নিউমোনিয়া রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার
বাংলাদেশে ৫ বছরের কম বয়সী যে সব শিশুর মৃত্যু হয়, তার মোট সংখ্যার শতকরা ১৮-২৫
ভাগ ঘটে মারাত্মক শ্বাস- তন্ত্রের সংক্রমণ অর্থাৎ এআরআই জনিত বিভিন্ন রোগে।
সঠিকভাবে পরিকল্পিত রোগ বিষয়ক তথ্যপ্রচার এবং কার্যকরী এন্টিবায়োটিক ঔষধ প্রয়োগের
মাধ্যমে এই মারাত্মক পরিস্থিতি থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব।
সূচিপত্রঃ- নিউমোনিয়া রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার
ARI কি?
শ্বাসতন্ত্রের যে কোন অংশের হঠাৎ সংক্রমণ হলে তাকে Acute Respiratory Infection
বা সংক্ষেপে (ARI) বলে।
নিউমোনিয়া কি?
নিউমোনিয়া ফুসফুসের প্রদাহজনিত একটি রোগের নাম। নিউমোনিয়ার ইংরেজি
Pneumonia. এটি ফুসফুসের প্যারেনকাইমার এক প্রকার প্রদাহ বিশেষ। সাধারণত
ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস কিংবা অন্য কোন জীবাণু দ্বারা যখন ফুসফুসের সংক্রমণ ঘটে
তখন তাকে নিউমোনিয়া বলে। বাংলাদেশে শিশু মৃত্যুর প্রধান কারণগুলির মধ্যে
নিউমোনিয়া অন্যতম।
নিউমোনিয়ার কারণ
ব্যাকটেরিয়ার অথবা ভাইরাস দ্বারা নিউমোনিয়া হয়ে থাকে। নিম্নলিখিত অবস্থাসমূহে
এআরআই হওয়ার সম্ভাবনা বেশী থাকে। যেমন-
• স্বল্প ওজনের বাচ্চা (জন্মকালীন ওজন আড়াই কেজির কম)• সঠিক ভাবে বুকের দুধ না খাওয়ানো
• পুষ্টিহীনতা
• ইপিআই প্রতিষেধক টিকা না দেওয়া
• ভিটামিন এ-র অভাব
• ঠান্ডা বা স্যাঁতস্যাঁতে আবহাওয়া
• ঘন বসতি ও দূষিত পরিবেশ
নোটঃ Acute বলতে ৩০ দিনের কম স্থায়ী সংক্রমণকে বুঝায়।
নিউমোনিয়ার ফলে যে পরিবর্তন হয়
নিউমোনিয়ার রোগ জীবাণু শ্বাস-প্রশ্বাসের সাথে ফুসফুসে প্রবেশ করে এবং এই জীবাণু
রক্তের মধ্যে এক ধরণের বিষ (Poison) নিঃসৃত করে এবং এর ফলে তাপমাত্রা বৃদ্ধি
পায়। যখন কোন রোগ জীবাণু প্রবেশ করে তখন সাথে সাথে প্রদাহের সৃষ্টি হয়। এই
প্রদাহের ফলে সংক্রমিত বায়ুকোষে রক্তের সরবরাহ বেড়ে যায়, বায়ুকোষের ভিতরের
বাতাসের পরিমান কমে যায় এবং ঐ বায়ুকোষের ভিতরে এক ধরনের রক্তমিশ্রিত তরল
পদার্থ বের হয়। শরীর কাশির মাধ্যমে তরল পদার্থ বের করে দেবার চেষ্টা করে। এই
তরল পদার্থের জন্য বায়ু চলাচলের জায়গা কমে যায় ফলে শ্বাস-প্রশ্বাসের কষ্ট হয়
এবং শ্বাস-প্রশ্বাসের হার বেড়ে যায়।
নিউমোনিয়া রোগের প্রকারভেদ
সঠিক চিকিৎসা দেবার জন্য এআরআই রোগীকে শিশুর বয়স অনুযায়ী যে ভাবে শ্রেনী
বিন্যাস করা হয়েছে-
শিশুর বয়স ০-২ মাস | শিশুর বয়স ২ মাস- ৫ বৎসর |
---|---|
|
|
* এখানে দেখা যাচ্ছে যে ২ মাসের কম বয়সের শিশুর ক্ষেত্রে ১টি শ্রেণী বিভাগ কম
আছে- সাধারণ নিউমোনিয়া এদের ক্ষেত্রে নেই। এর কারণ হলো এই ছোট শিশুরা (২ মাসের
কম বয়সের) নিউমোনিয়া আক্রান্ত হয় খুব সহজে এবং সময় মত সঠিক চিকিৎসা না পেলে খুব
তাড়াতাড়ি এরা মৃত্যুর শিকার হয়। তাই এদের নিউমোনিয়াকে অধিক গুরুত্ব দেয়ার জন্য
শ্রেণী বিভাগের সময় একে মারাত্মক নিউমোনিয়া বলা হয় এবং এই শিশুদের মারাত্মক
নিউমোনিয়ার লক্ষণ দেখা দেয়া মাত্র দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি করিয়ে চিকিৎসার
ব্যবস্থা করতে হবে।
শ্বাস-প্রশ্বাসের হার গণনা
এআরআই রোগের ক্ষেত্রে শিশুর শ্বাস-প্রশ্বাসের হার জানা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।শ্বাস-প্রশ্বাসের হার কি এবং বয়স অনুসারে প্রতি মিনিটে স্বাভাবিক হার কত?
