বায়োমেট্রি কি- বায়োমেট্রি এর ব্যবহার
বায়োমেট্রি (Biometrics)
গ্রীক শব্দ "bio" (life) ও "metric" (to measure) থেকে উৎপত্তি হয়েছে বায়োমেট্রিক্স (Biometrics)। বায়োমেট্রিক্স হলো এমন একটি প্রযুক্তি যেখানে কোন ব্যক্তির দেহের গঠন এবং আচরণগত বৈশিষ্ট্যের উপর ভিত্তি করে তাকে অদ্বিতীয়ভাবে চিহ্নিত বা সনাক্ত করা হয়। কম্পিউটার বিজ্ঞানে বায়োমেট্রিক্সকে ব্যক্তি সনাক্তকরণ এবং কোন সিস্টেমে প্রবেশাধিকার নিয়ন্ত্রণের কৌশল হিসাবে ব্যবহার করা হয়। এই পদ্ধতির মাধ্যমে বায়োমেট্রিক্স ডিভাইসগুলো ব্যবহারকারীদের কোন প্রোগ্রাম, সিষ্টেম বা কক্ষ ব্যবহারের অনুমতি দিয়ে থাকে। সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের তালিকা হতে কাউকে আলাদাভাবে চিহ্নিত করার কাজেও বায়োমেট্রিক পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়। ১৮৫৮ সালে ভারতীয় সিভিল সার্ভিসের কর্মরত থাকা অবস্থায় স্যার উইলিয়াম হার্সে (Sir William Herschel) তাঁর অধীনস্থ কর্মীদের সনাক্ত করণের জন্য কর্মীদের চুক্তিনামার উল্টোপিঠে হাতের ছাপ নিতেন। যতদূর জানা যায় এটিই সর্বপ্রথম বায়োমেট্রিক্সের ব্যবহার।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিশ্ব ও বাংলাদেশ প্রেক্ষিত
১৮৭০ সালে আলফনস বারটিপুন (Alphonse Bertilion) নামক একজন ফ্রেঞ্চ পুলিশ অফিসার ও বায়োমেট্রিক্স গবেষক অপরাধী সণাক্তকরণে মানব দেহের বিভিন্ন মাপ, হাতের ছাপ ইত্যাদি ব্যবহার করেন।
বায়োমেট্রিক্সের কাজ : কোন ব্যক্তি সনাক্তকরণ (Identification) এবং তার সত্যাসত্য নির্ধারণ (Verification) কাজে ব্যবহার করা হয়।
(ক) ব্যক্তি সনাক্তকরণ (Identification) কাজ গতানুগতিক পদ্ধতিতে টোকেন নির্ভর সনাক্তকরণ পদ্ধতি যেমন: লাইসেন্স, পাসপোর্ট বা আইডি কার্ড ইত্যাদি ব্যবহার করা হয় এবং জ্ঞান ভিত্তিক পদ্ধতিতে ইউজারনেম, পাসওয়ার্ড বা পিন নম্বর ব্যবহার করা হয়। কিন্তু বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে নির্ভর বা জ্ঞান ভিত্তিক পদ্ধতির চেয়ে অনেক বেশি গ্রহণযোগ্য। (খ) ব্যক্তিরা সত্যাসত্য নির্ধারণ (Verification) কাজ :
মানুষের কোন অদ্বিতীয় বৈশিষ্টোর উপর ভিত্তি করে সনাক্তকরণ (Identification) পদ্ধতি ব্যবহার করা হয় যা টোকেন
এই পদ্ধতিতে পূর্বে থেকেই কেন্দ্রীয় ডেটাবেজে সংরক্ষিত মানুষের কোন অদ্বিতীয় এক বা একাধিক বায়োমেট্রিক বৈশিষ্ট্যের সাথে পরীক্ষাধীন ব্যক্তির বর্তমান বায়োমেট্রিক ডেটার তুলনা করে ঐ ব্যক্তির সত্যাসত্য নির্ধারণ করা হয়। গতানুগতিক এবং জ্ঞান ভিত্তিক পদ্ধতিতে একজন ব্যক্তিকে তার লাইসেন্স, পাসপোর্ট বা আইডি কার্ড ইত্যাদি বহন করতে হয় এবং ইউজারনেম, পাসওয়ার্ড বা পিন নম্বর মনে রাখতে হয়। বায়োমেট্রিক্স পদ্ধতিতে অধিক গ্রহণযোগ্যতার ভিত্তিতে কোন ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা সিষ্টেমের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যায়।
বায়োমেট্রিক্সের প্রকারভেদ
দেহের গঠন এবং আচরণগত বৈশিষ্ট্যের উপর ভিত্তি করে বায়োমেট্রিক পদ্ধতি বিভিন্ন প্রকার হতে পারে। যথা- (ক) দেহের গঠন ও শারীরবৃত্তীয় বৈশিষ্ট্যের বায়োমেট্রিক পদ্ধতি (Physiological) =
১. আঙ্গুলের ছাপ বা টিপসই বা ফিংগার প্রিন্ট (Fingerprint)
২. আঙ্গুলের শিরা বা ফিংগার ভেইন (Finger vein)
৩. হ্যান্ড জিওমিট্রি (Hand geometry) ৪. আইরিস এবং রেটিনা স্ক্যান (Iris and retina scan)
৫. ফেইস রিকোগনিশন (Face recognition)
৬. ডিএনএ (DNA)
