এডোলেসেন্ট (Adolescence) শব্দের অর্থ হলো শৈশব থেকে যৌন পরিপক্কতা অর্জন করে
যৌবনে বা কৈশোরে পদার্পন করা। এটা একটি বয়ঃসন্ধি, শৈশবকাল অতিক্রম করে কিশোর বা
যৌবনকালে পা দেয়া। যৌবন শুরুর সময়ে থেকে প্রাপ্ত বয়স্ক (Adult) হওয়া পর্যন্ত এই
সময়কালে কোন ছেলে বা মেয়েকে সাধারণতঃ কিশোর বা কিশোরী বলে। বয়ঃসন্ধিকালীন
স্বাস্থ্য বলতে কিশোর-কিশোরীদের শারীরিক, মানসিক ও সামাজিকভাবে সম্পূর্ণ সুস্থতা
বোঝায়। সেক্ষেত্রে রোগ বা অঙ্গহানি রয়েছে সেরকম অবস্থা থাকতে পারবে না।
কৈশোর (Adolescence) কাকে বলে?
এটা এমন একটি সময়কাল যে সময়ের মধ্যে কোন ছেলে বা মেয়ের প্রজননতন্ত্র পূর্ণ
পরিপক্কতা অর্জন করতে থাকে এবং বিভিন্ন শারীরিক পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়। কখনও
কখনও একে যৌবনারম্ভ (Puberty) বলা হয়ে থাকে। যদিও পিউবার্টিকে নির্দিষ্টভাবে
সংজ্ঞায়িত করা হয় নিম্নরূপে-
পিউবার্টি হচ্ছে এমন একটি সময় কাল যখন প্রজনন অংগের অন্তঃক্ষরণ (Endocrine) এবং
প্রজনন কোষ তৈরীর কাজ (Production of Reproductive Cells) সর্বপ্রথম শুরু হয়ে এমন
একটি পর্যায় অতিক্রম করে যখন প্রজনন সম্ভব। বালিকাদের বেলায় প্রথমে স্তনদ্বয় বড়
হতে শুরু করে। তারপর বগলে (Axilla) ও কামাদ্রিতে (Monspubis) চুল উঠা শুরু হয়।
এরপর পরই সর্বপ্রথম ঋতুস্রাব শুরু হয় যাকে আমরা মেনাকী (Menarche) বলে থাকি।
ঋতুস্রাব আরম্ভের পর সাধারণতঃ প্রথম কয়েক মাস ডিম্বক্ষরণ ছাড়া (Ovulation) মাসিক
হতে থাকে। কিন্তু প্রায় এক বৎসর কালের মধ্যেই ডিম্বক্ষরণ সহ মাসিক হতে থাকে।
কৈশোর প্রাপ্তিকাল কিছুটা পরিবর্তনশীল। ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রে গত ১৭৫ বৎসর ধরে
প্রতি ১২ বছরে (Decade) এ ১-৩ মাস করে কমে আসছে। যুক্তরাষ্ট্রে বর্তমানে কৈশোর
প্রাপ্তি সাধারণতঃ শুরু হয় বালিকাদের বেলায় ৮-১৩ বৎসরের মধ্যে আর বালকদের বেলায়
৯-১৪ বৎসরের মধ্যে।
বয়ঃসন্ধিকালে মেয়েদের দেহে কি কি পরিবর্তন হয়?
