্থা করা।
তথ্যপ্রযুক্তিভিত্তিক শিল্প, ব্যবসা-বাণিজ্য ও অর্থনীতি চালু করা
বিশ্বব্যাপী তথ্যপ্রযুক্তির ব্যাপক প্রসারের যুগে জীবনযাত্রার সকল ক্ষেত্রে তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহারের প্রতি আমরা কত দ্রুত সাড়া দেব তার ওপর নির্ভর করছে আগামী দিনের বাংলাদেশের ভাগ্য। আর এজন্য আমাদের করণীয় হবে-
  • সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে দেশের প্রধান প্রধান শহরগুলোতে সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক স্থাপন করা।
  • দেশে সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে সফটওয়্যার তৈরী ও প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতার আয়োজন করা।
  • সফটওয়্যার কোয়ালিটি ইনস্টিটিউট ও সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা করা।
  • সকল অফিস-আদালতে বাধ্যতামূলক ই-মেইল ব্যবহার নিশ্চিত করা।
  • ই-কমার্সভিত্তিক ব্যবসা-বাণিজ্য প্রতিষ্ঠার চেষ্টাকে জোরদার করা।
  • বাংলাদেশ ভিত্তিক ই-কমার্স কনটেন্ট তৈরিকে উৎসাহিত করা।
  • জনগণের জন্য টেলিমেডিসিন সেবা চালু করা।
  • বাংলা ভাষায় ইন্টারনেটভিত্তিক তথ্য সেবা চালু করা।
তথ্যপ্রযুক্তিভিত্তিক ব্যাংকিং ব্যবস্থা চালুকরণ
সুদক্ষ ব্যাংকিং ব্যবস্থা দেশের অর্থনীতির প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে। তাই ব্যাংকিং খাতকে সুদক্ষ, আধুনিক করার জন্য তথ্যপ্রযুক্তিভিত্তিক ব্যাংকিং ব্যবস্থার কোনো বিকল্প নেই। আর এ ক্ষেত্রে আমাদের করণীয় হলো:
  • ব্যাপক কৌশলগত পরিকল্পনাভিত্তিক Banking Automation নিশ্চিত করা।
  • রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে সম্পূর্ণ তথ্যপ্রযুক্তিভিত্তিক করার লক্ষ্যে ব্যাপক পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা।
  • কেন্দ্রীয় ব্যাংকে Automated Clearing House অবিলম্বে চালু করা।
  • ব্যাংকসমূহের সকল উপজেলাভিত্তিক শাখাগুলো নেটওয়ার্কের আওতায় আনা।
তথ্যপ্রযুক্তিভিত্তিক দক্ষ সরকারব্যবস্থা গঠন
তথ্যপ্রযুক্তির উন্নয়নের মাধ্যমে জাতীয় উন্নয়ন সাধন করার জন্য প্রয়োজন তথ্যপ্রযুক্তিভিত্তিক দক্ষ সরকারব্যবস্থা গড়ে তোলা। আর এ জন্য করণীয় হলো:
  • সরকারি তথ্যে অবাধ প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ইন্টারনেটভিত্তিক তথ্য ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলা।
  • সমস্ত সরকারি প্রতিষ্ঠানে ই-মেইল ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা।
  • আঞ্চলিক Video Conferencing System গড়ে তোলা।
  • সরকারি বিভিন্ন সেবা তথা আমদানি-রপ্তানি লাইসেন্স, ট্রেডমার্ক, নাগরিকত্ব নিবন্ধন, স্বত্বাধিকার ও জমি নিবন্ধন সেবা ইন্টারনেটের আওতায় আনা।
  • সরকারি-বেসরকারি ক্ষেত্রে বিশেষ করে বেতন, অবসর ভাতা ইত্যাদি ডিজিটাল মাধ্যমে প্রদানের ব্যবস্থা করা।

উপসংহার

পরিশেষে বলা যায় যে, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ছাড়া বর্তমান বিশ্বে কোন প্রকার উন্নয়ন সম্বব নয়। যে জাতি তথ্যপ্রযুক্তিতে যত বেশি দক্ষ, সে জাতি সব দিক দিয়ে তত বেশি উন্নত। তাই তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে দারিদ্র্য দূরীকরণ, অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও যুবকদের বেকারত্ব দূর করার জন্য আমাদেরকে স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করতে হবে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

Timeline Treasures নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url