(খ) আচরণগত বৈশিষ্ট্যর বায়োমেট্রিক পদ্ধতি (Behavioral) =
১. ভয়েস রিকগনিশন (Voice recognition)
২. সিগনেচার ভেরিফিকেশন (Signature verification)
৩. টাইপিং কীস্ট্রোক (Keystroke verification)
Finger Print
Finger Vein
Hond
Face
DNA
PHYSIOLOGICAL
BEHAVIORAL
Layshoke
Signature
নিয়ে বহুল ব্যবহৃত কয়েকটি বায়োমেট্রিক পদ্ধতি সম্পর্কে আলোচনা করা হলো।
আঙ্গুলের ছাপ বা টিপসই বা ফিংগার প্রিন্ট (Fingerprint)
সৃষ্টির সেরা জীব মানুষ। সৃষ্টিকর্তা প্রতিটি মানুষের আঙ্গুলের ছাপে ভিন্নতা দিয়েছেন। মানুষের আঙ্গুলের ছাপ বা টিপসই অদ্বিতীয় অর্থাৎ একজন মানুষের আঙ্গুলের ছাপ বা টিপসই অন্য কোন মানুষের আঙ্গুলের ছাপের বা টিপসইয়ের সাথে মিলবে না। ফিংগার প্রিন্ট রিডার হচ্ছে বহুল ব্যবহৃত একটি বায়োমেট্রিক ডিভাইস যার সাহায্যে মানুষের আঙ্গুলের ছাপ বা টিপসইকে ইনপুট হিসাবে গ্রহণ করে তা পূর্ব থেকে সংরক্ষিত আঙ্গুলের ছাপ বা টিপসইয়ের সাথে মিশিয়ে পরীক্ষা করা
ফিংগার প্রিন্ট বায়োমেট্রিক প্রযুক্তি ব্যবহার করার পূর্বেই ব্যবহারকারীর আঙ্গুলের ছাপ ডেটাবেজে সংরক্ষণ করতে হয়। পরবর্তীতে এই রিডার আঙ্গুলের নিচের অংশের ত্বককে রীড করে সংরক্ষিত ছাপের সাথে তুলনা করে। রিডারটি ত্বকের টিস্যু এবং ত্বকের নীচের রক্ত সঞ্চালনের উপর ভিত্তি করে ইলেকট্রোমেগনেটিক পদ্ধতিতে কাজ করে থাকে। বর্তমানে বাজারে এক্সটারনাল ফিংগার প্রিন্ট রিডার বেশি দেখা যায় যা কম্পিউটারের ইউএসবি পোর্টের সাথে সংযোগ দেওয়া হয়। তবে কিছু নতুন কী-বোর্ড, নোট বুক বা ল্যাপটপ কম্পিউটারে ফিংগার প্রিন্ট রিডার যুক্ত থাকতে দেখা যায়।
আঙ্গুলের ছাপ বা টিপসইয়ের ব্যবহার/প্রয়োগ-
ফিংগারপ্রিন্ট রিডারের মাধ্যমে ব্যবহারকারীরা কোন প্রোগ্রাম বা ওয়েব সাইটে ইউজারনেম এবং পাসওয়ার্ডের পরিবর্তে আঙ্গুলের ছাপ ব্যবহার করে কম্পিউটার সিস্টেমে প্রবেশ বা লগ অন (Log on) করতে পারে। কোন সিস্টেমের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রবেশাধিকার নিয়ন্ত্রণ করতে মূলতঃ ফিংগার প্রিন্ট রিডার ব্যবহৃত হয়। তবে ব্যাংকিং পেমেন্ট সিস্টেম, আদালতের সাক্ষ্য প্রমাণ এবং ডিএনএ সনাক্ত করার কাজেও ফিংগার প্রিন্ট ব্যবহৃত হয়।
সুবিধা-
• এই পদ্ধতি ব্যবহারে খরচ তুলনামূলক কম হয় এবং
Plain Arch
Tented Arch
Ulnar Loop
Radial Loop
সনাক্তকরণের জন্য খুবই কম সময় লাগে। সফলতার পরিমাণ প্রায় শতভাগ। B অসুবিধা-
Plain Whort
Central Pocket Loop
Double Loop Who
Accidental When
শুষ্কতা, আঙ্গুলে ময়লা বা কোন প্রকার আস্তর লাগানো থাকলে সঠিকভাবে ব্যক্তি সনাক্তকরণ হয় না। • ছোট বাচ্চাদের জন্য এই প্রযুক্তি উপযুক্ত নয় কারণ বাচ্চাদের হাতের ছাপ খুব দ্রুত বৃদ্ধিজনিত পরিবর্তন হয়।
আঙ্গুলের শিরা বা ফিংগার ভেইন (Finger vein) শিরা (Veins) হলো রক্তপরিবাহী নালী যা সাধারণত দেহকোষ থেকে অক্সিজেনমুক্ত (deoxygenated) রক্ত হৃদপিন্ডের নিকট সরবরাহ করে। মানুষের আঙ্গুলের ত্বকের নিচের রক্ত পরিবাহী শিরা-উপশিরার অবস্থান, গঠন ও অন্যান্য নিদর্শনগুলির প্যাটার্ণ অদ্বিতীয়। ২০০৫ সালে জাপানের হিটাচী (Hitachi) ফিংগার ভেইন বা আঙ্গুলের ত্বকের নিচের শিরার প্যাটার্ণ সনাক্তকরণের মাধ্যমে ব্যক্তি সণাক্তকরণ পদ্ধতি উদ্ভাবন করেন। কাজেই, যে বায়োমেট্রিক্স প্রযুক্তিতে মানুষের
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিশ্ব ও বাংলাদেশ প্রেক্ষিত