১. বহিঃ যৌনাঙ্গ: ক্লাইটোরিস কিছুটা লম্বা ও মোটা হয়। অন্যান্য বহিঃ যৌনাঙ্গগুলো
পরিপক্ক হয়।
২. অন্তঃ যৌনাঙ্গঃ ডিম্বাশয়, জরায়ু এবং যোনীপথ পরিপক্ক হতে শুরু করে এবং বৃদ্ধি
পায়।
৩. স্বরঃ স্বরনালী কৈশোর পূর্ব অবস্থায় যে রকম ছিল ঠিক সে রকমই থাকে। স্বর উচ্চ
এবং তীক্ষ (High) হতে থাকে।
৪. লোমের বৃদ্ধিঃ দেহে লোম কম গজায় কিন্তু মাথায় (Scalp Hair) এবং কামাদ্রিত
(Pubic Hair)
বেশী চুল উঠে। মলদ্বারের চারপাশের কৈশোর পূর্ব অবস্থার মতোই কোন লোম থাকে না।
৫. মানসিক অবস্থাঃ বেশী আত্মপ্রত্যয়ী, কার্যকর দৃষ্টিভঙ্গি, বিপরীত লিঙ্গের প্রতি
আগ্রহ ইত্যাদি বৃদ্ধি পায়।
৬. শারীরিক গঠন: স্তনদ্বয় বৃদ্ধি পেতে থাকে। কাঁধ সরু, নিতম্ব এবং উরু প্রশস্ত
হতে থাকে। সেই সাথে নিতম্বে এবং স্তনে চর্বি জমা হতে থাকে।
বিঃদ্রঃ স্তন, জরায়ু এবং যৌনাঙ্গ এগুলো বৃদ্ধি পায় সাধারণতঃ ইসট্রোজেন
নামক হেেমানের জন্যে। আবার মেয়েদের কামাদ্রি এবং বগলে লোম উঠার কারণ হচ্ছে
এনড্রোজেন নামক হরমোন। যদিও দীর্ঘমেয়াদি ইসট্রোজেন হরমোন দ্বারা চিকিৎসা চললে
কিছু লোমের বৃদ্ধি হয়ে থাকে। এনড্রোজেন-কর্টেক্স থেকেই প্রধানতঃ নিঃসৃত হয়ে থাকে।
তবে ডিম্বাশয় থেকে খুব সামান্য পরিমাণে নিঃসৃত হয়।
বয়ঃসন্ধিকালে ছেলেদের কি কি পরিবর্তন হয়?
১. বহিঃ যৌনাঙ্গ: পুরুষাঙ্গ লম্বা ও মোটা হয়। অন্ডোথলি আরও কাল হয়।
২. অন্তঃ যৌনাঙ্গ: সেমিনাল থলিকা বড় হয় এবং রস ক্ষরণ হতে শুরু করে। এই অঙ্গ
ফ্রুকটোজ (Fructose) তৈরী করতে শুরু করে। প্রোস্টেট এবং বাল্বো-ইউরেথ্রাল গ্রন্থি
বড় হয় এবং রস নিঃসৃত করা শুরু করে।
৩. স্বরঃ স্বরনালী বৃদ্ধি পায়। স্বর সঞ্জুর Vocal Cord দৈর্ঘ্য এবং পুরুত্ব
বৃদ্ধি পায়। স্বর পরিবর্তন হয়ে বেশী মোটা হয়।
৪. লোমের বৃদ্ধিঃ দাড়ি-গোঁফ গজাতে থাকে। কামাদ্রিতে লোম (Public Hair) উঠতে থাকে।
বগলে, বুকে এবং মলদ্বারের চারপাশে লোম উঠা শুরু হয়। সর্বপরি সমগ্র শরীরে লোম
বাড়তে থাকে।
৫. মানসিক অবস্থা: বেশী আত্মপ্রত্যয়ী, কার্যকর দৃষ্টিভঙ্গি, বিপরীত লিঙ্গের প্রতি
আগ্রহ ইত্যাদি বৃদ্ধি পায়।
৬. শারীরিক গঠন: কাঁধ বেশী প্রশস্ত হবে, পেশী বৃদ্ধি পাবে। সেইসাথে শরীরের
বিভিন্ন অংশে কিছু কিছু চর্বি জমা হতে থাকবে।
দ্রুত এবং বিলম্বে যৌবন লাভ
দ্রুত যৌবন লাভ: কখনও কখনও জনন কোষ তৈরী ছাড়াই শৈশবে অর্থাৎ যৌবন আরম্ভের পূর্বে
