বাংলাদেশের ভৌগোলিক পরিচয় কি-বাংলাদেশের ভৌগোলিক অবস্থান
  বাংলাদেশ মক্ষিণ এশিয়ার একটি দেশ। এর পশ্চিমে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, উত্তরে ভারতের
  পশ্চিমবঙ্গ, আসাম ও মেঘালয় প্রদেশ, পূর্বে আসাম, ত্রিপুরা, মিজোরাম ও মায়ানমার
  অবস্থিত।
  দক্ষিণে বঙ্গোপসাগর এবং ভারত মহাসাগরে ভারতের একটি প্রদেশ আন্দামান নিকোবর
  অবস্থিত। বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী ভারতের মোট রাজ্য পাঁচটি।
সূচিপত্রঃ- বাংলাদেশের ভৌগোলিক পরিচয় কি-বাংলাদেশের ভৌগোলিক অবস্থান
বাংলাদেশের ভৌগোলিক পরিচিতি
অবস্থান
  এশিয়া মহাদেশের দক্ষিণে বাংলাদেশের অবস্থান। ২০০৩৪' উত্তর অক্ষরেখা হতে ২৬°৩৮′
  উত্তর অক্ষরেখার মধ্যে এবং ৮৮°০১ পূর্ব দ্রাঘিমা রেখা হতে ৯২°৪১′ পূর্ব দ্রাঘিমা
  রেখার মধ্যে অবস্থিত। বাংলাদেশের মাঝখান দিয়ে কর্কটক্রান্তি রেখা (২৩°৫' উত্তর
  অক্ষরেখা) অতিক্রম করেছে।
আয়তন
  বাংলাদেশের আয়তন ১,৪৭,৫৭০ বর্গ কি.মি. বা ৫৬,৯৭৭ বর্গমাইল। আয়তনে বিশ্বে
  বাংলাদেশের অবস্থান ৯০তম। (বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় ৩য় শ্রেণি।
বাংলাদেশের সীমান্ত
- বাংলাদেশের সীমান্ত দৈর্ঘ্য- ৫,১৩৮ কিলোমিটার।
 - বাংলাদেশের স্থল সীমান্ত দৈর্ঘ্য ৪,৪২৭ কিলোমিটার।
 - বাংলাদেশের উপকূলীয় সীমান্ত দৈর্ঘ্যা- ৭১১ কিলোমিটার।
 - বাংলাদেশ ভারত সীমান্ত দৈর্ঘ্য- ৪,১৫৬ কিলোমিটার।
 - বাংলাদেশ-মায়ানমার সীমান্ত দৈর্ঘ্য- ২৭১ কিলোমিটার। (বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ এর তথ্য মতে)
 - পূর্ব-পশ্চিমে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ বিস্তৃতি- ৪৪০ কিলোমিটার।
 - উত্তর-পশ্চিম থেকে দক্ষিণ-পূর্ব পর্যন্ত (তেতুঁলিয়া থেকে টেকনাফ)- ৭৬০ কিলোমিটার।
 