আঙুলের ত্বকের নিচের রক্ত পরিবাহী শিরা-উপশিরার অবস্থান, গঠন ও অন্যান্য নিদর্শনগুলির পার্টীগের উপর ভিত্তি করে। প্রতি সনাক্তকরণের পদ্ধতিকে ফিংগার ভেইন সনাক্তকরণ পদ্ধতি বলা হয়। এটি ভানুলার সনাক্তকরণ প্রযুক্তি হিসেবেও পরিচিত।
আঙ্গুলের শিরা বা ফিংগার ভেইন সনাক্তকরণ পদ্ধতি কীভাবে কাজ করে। মানুষের শরীরের রক্তের হেমোগ্লোবিন (Hemoglobin) ইনফ্রারেড তরঙ্গদৈর্ঘ্যের নিকটবর্তী (near-infrared) আলো শোষণ করে। ব্যক্তির আঙুল একটি ইনফ্রারেড লাইট ইমিটিং ডায়োড এবং একটি মনোক্রোম চার্জ কাপন্ড ডিভাইস
Near Infrared Light LED
(সিসিডি) ক্যামেরার মধ্যে স্থাপন করা হয়। রক্তের হেমোগ্লোবিন নিকটবর্তী ইনফ্রারেড আলো শোষণ করায় সিসিডি ক্যামেরা শিরা সিস্টেমকে লাইনের গাঢ় প্যাটার্ন হিসেবে দেখতে পায়। ক্যামেরা ঐ প্যাটার্ণের ছবিটি রেকর্ড করে এবং এর ডিজিটাল ডেটা সংরক্ষণ করে। ডিজিটালকৃত প্রত্যয়িত এবং ডেটাবেজে পূর্বে নিবন্ধিত চিত্রগুলি তুলনা করে সনাক্তকরণের কাজ সম্পন্ন হয়। এ পদ্ধতিতে ব্যক্তির আঙুলের স্ক্যান করা হয়। সনাক্তকরনের প্রত্রিয়াটি সম্পন্ন করতে প্রায় দুই সেকেন্ডেরও কম সময় লাগে।
CCD Camera
আঙ্গুলের শিরা বা ফিংগার ভেইন প্রযুক্তির ব্যবহার / প্রয়োগ
বর্তমানে এই পদ্ধতিটি ব্যক্তি সনাক্তকরণের নির্ভুলতার জন্য বেশ পরিচিতি লাভ করেছে। যেমন-ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলিতে নিরাপদ ব্যক্তি সনাক্তকরণ পদ্ধতি হিসেবে ফিংগার ডেইন ব্যাপক স্বীকৃতি পেয়েছে। এটিকে মূলত ফিংগার প্রিন্ট প্রযুক্তির চেয়ে নিরাপদ বলে মনে করা হয়। কারণ এই পদ্ধতির প্যাটার্নটি লুকানো থাকে ত্বকের নিচে। এছাড়া ফিংগার ভেইন প্রযুক্তি বিভিন্ন ধরনের অ্যাপ্লিকেশনের জন্য ক্রেডিট কার্ড, আটামোবাইল নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের সময় ও উপস্থিতি ট্র্যাকিং, স্বয়ংক্রিয় ট্রেলার মেশিনে ব্যবহৃত হয়। সুবিধা-
ফিংগার ভেইন সনাক্তকরণ পদ্ধতিটি তুলনামূলক বেশি নির্ভুল ও সুক্ষ্ণ হয়ে থাকে।
এই প্রযুক্তিতে আঙ্গুল স্ক্যানিং তল স্পর্শ করার প্রয়োজন হয় না। ফলে রোগ সংক্রমণের কোন সম্ভাবনা থাকে না। যেহেতুে স্ক্যানিং তল আঙ্গুল স্পর্শ করার প্রয়োজন হয় না ফলে স্ক্যানিং তলে কোন ছাপ পড়ে না। তাছাড়া আঙ্গুলের শিরা-উপশিরা ও অন্যান্য নিদর্শন ত্বকের নিচে লুক্কায়িত থাকে ফলে প্যাটার্ণ চুরি বা জালিযাতির সম্ভাবনা থাকে না। কাজেই এটি একটি নিরাপদ সনাক্তকরণ পদ্ধতি।
এ সনাক্তকরণ পদ্ধতিটি আবহাওয়া বা বয়সের দ্বারা প্রভাবিত হয় না।
বর্তমানে অধিক নির্ভরতা ও সুক্ষতার জন্যয্যমূল ভিত্তিক হাইব্রিড ব্যক্তি সনাক্তকরণ পদ্ধতি ব্যবহৃত হয়। এই পদ্ধতিতে আঙ্গুলের ছাপ বা ফিংগার প্রিন্ট ও আঙ্গুলের শিরা বা ফিংগার ভেইন প্রযুক্তি একত্রে ব্যবহৃত হয়।
ফেইস রিকোগনিশন (Face recognition)
একজন মানুষের মুখমন্ডলের সাথে অন্য কোন মানুষের মুখমণ্ডলের হুবহু মিল দেখা
যায় না। সৃষ্টিকর্তা মানুষের মুখমণ্ডলের ভিন্নতা দিয়েছেন। মানুষের মুখম সনাক্তকরণ বা ফেইস রিকোগনিশন সিস্টেম হচ্ছে এক ধরনের কম্পিউটার প্রোগ্রাম যার সাহায্যে মানুষের মুখের গঠন প্রকৃতি পরীক্ষা করে তাকে সনাক্ত করা হয়। এই পদ্ধতির মাধ্যমে কোন ব্যবহারকারীর সরাসরি মুখের ছবিকে কম্পিউটারে সংরক্ষিত ছবির সাথে তুলনা করা হয়। এখানে দুই চোখের মধ্যবর্তী দূরত্ব, নাকের দৈর্ঘ্য এবং ব্যাস, চোয়ালের কৌণিক পরিমাণ ইত্যাদি পরিমাপের মাধ্যমে কোন ব্যক্তিকে সনাক্ত করা হয়।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি
মুখমণ্ডল সনাক্তকরণ বা ফেইস রিকোগনিশন সিস্টেমের ব্যবহার/প্রয়োগ-