দ্বিতীয় পর্যায়ে যৌন পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়। এর কারণ হলো অস্বাভাবিত মাত্রায়
এনড্রোজেন (ছেলেদের ক্ষেত্রে) এবং ইসট্রোজেন (মেয়েদের ক্ষেত্রে) হরমোন নিঃসৃত
হওয়া। তাই কোন ছেলে বা মেয়ের এইসব হরমোন যদি যৌবন আরম্ভের পূর্বে কোন কারণে
নিঃসরণ হতে থাকে তখন যৌবন আরম্ভের সময় সাধারণতঃ দেহে যে সব পরিবর্তন লক্ষ্য করা
যায় সেই সব পরিবর্তন আগেই ঘটে যায়। এমন অবস্থাকে দ্রুত যৌবন লাভ (Precocious
puberty) বলে।
বিলম্বে যৌবন লাভ: কোন মেয়ের যদি ১৭ বৎসরের মধ্যে মাসিক শুরু না হয় অথবা
কোন ছেলের ২০ বৎসর বয়সের মধ্যে অন্ডকোষের (Testis) পরিপক্ক না আসে, সেই অবস্থাকে
বিলম্বে যৌবন লাভ বলে।
কিশোরী বয়সীদের প্রজনন স্বাস্থ্য
বিদ্যমান প্রজনন স্বাস্থ্য সেবার আওতায় এতদিন কিশোর বয়সীদের প্রজনন স্বাস্থ্য
চাহিদার বিষয়টি প্রধানত উপেক্ষিত হয়েছে। এই বয়সীদের প্রজনন স্বাস্থ্য সংক্রান্ত
বিবেচনায় সমাজের যা করনীয় তার ভিত্তি হওয়া উচিত সেই তথ্য যা এদের বুদ্ধিকে পরিণত
করতে পারে এবং দায়িত্বশীল সিদ্ধান্ত গ্রহণে সক্ষম করে গড়ে তুলতে পারে। মোটের ওপর,
কিশোর বয়সীদের কাছে এমন তথ্য ও সেবা সুবিধা পৌঁছে দিতে হবে যাতে তারা নিজেদের যৌন
অনুভূতি বিষয়ে স্বচ্ছ ধারণা পেতে পারে এবং নিজেদের অবাঞ্চিত গর্ভাবস্থা, যৌনব্যধি
এবং বন্ধ্যাত্বের ঝুঁকি থেকে রক্ষা পেতে পারে। তথ্য ও সেবাসুবিধার সঙ্গে যুক্ত
হবে এমন শিক্ষা, যা নারীর আত্মনিয়ন্ত্রণের শক্তি সম্পর্কে যুবকদের শ্রদ্ধাশীল এবং
যৌনতা ও প্রজনন এর ক্ষেত্রে নারীর সঙ্গে দায়িত্ব ভাগ করে নেওয়ার মতো মনোভাবাপন্ন
করে গড়ে তুলতে পারে।
যুবতী মা এবং তাঁদের ছেলে মেয়েদের স্বাস্থ্য, নারীর ক্ষমতায়ন এবং জনসংখ্যা
বৃদ্ধির হারকে শ-থগতিসম্পন্ন করে তোলা- এ সবের জন্য এইসব প্রচেষ্টা এককভাবেই
গুরুত্বপূর্ণ। খুব অল্প বয়সে মা হলে যে মৃত্যুর ঝুঁকি দেখা দেয় তা গড়পড়তা মৃত্যু
হারের চেয়ে অনেক বেশী। অল্প বয়সে মায়েদের সন্তানদের অসুস্থতা ও মৃত্যুর হারও
উচ্চ। নারীর শিক্ষাগত, অর্থনৈতিক এবং সামাজিক মর্যাদা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে অল্প
বয়সের মাতৃত্বের বিষয়টি পৃথিবীর সর্বত্রই এখনো একটি প্রতিবন্ধকতা হয়ে আছে। অল্প
বয়সে বিয়ে এবং সন্তান হলে নারীর শিক্ষা ও কর্মসংস্থানের সুবিধা দারুণভাবে সংকুচিত
হয় এবং নারী ও শিশুদের জীবনযাত্রায় সুদুরপ্রসারী ক্ষতিকর প্রভাব পড়ে।
