ফাইলেরিয়া কি?-ফাইলেরিয়া রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার
সুচিপত্রঃ- ফাইলেরিয়া কি?-ফাইলেরিয়া রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার
ফাইলেরিয়া কি?
ফাইলেরিয়া বা গোদ হচেছ এমন এক সংক্রামক রোগ যা এক প্রকার পরজীবি জীবাণু
(প্যারাসাইট) দিয়ে হয়। এতে শরীরের লসিকা সংক্রান্ত (এক প্রকার বর্ণহীন রস)
ব্যবস্থা আক্রান্ত হয়। এ রোগ বিশেষ এক ধরনের (কিউলেক্স) মশার মাধ্যমে ছড়ায়।
আক্রান্ত ব্যক্তির শরীর থেকে মশা প্রথমে রক্তের সংগে এই রোগে জীবাণু নিজের দেহে
নিয়ে নেয় ও পরে কামড়ানোর মাধ্যমে সুস্থ লোকের দেহে ছড়ায়।ফাইলেরিয়া মশাবাহিত
একটি সংক্রামক ব্যধি। এই রোগের জীবাণু মশার কামড়ের ফলে সংক্রামিত হয়ে থাকে।
বাংলাদেশে সাধারনতঃ ডবি-উ ব্যানক্রফটি এবং ম্যালেই (Malai) জীবাণু হতে
ফাইলেরিয়া রোগের সৃষ্টি হয়।
উপসর্গ ও লক্ষণ সমূহ
এ রোগে আক্রান্ত হলে লসিকা গ্রন্থি ফুলে যায়। পা ফুলে ভারী হয়ে যায়। যাকে গ্রাম
বাংলায় 'গোদ' রোগ বলা হয়। এ রোগ হলে মানুষ শারীরিকভাবে অক্ষম হয়ে পড়ে। এই রোগ
শিশু অবস্থা হতে শুরু করে যে কোন বয়সে সংক্রামিত হতে পারে। তবে সাধারনতঃ দশ
বছরের উপরের বয়সে এই রোগ দেখা দেয়।
বাংলাদেশের উষ্ণ আবাহাওয়া এই মশার বংশ বৃদ্ধিতে সহায়ক বলে পরিচিত। ফাইলেরিয়া
রোগ জীবাণু বাহিত মশা রাতের বেলায় মানুষের দেহে কামড়ানোর মাধ্যমে জীবাণু রক্তের
মধ্যে প্রবেশ করিয়ে দেয়।
লক্ষণগুলো হলঃ- শীতবোধ ও শরীরের সংকোচনসহ জ্বর
- চামড়ায় বিশেষ করে বাহু এবং পায়ে ব্যথা হয়ে চামড়া ফুলে যায়।
- শরীরের নিম্নাঙ্গ ফুলে যায়।
- লসিকা-গ্রন্থি ফুলে যায় এবং ব্যথা হয়।
- পা. অন্ডকোষ এবং যৌনাঙ্গ চিরকালের মত ফুলে যায় এবং প্রসারিত হয়।
ফাইলেরিয়া রোগের চিকিৎসা
রোগের লক্ষণ চিহ্নিত করার পর তাকে চিকিৎসার জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে বা
হাসপাতালে প্রেরণ করবেন।
- বয়সানুযায়ী মাত্রামত (মাত্রা পরে দেওয়া আছে) ওষুধ প্রয়োগ করবেন।
- জ্বর ও ব্যথার জন্যে এসপিরিন ট্যাবলেট দেবেন।
- ফুলে যাওয়া কমানোর জন্যে স্থিতিস্থাপক (ইলাস্টিক) বেল্ট ব্যবহার করা যায়। এতে পায়ের চিরস্থায়ী ফুলে যাওয়াও রোধ করা যেতে পারে। রাতে অবশ্যই ব্যান্ডেজ খুলে রাখবেন।
- ফাইলেরিয়া রোগের প্রতিরোধ ব্যবস্থা
- বাড়ী ঘর পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখা।
- বাড়ীর আশে-পাশে ঝোপ-ঝাড় কেটে ফেলা।
- খাল ডোবা নালা পরিস্কার রাখা।
- পুকুর ও ড্রেন পরিস্কার রাখা।
- মশার ঔষধ ছিটানো ও ব্যবহার করা।
- ঘুমানোর সময় মশারী ব্যবহার করা।
- বাড়ীর আশে পাশে কোন কিছুতেই ময়লা পানি জমতে না দেওয়া।
- মশার বংশ বৃদ্ধি যাতে না করতে পারে তার জন্য যাবতীয় ব্যবস্থাদি গ্রহণ।
রোগীর রেফারেন্স
- কেউ এই রোগে আক্রান্ত হলে তাকে নিকটবর্তী স্বাস্থ্য কমপে-ক্সে প্রেরণের ব্যবস্থা করতো হবে।
ফলো-আপ
রোগী ঠিকমত ঔষধ সেবন করছে কিনা এবং ক্রমান্বয়ে আরোগ্য লাভ করছে কিনা সে
ব্যাপারে ফলো- আপ করতে হবে। উন্নতি না হলে পুনরায় স্বাস্থ্য কমপে-ক্সে নিয়ে
যেতে হবে।
তথ্যসুত্রঃ (পরিবার কল্যাণ সহকারী এবং পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শক)
সহায়িকা
Timeline Treasures নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url