সন্দেহভাজন কোন ব্যাক্তিকে সনাক্তকরণে, বিল্ডিং বা কক্ষের প্রবেশদ্বারে পাহারা দেওয়ার কাজে, এবং কোন ব্যাক্তির আইডি নম্বর সনাক্তকরণে এই পদ্ধতি ব্যবহার হয়।
সুবিধা- ফেইস রিকোগনিশন সিষ্টেম সহজে ব্যবহারযোগ্য এবং
সঠিক ফলাফল পাওয়া যায়।
হ্যামেরা ছাড়া এই প্রযুক্তি ব্যবহার করা যায় না। তাছাড়া ক্যামেরায়
আলোর পার্থক্যের কারণে অনেক ক্ষেত্রে জটিলতার সৃষ্টি হয়।
চুলের স্টাইল পরিবর্তন, মেকআপ ব্যবহার, গহনা ব্যবহার ইত্যাদি মুখমণ্ডল সনাক্তকরণকে ব্যাহত করে।
হ্যান্ড জিওমিটি (Hand geometry)
মানুষের হাতের আকৃতি ও জ্যামিতিক গঠনে ভিন্নতা পরিলক্ষিত হয়। হ্যান্ড জিওমিট্রি পদ্ধতিতে বায়োমেট্রিক ডিভাইস দ্বারা মানুষের হাতের আকৃতি বা জ্যামিতিক গঠন ও
Finger lenghtFinger width
Hand lenght
Patm length
সাইজ নির্ণয়ের মাধ্যমে মানুষকে সনাক্ত করা হয়। এই পদ্ধতিতে হ্যান্ড জিওমিট্রি রিডার একই সাথে ৩১,০০০ এর বেশি পয়েন্ট এবং ৯০টির বেশি আলাদা আলাদা পরিমাপ পরীক্ষা করতে পারে। এখানে হাতের দৈর্ঘ্য, প্রস্থ, পূরত্ব ইত্যাদি পরিমাপ করা হয়। এই পদ্ধতিতে ব্যবহারকারীর হাতটি রিডারের নির্দিষ্ট স্থানে রাখার পর বায়োমেট্রিক ডিভাইস
৫ সেকেন্ডেরও কম সময়ের মধ্যে ডেটাবেজে সংরক্ষিত মানের
Finger perimeter
সাথে প্রাপ্ত মানের পরীক্ষা করে সনাক্তকরণের ফলাফল প্রদান করে থাকে। হ্যান্ড জিওমিটি পদ্ধতির ব্যবহার/প্রয়োগ- এয়ারপোর্টের আগমন-নির্গমন নিয়ন্ত্রণ, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চাকুরীজীবীদের উপস্থিতি নির্ণয়ে, বিল্ডিং বা কক্ষের প্রবেশদ্বারে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের লাইব্রেরিতে, বিভিন্ন ডেটা সেন্টার, আদালতে আসামী সনাক্তকরণ ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে হ্যান্ড জিওমিটি পদ্ধতি ব্যবহৃত হয়। হ্যান্ড জিওমিটি পদ্ধতির সুবিধা-
ব্যবহারকারীদের জন্য এই পদ্ধতিটি ব্যবহার করা সবচেয়ে সহজ, কারণ হাতটি একটি নির্দিষ্ট স্থানে রাখা ব্যতিত কোন কিছুই করার প্রয়োজন হয় না। সিস্টেমে খুব অল্প মেমরির প্রয়োজন হয়।
হ্যান্ড জিওমিট্রি ডিভাইসগুলির দাম তুলনা মূলকভাবে বেশি এবং ইন্সটলেশন খরচও বেশি। আর্থাইটিস রোগীদের জন্য এটির ব্যবহার উপযুক্ত নয়। সনাক্তকরণে ফলাফলের সূক্ষ্ণতা হাতের আঙ্গুলের ছাপ বা ফিংগার প্রিন্ট থেকে তুলনামূলকভাবে কম।
আইরিস এবং রেটিনা স্ক্যান (Iris recognition and retina scan)
বায়োমেট্রিক্স প্রযুক্তিতে সনাক্তকরণের জন্য মানুষের চোখের আইরিসকে (Iris) আদর্শ অঙ্গ হিসাবে গ্রহণ করা হয়। একজন মানুষের চোখের আইরিস বা চোখের তারার দৃশ্যমান রঙিন অংশ অপর কোন মানুষের চোখের আইরিসের প্যার্টানের সাথে মিলবে না। এটি অদ্বিতীয়, চোখের আইরিস
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিশ্ব ও বাংলাদেশ প্রেক্ষিত
স্থায়ী এবং দৃশ্যমান। আইরিস বায়োমেট্রিক্স পদ্ধতিতে কোন ব্যাক্তির এক বা উভয় চোখের আইরিশ বা চোখের তারার দৃশ্যমান রঙিন অংশের ভিডিওকে পরীক্ষা করে গাণিতিক প্যাটার্ন রিকগনিশন পদ্ধতির প্রয়োগে সনাক্তকরণ করা হয়। এই পদ্ধতিতেই চোখ ও মাথাকে স্থির করে একটি ক্যামেরসম্পন্ন ডিভাইসের সামনে দাড়াতে হয়। এতে প্রায় ১ থেকে ১০ সেকেন্ড সময় লাগে। পূর্ব থেকে ধারণ করা চোখের আইরিসের প্যার্টানের সাথে মিলিয়ে সনাককরণ করা হয়।
IRIS
Comea
Optic Nerve
বিভিন্ন মানুষের চোখের আইরিসের প্যাটার্ন
IRIS