কম বয়সে সন্তান জন্ম দানের অধিকাংশ ঘটনার মূল কারণগুলির মধ্যে রয়েছে শিক্ষা ও
অর্থনৈতিক সুবিধার স্বল্পতা এবং যৌন-শোষণ। উন্নয়নশীল এবং উন্নত উভয় ধরনের
দেশগুলিতেই কিশোর কিশোরীদের জীবন যাত্রার ধরন বেছে নেওয়ার ক্ষেত্রে সামান্যই
সুযোগ আছে এবং গর্ভাবস্থায় সন্তানের জন্মদান এড়িয়ে চলার জন্য সুযোগ সুবিধার তেমন
কোনো ব্যবস্থা নেই। অনেক সমাজে যৌনক্রিয়ায় অংশগ্রহণের জন্য কিশোরবয়সীরা চাপের
সম্মুখীন হয়। অল্পবয়সী মহিলা, বিশেষত দরিদ্র কিশোরীরা এমন অবস্থার শিকার হয়।
যৌনজীবনে সক্রিয় কিশোর-কিশোরীরা ক্রমবর্ধমান হারে এইচআইভি/এইডস সহ অন্যান্য
যৌনব্যধিতে আক্রান্ত এবং অন্যদের মধ্যে তা ছড়ানোর উচ্চ-ঝুঁকি বহন করছে। নিজেদের
রক্ষা করার জন্য যতটা তথ্য জানা দরকার ততটা তারা জানার সুযোগ পায় না। কিশোর
কিশোরীদের জন্য গৃহীত কার্যক্রমগুলি সবচেয়ে কার্যকর হয় তখনই যখন বয়ঃসন্ধির
ছেলে-মেয়েরা নিজেদের প্রজনন ও যৌনস্বাস্থ্যের চাহিদাগুলিকে বুঝতে পেরে কার্যক্রমে
পূর্ণাঙ্গভাবে অংশ নিতে পারে।
কিশোর বয়সে প্রজনন স্বাস্থ্য সেবায় কি কি করতে হবে
১. পিতামাতা এবং অন্যান্য আইনসম্মত দায়িত্বপ্রাপ্ত অভিভাবকরা তাঁদের অধিকার,
দায়িত্ব ও কর্তব্যবোধ থেকে কিশোর বয়সীদের যৌন ও প্রজনন সংক্রান্ত বিষয়গুলির
ক্ষেত্রে তাদের বয়সোপযোগী পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে উপযুক্ত দিকনির্দেশনা ও
পরামর্শ দেবেন। এ বিষয়টি স্বীকার করে নিয়ে দেশগুলির উচিত হবে কার্যক্রম বা
স্বাস্থ্যকর্মীদের মাধ্যমে কিশোর বয়সীদের চাহিদার উপযোগী সেবা বা তথ্যলাভে (যৌন
ব্যাধি এবং যৌননিপীড়নের ক্ষেত্রেও) যাতে বাধা না আসে তা নিশ্চিত করা। এই ব্যবস্থা
গ্রহণ করতে গিয়ে এবং যৌন-নিপীড়ন সমস্যার সমাধানকল্পে কিশোর বয়সীদের
ব্যক্তিমর্যাদা, গোপনীয়তা ও শ্রদ্ধাবোধের অধিকার যাতে ক্ষুন্ন না হয়, তাদের
সম্মতি যাতে অবহিতমূলক হয়, তাদের সাংস্কৃতিক মূল্যবোধ ও ধর্মীয় বিশ্বাসে যাতে
আঘাত না লাগে এসবই নিশ্চিত করতে হবে সেবা দানকারীদের।
২. আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সহযোগিতায় প্রত্যেক দেশের সরকারের কর্তব্য হচ্ছে
কিশোর বয়সীদের স্বাস্থ্য শিক্ষা, তথ্য এবং পরিচর্যা সংক্রান্ত অধিকারগুলিকে রক্ষা
করা ও তুলে ধরা এবং পরিচর্যা সংক্রান্ত অধিকারগুলিকে রক্ষা করা ও তুলে ধরা এবং
সেই সঙ্গে কিশোরীদের গর্ভবতী হওয়ার ঘটনার সংখ্যা বিপুলহারে হ্রাস করা।