সীমান্তবর্তী বিভাগ ও জেলা
  বাংলাদেশের ৮টি বিভাগের মধ্যে ২টি বিভাগের (সিলেট ও ময়মনসিংহ) সবগুলো জেলার সাথে
  সীমান্ত আছে। ২টি বিভাগের (ঢাকা ও বরিশাল) কোনো জেলার সাথেই কোনো সীমান্ত নেই।
  বাকী চারটি বিভাগের কিছু কিছু জেলার সাথে সীমান্ত আছে। বাংলাদেশের মোট
  সীমান্তবর্তী জেলা- ৩২টি। এর মধ্যে ভারতের সালে ৩০টি এবং মায়ানমারের সাথে ৩টি
  জেলার সীমান্ত আছে।
  আরো পড়ুনঃ
  বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান সমুহ
  জেলা ৩টি হলো- বান্দরবান, কক্সবাজার ও রাঙামাটি। রাঙামাটির সাথে ভারত ও মায়ানমার
  উভয় দেশের সীমান্ত আছে। বাংলাদেশের পার্বত্য জেলা ৩টি খাগড়াছড়ি, রাঙামাটি ও
  বান্দরবান। এছাড়াও বাংলাদেশের। উপকূলীয় জেলার সংখ্যা- ১৯টি।
বাংলাদেশের ভূ-প্রাকৃতিক
  বাংলাদেশ পৃথিবীর অন্যতম বৃহত্তম ব-দ্বীপ। বাংলাদেশের প্রায় সমগ্র অঞ্চল এক
  বিস্তীর্ণ সমভূমি। এতে সামান্য পরিমাণ পাহাড় ও সোপান রয়েছে। ভূ- প্রাকৃতিক
  বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী বাংলাদেশের ভূ-প্রকৃতিকে ৩ যায়। ভাগে ভাগ করা যায়।
  বাংলাদেশের ভূ-প্রাকৃতিক শ্রেণীবিভাগ
১. টারশিয়ারি যুগের পাহাড়সমূহ।২. প্লাইস্টোসিনকালের সোপানসমূহ।
৩. সাম্প্রতিককালের প্লাবন সমভূমি।
১. টারিশিয়ারি যুগের পাহাড়সমূহ
  বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্ব, উত্তর ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলের পাহাড়সমূহ এ অঞ্চলের
  অন্তর্ভুক্ত। টারিশিয়ারি যুগে হিমালয় পর্বত উত্থিত হওয়ার সময়। এ সকল পাহাড় সৃষ্টি
  হয়েছে। এগুলো টারশিয়ারি যুগের পাহাড় নামে খ্যাত। পাহাড়গুলো আসামের লুসাই এবং
  মায়ানমারের আরাকান পাহাড়ের সমগোত্রীয়। এ পাহাড়গুলো বেলেপাথর, শেল ও কর্দম দ্বারা।
  গঠিত। এ অঞ্চলের পাহাড়গুলোকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে। যথা-
(ক) দক্ষিণ পূর্বাঞ্চলের পাহাড়সমূহ।(খ) উত্তর ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলের পাহাড়সমূহ।
২. প্লাইস্টোসিনকালের সোপানসমূহ
  আনুমানিক ২৫,০০০ বছর পূর্বের সময়কে প্লাইস্টোসিনকাল বলে। উত্তর-পশ্চিমাংশের
  বন্দ্রেভূমি, মধ্যভাগের মধুপুর ও ভাওয়ালের গড় এবং কুমিল্লা জেলার লালমাই পাহাড় বা
  উচ্চভূমি এ অঞ্চলের অন্তর্গত। প্লাইস্টোসিনকালে এসব সোপান গঠিত হয়েছিল বলে ধারণা
  করা হয়। নিচে এসব উচ্চভূমির বর্ণনা দেওয়া হলো।
  (ক) বরেন্দ্রভূমিঃ দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের প্রায় ৯,৩২০
  বর্গকিলোমিটার এলাকায় বরেন্দ্রভূমি বিস্তৃত। প্লাবন সমভূমি হতে এর উচ্চতা ৬ থেকে
  ১২ মিটার। এ স্থানের মাটি ধূসর ও লাল বর্ণের। বাংলাদেশের ভূ-প্রকৃতি ও ইতিহাসে
  বরেন্দ্রভূমির গুরুত্ব অপরিসীম। বরেন্দ্রভূমি থেকে প্রাপ্ত ঐতিহাসিক বহু মূল্যবান
  নিদর্শন দ্বারা গড়ে তোলা হয়েছে বরেন্দ্র গবেষণা জাদুঘর। বৃহত্তর দিনাজপুর, রংপুর,
  পাবনা, রাজশাহী ও বগুড়া জেলা জুড়ে বরেন্দ্রভূমি বিস্তৃত।
  আরো পড়ুনঃ
  বাংলাদেশের কৃষিজ সম্পদ
(খ) মধুপুর ও ভাওয়ালের গড়ঃ উত্তরে ব্রহ্মপুত্র নদী থেকে দক্ষিণে da বুড়িগঙ্গা নদী পর্যন্ত অর্থাৎ ময়মনসিংহ,
  টাঙ্গাইল ও গাজীপুর অঞ্চল জুড়ে এর বিস্তৃতি। এর মোট আয়তন ৪,১০৩ বর্গ কিলোমিটার।
  বরেন্দ্রভূমির মত এখানকার মাটির রং লাল ও ককেরমায় বলে কৃষি কাজের পক্ষে বিশেষ
  উপযোগী নয়।
  (গ) লালমাই পাহাড়ঃ কুমিল্লা শহর থেকে ৮ কি.মি. দক্ষিণে লালমাই থেকে ময়নামতি পর্যন্ত এটি বিস্তৃত।
    এর আয়তন ৩৪ বর্ণ কিলোমিটার এবং গড় উচ্চতা ২১ মিটার।
  ৩. সাম্প্রতিককালের প্লাবন সমভূমি
    টারশিয়ারি যুগের পাহাড়সমূহ ও প্লাইস্টোসিনকালের সোপানসমূহ ছাড়া সমগ্র বাংলাদেশ
    নদী বিধৌত এক বিস্তীর্ণ সমভূমি। এর আয়তন প্রায় ১,২৪,২৬৬ বর্গকিলোমিটার। এই
    সমভূমিকে কয়েকটি অঞ্চলে ভাগ করা যায়।
  
  (ক) কুমিল্লার সমভূমি।(খ) সিলেট অববাহিকা।
(গ) পাদদেশীয় পলল সমভূমি।
(ঘ) গঙ্গা-ব্রহ্মপুত্র-মেঘনা প্লাবন সমভূমি।
(ঙ) ব-দ্বীপ অঞ্চলীয় সমভূমি।
বাংলাদেশের চার প্রান্ত
| প্রান্ত | স্থান | উপজেলা | জেলা | 
|---|---|---|---|
| উত্তর | বাংলাবান্ধা/জায়গীরজোত | তেঁতুলিয়া | পঞ্চগড় | 
| দক্ষিণ | ছেঁড়াদ্বীপ/সেন্টমার্টিন | টেকনাফ | কক্সবাজার | 
| পূর্ব | আখাইয়াং | থানচি | বান্দরবান | 
| পশ্চিম | মনাকষা | শিবগঞ্জ | চাঁপাইনবাবগঞ্জ | 
- হিমালয়ের পাদদেশে অবস্থিত বলে পঞ্চগড় জেলাকে হিমালয়ের কন্যা' বলা হয়।
 - পঞ্চগড় থেকে হিমালয়ের কাঞ্চনজঙ্খা শৃঙ্গ দেখা যায়।
 
বাংলাদেশের কৌণিক শীর্ষ
| উত্তর পশ্চিম কোণ | তেঁতুলিয়া, পঞ্চগড় | 
| উত্তর-পূর্ব কোণ | জকিগঞ্জ, সিলেট | 
| দক্ষিণ-পশ্চিম কোণ | শ্যামনগর, সাতক্ষীরা | 
| দক্ষিণ-পূর্ব কোণ | টেকনাফ, কক্সবাজার | 

Timeline Treasures নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url