আইরিস বায়োমেট্রিক্স পদ্ধতি প্রয়োগ/ব্যবহার- এই পদ্ধতির প্রোয়োগে পাসপোর্টবিহীনভাবে এক দেশের সীমা অতিক্রম করে অন্য দেশে গমন করা যেতে পারে যা বর্তমানে ইউরোপে ব্যবহৃত হয়েছে। তাছাড়া সরকারি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান, মিলিটারি, আর্থিক প্রতিষ্ঠান ইত্যাদিতেও সনাক্তকরণ কাজে ব্যবহার করা হয়।
• মানুষের চোখের আইরিস (Iris) হলো একটি আদর্শ অঙ্গ যা স্বচ্ছ পর্দা দ্বারা আচ্ছাদিত থাকে, ফলে এর কোন ক্ষয় নেই। এ জন্য এটি একটি উচ্চ নিরাপত্তামূলক সনাক্তকরণ ব্যবস্থা যা স্থায়ী এবং দৃশ্যমান
সনাক্তকরণে খুবই কম সময় প্রয়োজন। সনাক্তকরণে ফলাফলের সূক্ষ্মতা হাতের আঙ্গুলের ছাপ বা ফিংগার প্রিন্ট থেকে তুলনামূলকভাবে অনেক বেশি।
এই পদ্ধতি অত্যন্ত ব্যয়বহুল। তুলনামূলকভাবে বেশি মেমরি প্রয়োজন হয়। চোখের চশমা ব্যবহার করে এই পদ্ধতিতে সনাক্তকরণ করা যায় না ফলে ডিভাইস ব্যবহার করার সময় চশমা খোলার প্রয়োজন হয়। অনেকে মনে করেন এই পদ্ধতি ব্যবহার করার ফলে চোখের ক্ষতিও হয়। ক্যামেরার সামনে আলোর
পর্যাপ্ততার সাথে এর সনাক্তকরণ নির্ভরশীল আইরিশ ও রেটিনা স্ক্যান পদ্ধতি এক নয়। পূর্বে রেটিনা স্ক্যান পদ্ধতি ব্যবহৃত হত কিন্তু বর্তমানে তা প্রায় অচল। চোখের মনির পশ্চাতে রেটিনা অবস্থিত যাতে জটিল গঠনের ক্যাপিলারি ও স্নায়ুবিক কোষ থাকে। মানুষের চোখের রেটিনার ক্যাপিলারি জটিল গঠন, স্নায়ুবিক কোষ ও বিভিন্ন লেয়ারের ক্যাপিলারিতে রক্তের পরিমাণ পরিমাপ করে মানুষকে সনাক্ত করা হয়। আইরিশ ও রেটিনা স্ক্যান পদ্ধতির মধ্যে আইরিশ সনাংকরণ বেশি সুবিধাজনক।
ডিএনএ (DNA)
মানুষের আঙুলের ছাপ দিয়ে যেমন আসল এবং নকল মানুষকে চেনা যায়, তেমনি ডিএনএ ফিঙ্গার প্রিন্টিং এর সাহায্যেও আসল এবং নকল মানুষকে শনাক্ত করা যায়। আসলে এই পদ্ধতিতে মানুষ চেনার বিষয়টি অনেক বেশি বিজ্ঞান সম্মত হওয়ায় অপরাধী নির্ণয়ের জন্য ফরেনসিক জীববিদ্যায় এই পদ্ধতির প্রয়োগের ফলে এক নতুন দিগন্ত উন্মুক্ত হয়েছে। পৃথিবীর প্রায় সব দেশে সঠিক অপরাধীকে চিহ্নিত করার ক্ষেত্রে ডিএনএ ফিঙ্গার প্রিন্টিং ব্যাপক ভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে।
ইতি মধ্যে জৈব বিবর্তনের বিভিন্ন কাজে এটি সফল ভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে। ১৯৮৬ সালে ইংল্যান্ডের Leicester বিজ্ঞানী অ্যালেক জেফ্রিস (Alec Jeffreys) ফরেনসিক গবেষণায় এক অভূতপূর্ব পরিবর্তন আনলেন ডিএনএ (DNA) ফিঙ্গার প্রিন্টিং আবিষ্কারের মাধ্যমে। ল্যাবরেটরিতে কাজ করার সময় তিনি একটি পরিবারের বিভিন্ন সদস্যের ডিএনএ এর এক্স-রে ফ্লিমের মধ্যে মিল খুঁজে পান, যা তার ডিএনএ ফিঙ্গার প্রিন্টিং পদ্ধতি আবিষ্কারের মূল ভিত্তি। এ জন্য অ্যালেক জেফ্রিসকে ডিএনএ ফিঙ্গার প্রিন্টের জনক বলা হয়। বর্তমানে এই পদ্ধতি বিভিন্ন দেশের National DNA database এ ব্যাপক ভাবে কাজে লাগানো হচ্ছে।
কোন মানুষের দেহ কোষ থেকে ডিএনএ আচরণ করার
DNA
পর তার সাহায্যেই কতিপয় পর্যায়ক্রমিক পদ্ধতি অনুসারে ওই মানুষের ডিএনএ ফিঙ্গারপ্রিন্ট তৈরি করা হয় কাজেই ডিএনএ ফিঙ্গার প্রিন্ট তৈরি করার জন্য
ডিএনএ সংগ্রহ করা প্রয়োজন।
00000 ডিএনএ ফিঙ্গার প্রিন্ট এর মুখ্য উপাদান ডিএনএ প্রধানত কোন অপরাধের স্থান (যেমন খুনের স্থল, কোন জায়গায় পরে থাকা রক্ত ইত্যাদি), মানব দেহের রক্ত, চুল, শুক্ররস এছাড়াও একবার বা দুবার পরা জামা কাপড় থেকে ডিএনএ সংগ্রহ করা যেতে পারে। অনেকদিন ধরে মাটির তলায় থাকা মানুষের মৃতদেহে থেকেও 'ডিএনএ সংগ্রহ করা যেতে পারে। মানুষের ক্ষেত্রে শ্বেত কণিকার বা রসে চুলের গোড়ায় অথবা অস্থিতে অবস্থিত কোষ থেকে ডিএনএ সংগ্রহ করে ফিঙ্গার প্রিন্টিং করা হয়। সংগৃহীত ডিএনএ কে প্রধানত টেস্ট টিউবে সংগ্রহ করা হয়। এবং একে সংরক্ষিত রাখার জন্য ঠান্ডা বা কম উচ্চতায় রাখা হয়।