৩. সরকারি সংস্থাগুলিকে আহবান জানানো হচ্ছে, যাতে তারা বেসরকারি সংস্থাগুলির
সহযোগিতায় কিশোর বয়সীদের বিশেষ চাহিদা পূরণের ব্যবস্থা গ্রহণ করে এবং এজন্য
উপযোগী কার্যক্রমের প্রতিষ্ঠা করে। এ ধরণের কার্যক্রমে নারী-পুরুষের সম্পর্ক ও
সমতা, কিশোর-কিশোরীদের প্রতি সহানুভূতিমূলক আচরণ, দায়িত্বশীল যৌন আচরণ, দায়িত্বের
সঙ্গে পরিবার পরিকল্পনা গ্রহণ, পারিবারিক জীবন, প্রজনন স্বাস্থ্য, যৌনব্যাধি,
এইচআইভি সংক্রমণ এবং এইডস প্রতিরোধ বিষয়ে শিক্ষা ও পরামর্শদানের ব্যবস্থা রাখা
উচিত। কার্যক্রমে যৌন-নিপীড়ন প্রতিরোধ ও চিকিৎসা এবং অন্যান্য প্রজনন স্বাস্থ্য
সেবারও ব্যবস্থা থাকা দরকার।
যৌনজীবনে সক্রিয় কিশোর বয়সীদের জন্য বিশেষ পরিবার পরিকল্পনা তথ্য, পরামর্শদান এবং
সেবার প্রয়োজন হবে। যে সকল কিশোরী গর্ভবতী হবে তাদের জন্য গর্ভাবস্থাকালে এবং
শিশু জন্মদানের পর প্রথম দিকে পরিচর্যায় পরিবার এবং জনগোষ্ঠীর বিশেষ সহযোগিতার
প্রয়োজন হবে। এধরনের তথ্য ও সেবা কার্যক্রমে পরিকল্পনা, বাস্তবায়ন এবং মূল্যায়নের
ক্ষেত্রে কিশোর বয়সীরা অবশ্যই পুরোপুরিভাবে অংশ নেবে। সেইসঙ্গে পিতামাতার পরামর্শ
নির্দেশনা এবং দায়িত্ব সম্পর্কে তারা সচেতন ও শ্রদ্ধাশীল থাকবে।
যারা দায়িত্বশীল যৌন এবং প্রজনন আচরণ বিষয়ে কিশোর বয়সীদের দিকনির্দেশনা দেবার
উপযুক্ত, কার্যক্রমে তাদের সম্পৃক্ত করা এবং প্রশিক্ষণ দানের ব্যবস্থা থাকা চাই।
বিশেষত পিতামাতা ও পরিবার এর বয়োজৈষ্ঠ্যের মাধ্যমেও কিশোর বয়সীদের দিকনির্দেশনা
দিবেন। তবে জনগোষ্ঠী, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, বিদ্যালয়, গণ-মাধ্যম এবং সঙ্গীদের
মাধ্যমেও কিশোর বয়সীরা দিকনির্দেশনা পেতে পারে।
সরকারি এবং বেসরকারি সংস্থাগুলির এমন কার্যক্রম চালু করা উচিত যেখানে পিতা-মাতাকে
শিক্ষাদানের ব্যবস্থা থাকবে। এই শিক্ষাদানের উদ্দেশ্য হবে পিতামাতা ও সন্তানদের
মধ্যে সমঝোতা বাড়িয়ে তোলা যাতে পিতামাতা তাদের শিক্ষার মাধ্যমে শিশুর বেড়ে ওঠার
প্রক্রিয়াকে ভালভাবে বুঝতে পারেন, শিশুকে পরিণত বুদ্ধি হতে বিশেষতঃ যৌন আচরণ এবং
প্রজনন স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে সহায়ক ভূমিকা পালন করতে পারেন এবং তার উপযোগী পরিবেশ
গড়ে তুলতে পারেন।
তথ্যসুত্রঃ (পরিবার কল্যাণ সহকারী এবং পরিবার পরিকল্পনা
পরিদর্শক)সহায়িকা
আপনার সচরাচর জিজ্ঞাসাঃ
বয়ঃসন্ধিকালের ঝুঁকি গ্রহণ আচরণ কি?
বয়ঃসন্ধিকালের ঝুঁকি গ্রহণ আচরণ গুলোর মধ্যে রয়েছে যৌন কার্যকলাপ, পদার্থের
অপব্যবহার, ধূমপান, প্রতিরোধযোগ্য আঘাত এবং সহিংসতা, আত্ম-ক্ষতি ইত্যাদি।
বয়ঃসন্ধিকালের মানসিক চ্যালেঞ্জ কি কি?
বয়ঃসন্ধিকালে মানসিক চাপ সৃষ্টিকারী কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে প্রতিকূলতার
সংস্পর্শে আসা, সমবয়সীদের সাথে মানিয়ে নেওয়ার চাপ এবং পরিচয় অন্বেষণ ।
বিশেষ করে মোবাইল ফোন, সোশ্যাল মিডিয়ার প্রভাব, একজন কিশোর বা কিশোরীর জীবিত
বাস্তবতা এবং ভবিষ্যতের জন্য তাদের উপলব্ধি বা আকাঙ্ক্ষার মধ্যে বৈষম্যকে
বাড়িয়ে তুলতে পারে।
বয়ঃসন্ধিকালে কি ধরনের মানসিক বিকাশ ঘটে?
কিশোর-কিশোরীরা তাদের আবেগ এবং মূল্যবোধ নিয়ে প্রশ্ন তুলতে পারে, পরিবার এবং
সহকর্মীদের সাথে তাদের সম্পর্ক পরীক্ষা করতে পারে এবং তাদের প্রতিভা এবং
সাফল্যের সংজ্ঞা সম্পর্কে চিন্তা করতে পারে। পরিচয় গঠন একটি পুনরাবৃত্তিমূলক
প্রক্রিয়া যার সময় কিশোর-কিশোরীরা বারবার বিভিন্ন ধারণা, বন্ধু এবং
কার্যকলাপ নিয়ে পরীক্ষা করে।
বয়ঃসন্ধিকালে আমাদের করণীয় কী?
অবিভাবকদের উচিৎ, ছেলে মেয়েদের বয়ঃসন্ধিকাল সময়ে তাদের সাথে খোলা মেলা কথা
বলা উচিৎ। বয়ঃসন্ধিকালীন সময় পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকা, পুষ্টিকর খাবার
খাওয়া এবং প্রজননতন্ত্রের সংক্রমণ ও যৌনরোগ সম্পর্কে জানা ও প্রতিরোধ করার
জ্ঞান থাকা জরুরি বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।
বয়ঃসন্ধিকালে শরীরের যত্ন নেওয়া কেন জরুরি?
বয়ঃসন্ধির সময় শরীরে নতুন হরমোন তৈরি হয় যার ফলে তারা প্রাপ্তবয়স্ক হয়ে
থাকে। বয়ঃসন্ধির সময়, আপনার সন্তানের শরীর শৈশব ব্যতীত জীবনের অন্য সময়ের
তুলনায় দ্রুত হারে পরিবর্তিত হয় । এই পরিবর্তনগুলি বয়ঃসন্ধির সময় নতুন
স্বাস্থ্যবিধি অভ্যাসের প্রয়োজন তৈরি করে।
Timeline Treasures নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url