ডিএনএ ফিঙ্গার প্রিন্টিংয়ের ব্যবহার
অপরাধী সনাক্তকরণে
• পিতৃত্ব নির্ণয়ে
বিকৃত শবদেহ শনাক্তকরণে লুপ্তপ্রায় প্রাণীদের বংশ বৃদ্ধির জন্য জিনগত মিল রয়েছে এমন আত্মীয় খুঁজতে
চিকিৎসা বিজ্ঞানে বিশেষত অস্থি মজ্জা সংস্থাপনের আগে দাতা ও গ্রহিতার সম্পর্ক নির্ণয়ে ইত্যাদি।
সুবিধা-
ডিএনএ ফিঙ্গার প্রিন্টিং তৈরি ও সনাক্তকরণের জন্য কিছু সময় লাগে। পদ্ধতিগত কোন ত্রুটি না থাকলে সনাক্তকরণের সফলতার পরিমাণ প্রায় শতভাগ। (সহোদর যমজদের ক্ষেত্র ছাড়া)
অসুবিধা-
• ডিএনএ প্রফাইলিং করার সময় পদ্ধতিগত ত্রুটি ডিএনএ ফিঙ্গারপ্রিন্টিং এর ত্রুটির সম্ভাবনা বাড়িয়ে দেয়। • পরিক্ষাগারের কর্মীদের কর্মদক্ষতা ও পারদর্শিতা এবং সতর্কতার অভাব ডিএনএ ফিঙ্গারপ্রিন্টিং এর ফলাফলের ওপর প্রভাব পড়ে।
• সহোদর যমজদের ক্ষেত্রে ডিএনএ ফিঙ্গারপ্রিন্টিং সম্পূর্ণ এক হয়।
• তুলনামূলক খরচ বেশি।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিশ্ব ও বাংলাদেশ প্রেক্ষিত
ভয়েস রিকোগনিশন (Voice recognition)
বিভিন্ন মানুষের কণ্ঠস্বর বা ভয়েসের (Voice) মধ্যে ভিন্নতা পরিলক্ষিত হয়। একজন মানুষের কণ্ঠস্বর বা ভয়েসেকে অদ্বিতীয় ধরা হয় যা অন্যের কন্ঠস্বরের সাথে মিলবে না। ভয়েস রিকোগনিশন পদ্ধতিতে একজন ব্যবহারকারীর কণ্ঠস্বরকে ডেটাবেজে সংরক্ষিত করে ঐ ভয়েস ডেটা ফাইলের সাথে ব্যবহারকারীর ভয়েসের তুলনা করা হয়। এ পদ্ধতিতে প্রথমে সকল ব্যবহারকারীর কণ্ঠকে কম্পিউটার প্রোগ্রামিং এর সাহায্যে ইলেকট্রিক সিগন্যালে রূপান্তর করে ডেটাবেজে সংরক্ষণ করতে হয়। পরবর্তিতে ভয়েস রেকর্ডারের সাহায্যে ব্যবহারকারীর ভয়েস রেকর্ড করা হয়। অতঃপর প্রোগ্রামের সাহায্যে উভয়ের তুলনা করে সনাক্ত করা হয়।
ভয়েস রিকোগনিশন পদ্ধতির প্রয়োগ/ব্যবহার- বড় ধরনের প্রতিষ্ঠানে টাইম এবং উপস্থিতি নির্ণয়ে ভয়েস রিকগনিশন পদ্ধতি ব্যবহার করে থাকে। অনেক প্রতিষ্ঠান।
তাদের গুরুত্বপূর্ণ ফাইল এবং নেটওয়ার্ক ব্যবহারের জন্য এই পদ্ধতি ব্যবহার করে। অনেক আর্থিক প্রতিষ্ঠান টেলিফোনের মাধ্যমে লেনদেনের ক্ষেত্রে এই পদ্ধতি ব্যবহার করে। টেলিকমিউনিকেশন সিষ্টেমের নিরাপত্তায় ভয়েস রিকোগনিশন
একটি গুরুত্বপূর্ণ পদ্ধতি। সুবিধা সহজ ও কম খরচে বাস্তবায়নযোগ্য সনাক্তকরণ পদ্ধতি। এই পদ্ধতিতে সনাক্তকরণ করা হলে সামাজিকভাবে অনেক বেশি গ্রহণযোগ্য হয়।
অসুবিধা : এই পদ্ধতির সুক্ষতা তুলনামূলকভাবে কম। অসুস্থতা জনিত কারণ যেমন: ঠাণ্ডা, সর্দি, কাশি ইত্যাদি ফলে কোন ব্যবহাকারীর কন্ঠ পরিবর্তন হলে সেক্ষেত্রে অনেক সময় সঠিক ফলাফল পাওয়া যায় না। কম্পিউটার বা ভয়েস রেকর্ডার ব্যবহার করে কোন ব্যক্তির ভয়েস নকল করা সহজ। ফলে এই পদ্ধতি নিরাপদ নয়।
স্বাক্ষর/সই/দস্তখত বা সিগনেচার ভেরিফিকেশন
(Signature verification)
বিভিন্ন মানুষের হাতের দস্তখত বা স্বাক্ষর বিভিন্ন ধরনের হয়। একজনের দস্তখত বা স্বাক্ষরের সাথে অন্যজনের স্বাক্ষরের সাথে হুবহু মিল দেখা যায় না। সিগনেচার ভেরিফিকেশন পদ্ধতিতে ব্যবহারকারীর হাতে লেখা স্বাক্ষর বা দস্তখতকে পরীক্ষা করা হয়। এখানে স্বাক্ষরের আকার, ধরন বা প্যাটার্ন, লেখার গতি, সময় এবং কলমের চাপকে পরীক্ষা করে ব্যবহারকারী স্বাক্ষর সনাক্ত করা হয়। একটি স্বাক্ষরের সকল প্যারামিটার Wat ডুপ্লিকেট করা প্রায় অসম্ভব। এই পদ্ধতিতে বিশেষ ধরণের একটি কলম এবং প্যাড বা টেবলেট পিসি ব্যবহার করা হয়। ব্যবহার/প্রয়োগ : স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, ব্যাংক-বীমা, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, সরকারি অফিসসহ সর্বত্রই সনাক্তকরণের
কাজে এই পদ্ধতি করা পারে। সুবিধা : ইহা একটি সর্বস্তরের গ্রহণযোগ্য পদ্ধতি। ইহা ব্যবহারের খরচ কম। সনাক্তকরণে খুব কম সময় লাগে। ফলাফলের সূক্ষ্মতা হাতের আঙ্গুলের ছাপ বা ফিংগার প্রিন্টের চেয়ে তুলনামূলকভাবে কম। অসুবিধা: যারা স্বাক্ষর জানেন না তাদের জন্য এই পদ্ধতি ব্যবহার করা যায় না।
উপরে বর্ণিত বায়োমেট্রিক্স প্রযুক্তি ছাড়াও আরও অনেক প্রযুক্তি রয়েছে। যেমন শিরা ম্যাচিং (Vein matching) বায়োমেট্রিক্স পদ্ধতি। এই পদ্ধতিতে মানুষের চর্মের উপর থেকে দৃশ্যমান রক্তের শিরা-উপশিরার গঠন ও রক্তের হিমোগ্লোবিনে আলোর প্রতিফলনের উপর ভিত্তি করে সনাক্তকরন করা যায়। বর্তমানে এই প্রযুক্তির প্রচলন প্রতিনিয়তই
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি
বাড়ছে। সাধারণত আঙ্গুলের শিরা (Finger vein) অথবা হাতের তালুর শিরা (Palm vein) বিশ্লেষণ করে এই পদ্ধতিতে সনাক্তকরণ করা হয়। বিভিন্ন বায়োমেট্রিক্স সনাক্তকরণ প্রযুক্তির তুলনা
বিভিন্ন বায়োমেট্রিক্স পদ্ধতির
বৈশিষ্ট্য বিভিন্ন রকমের। বিভিন্ন
মাপকাঠিতে তাদের বিচার
করলে বিভিন্ন রকম ফगान
দেখা যায়। ফলাফলের সুক্ষ্মতা
বা নির্ভুলভাবে সনাক্তকরণের
মাপকাঠিতে বিচার করলে দেখা
যায়। চোখের আইরিশ
বায়োমেট্রিক্স প্রযুক্তি এ যাবৎ
উদ্ভাবিত পদ্ধতিগুলোর মধ্যে
সবচেয়ে ভাল। আবার সহজে
ব্যবহার যোগ্যতার মাপকাঠিতে
বিচার করলে দেখা যায় ভয়েস
রিকগনিশন বায়োমেট্রিক্স
পদ্ধতি সবচেয়ে ভাল। কাজেই
বায়োমেট্রিক্স প্রযুক্তি ব্যবহারের উদ্দেশ্যের উপর নির্ভর করবে কোন প্রযুক্তি নির্বাচন করা প্রয়োজন।
বায়োমেট্রিক্স প্রযুক্তিতে কীভাবে ব্যক্তি সনাক্তকরণের কাজ করা হয়?
বায়োমেট্রিক্স প্রযুক্তি তিনটি ধাপে কাজ করে। যথা-
SMART CARD
Voice
Face
Hand Shape
Finger vein
Fingerprint
Iris
Security
নিবন্ধন (Enrollment/ Registration) বায়োমেট্রিক্স প্রযুক্তি ব্যবহারের প্রথম ধাপ হলো ব্যবহারকারী নিবন্ধন করা। এই ধাপে ব্যবহারকারীর পরিচিতি যেমন-নাম ও ঠিকানা, এক বা একাধিক অদ্বিতীয় বৈশিষ্ট্য যেমন- হাতের আঙ্গুলের ছাপ, স্বাক্ষর, কন্ঠস্বর, চোখের রেটিনার গঠন ইত্যাদি উপযুক্ত বায়োমেট্রিক্স ইনপুট যন্ত্রপাতির সাহায্যে কম্পিউটারে গ্রহণ করা হয়। উদাহরণ হিসাবে বায়োমেট্রিক ফিঙ্গার প্রিন্ট রিডারের কথা ধরা যেতে পারে। এই যন্ত্র ব্যবহারকারীকে প্রথমবার তাঁর হাতের আঙ্গুলের ছাপের কয়েকটি নমুনা ও অন্যান্য তথ্যাবলী নিবন্ধন করতে হয়।
বায়োমেট্রিক ফিচার এক্সট্রাকশন ও সংরক্ষণ (Storage) বায়োমেট্রিক্স ইনপুট ডিভাইসের সাহায্যে ব্যবহারকারীর যে অদ্বিতীয় বৈশিষ্ট্য ইনপুট নেওয়া হয় তা থেকে নির্যাস বা বিশেষ ফিচার অথবা প্যাটার্ণ আহরণ করে তা ঐ ব্যক্তির নামের বিপরীতে সিস্টেমের কেন্দ্রীয় ডেটাবেজে সংরক্ষণ করা হয়। উদাহরণ হিসাবে মানুষের আঙ্গুলের ছাপ বা টিপসই গ্রহণ করে তা থেকে কোন বিশেষ প্যাটার্ণ তৈরি করে কেন্দ্রীয় সার্ভারে সংরক্ষণ করার কথা বলা যেতে পারে।
110101010101 001010001110 101010101010 101010001111 010100101010
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি : বিশ্ব ও বাংলাদেশ প্রেক্ষিত
বা (Comparison) এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণ: সনাক্তকরণের প্রয়োজনে ব্যবহারকারী প্রতিবারই উপযুক্ত বায়োমেট্রিক ডিভাইসের সাহায্যে তাঁর এক বা একাধিক অদ্বিতীয় বৈশিষ্ট্যকে ইনপুট দেয়। এই ইনপুটের নির্যাস বা ফিচার এক্সট্রাকশন করে ডিজিটাল কোডে রূপান্তর করা হয় এবং এই কোডকে কম্পিউটারে পূর্বের ধাপে সংরক্ষিত কোডের সাথে তুলনা করা হয়। প্যাটার্ন রিকগনিশন প্রযুক্তির বিভিন্ন জটিল অ্যালগোরিদম ব্যবহার করে এই তুলনার করা
ব্যবহারকারীর
হয়। ব্যক্তিগত
সংরক্ষিত
কাজ
কোড Acquired Biometric Sample
কম্পিউটারে
কোন
Feature Extraction
Matching
Decision
কোডের সাথে মিলে যায় তবে
তাকে সনাক্তকরণের সিদ্ধান্ত হয়।
গাণিতিক সমস্যা।
আইসিটি এডুকেশন ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তা স্বপন, মাসুম, আনোয়ার ও জাহিদের ফিংগার প্রিন্ট প্যাটার্ন মান যথাক্রমে
Database
২৬৪০, ২৫১৫, ২১২০ ও ১৬৮০ যা বায়োমেট্রিক সনাক্তকরণ সিস্টেমে সংরক্ষিত রয়েছে। এই প্রতিষ্ঠানে ব্যবহৃত বায়োমেট্রিক্স রিডারের Bioinformatic Match Threshold মান ২৫ নির্ধারণ করা আছে। (ক) একজন ব্যক্তি এই প্রতিষ্ঠানের প্রবেশদ্বারে রক্ষিত ফিংগার প্রিন্ট রিডারে তাঁর আঙ্গুল স্ক্যান করায় তাঁর ফিংগার প্রিন্ট প্যাটার্ন মান হলো ২১৩০। এই ব্যক্তির পরিচয় সনাক্ত কর। (খ) অপর একজন ব্যক্তি এই প্রতিষ্ঠানের প্রবেশদ্বারে রক্ষিত ফিংগার প্রিন্ট বিচারে তাঁর আঙ্গুল স্ক্যান করায় তাঁর ফিংগার প্রিন্ট প্যাটার্ণ মান হলো ১৫১০। এই ব্যক্তির পরিচয় সনাক্ত কর।
সমাধান: (ক) আলোচ্য ব্যক্তির ফিংগার প্রিন্ট প্যাটার্ণ মান হলো ২১৩০। ব্যবহৃত বায়োমেট্রিক্স রিডারের Bioinformatic Match Threshold মান ২৫ নির্ধারণ করা আছে। সংরক্ষিত তথ্য থেকে দেখা যায় যে, ২১৩০ এর নিকটতম মান হলো ২১২০ (আনোয়ার)। এই মান দ্বয়ের পার্থক্য হলো ১০ (২১৩০-২১২০) যা Bioinformatic Match Threshold থেকে ছোট। কাজেই ব্যক্তিটি হলো আনোয়ার।
(খ) আলোচ্য ব্যক্তির ফিংগার প্রিন্ট প্যাটার্ণ মান হলো ১৫১০। ব্যবহৃত বায়োমেট্রিক্স রিভারের Bioinformatic Match
Threshold মান ২৫ নির্ধারণ করা আছে। সংরক্ষিত তথ্য থেকে দেখা যায় যে, ১৫১০ এর নিকটতম মান হলো ১৬৮০
(জাহিদ)। এই মান দ্বয়ের পার্থক্য হলো ১৭০ (১৬৮০-১৫১০) যা Bioinformatic Match Threshold থেকে অনেক বড়। কাজেই ব্যক্তিটি অপরিচিত।
সৃজনশীল মেধাবিকাশের জন্য চিন্তা কর:
১। বাস্তবে অবস্থান করেও কল্পনাকে অনুকর ব্যাখ্যা কর।
২। ভার্চুয়াল রিয়েলিটি কীভাবে মনুষ্যত্বহীনতা সৃষ্টি করতে পারে?
৩। শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের ক্ষেত্রে ভার্চুয়াল রিয়েলিটি এক নতুন মাত্রা যোগ করেছে। এ বিষয়ে তোমার অভিমত MTG 1
৪। উৎপাদনমুখী শিল্পে ব্যবহৃত রোবট অনেক বানাবহুল হওয়া সত্ত্বেও কেন তা পণ্য উৎপাদনে ব্যবহৃত হয়?
৫। এক্সপার্ট সিস্টেম কীভাবে ব্যবসায় ব্যবহার করা যায়?
উচ্চতর ও প্রকৃতপক্ষে মানুষের নির্দেশ ব্যতীত কোন রোবটই কাজ করতে পারে না। উক্তিটির স্বপক্ষে যুক্তি দাও। অভীন নিতাপমাত্রায় অসুস্থ টিস্যুর জীবাণুকে কীভাবে ফাংস করা যায়?-ব্যাখ্যা কর
৮। আইসিটি নির্ভর উৎপাদন ব্যবস্থা খরচ ও স্বাস্থ্য ঝুঁকি উভয়ই কমায়:-তোমার মতামত ব্যক্ত কর।
৯। বায়োমেট্রিক্স প্রযুক্তিতে কীভাবে ব্যক্তি সনাক্তকরণের কাজ করা হয়?
Timeline Treasures নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url