শ্বাস-প্রশ্বাস বলতে বোঝায় একবার শ্বাস গ্রহণ ও একবার শ্বাস ত্যাগ। এইভাবে ১
মিনিটে কতবার শ্বাস নেয় এবং ত্যাগ করে সেই সংখ্যাকে শ্বাস- প্রশ্বাসের হার বলে।
স্বাভাবিক এই হার প্রতি মিনিটে ভিন্ন ভিন্ন বয়সে ভিন্ন ভিন্ন হয় যেমন:-
বয়স | স্বাভাবিক শ্বাস-প্রশ্বাসের হার |
---|---|
জন্মের পর হতে ২ মাস পর্যন্ত | - ৬০ বারের কম |
২মাস পর হতে ১২ মাস পর্যন্ত | - ৫০ বারের কম |
১২ মাস পর হতে ৫ বছর পর্যন্ত | - ৪০ বারের কম |
নিউমোনিয়া রোগের প্রকৃতি নির্ণয়ঃ
(২ মাসের কম বয়সের শিশু)
(ক) খুব মারাত্মক রোগ
লক্ষণ সমূহঃ
• ভালভাবে খাওয়া দাওয়া না করা
• খিচুনী
• অস্বাভাবিক ঘুম ঘুম ভাব বা সহজে ঘুম ভাঙ্গানো যায় না
• শান্ত অবস্থায় শ্বাস কষ্টের শব্দ
• শ্বাস-প্রশ্বাসে সাঁই সাঁই শব্দ (হাঁপানী) অথবা
• জ্বর বা স্বাভাবিকের চেয়ে শরীরের তাপমাত্রা কম
চিকিৎসাঃ
• জরুরী ভিত্তিতে ভর্তির জন্য স্বাস্থ্যকেন্দ্র বা হাসপাতালে পাঠিয়ে দিন
• বাচ্চাটিকে উষ্ণ রাখুন
(খ) মারাত্মক নিউমোনিয়া
লক্ষণ সমূহঃ
• উপরে বর্ণিত খুব মারাত্মক রোগের লক্ষণ নেই।
• শ্বাস নেওয়ার সময় বুক মারাত্মকভাবে ভেতরের দিকে চেপে যায়।
অথবা
• শ্বাস-প্রশ্বাস খুত দ্রুত হয় (মিনিটে ৬০ বা তার বেশী)
চিকিৎসাঃ
• জরুরী ভিত্তিতে ভর্তির জন্য হাসপাতালে পাঠিয়ে দিন।
• বাচ্চাটিকে উষ্ণ রাখুন।
(গ) নিউমোনিয়া নয় সাধারণ সর্দি-কাশি
লক্ষণ সমুহঃ
• শ্বাস-নেওয়ার সময় বুক মারাত্মকভাবে ভেতরের দিকে চাপে না।
• দ্রুত শ্বাস-প্রশ্বাস নেয় (মিনিটে ৬০ বারের কম)
• কাশি বা সর্দিতে ভুগছে।
চিকিৎসাঃ
• নিবের্ণিত যত্ন নেওয়ার জন্য মাকে বলে দিন।
• বাচ্চাকে উষ্ণ রাখুন
• ঘন ঘন বুকের দুধ খাওয়ান
• নাক পরিস্কার করে দিন যেন খাওয়ার ব্যাঘাত না হয়
লক্ষণ সমূহঃ
• ভালভাবে খাওয়া দাওয়া না করা
• খিচুনী
• অস্বাভাবিক ঘুম ঘুম ভাব বা সহজে ঘুম ভাঙ্গানো যায় না
• শান্ত অবস্থায় শ্বাস কষ্টের শব্দ
• শ্বাস-প্রশ্বাসে সাঁই সাঁই শব্দ (হাঁপানী) অথবা
• জ্বর বা স্বাভাবিকের চেয়ে শরীরের তাপমাত্রা কম
চিকিৎসাঃ
• জরুরী ভিত্তিতে ভর্তির জন্য স্বাস্থ্যকেন্দ্র বা হাসপাতালে পাঠিয়ে দিন
• বাচ্চাটিকে উষ্ণ রাখুন
(খ) মারাত্মক নিউমোনিয়া
লক্ষণ সমূহঃ
• উপরে বর্ণিত খুব মারাত্মক রোগের লক্ষণ নেই।
• শ্বাস নেওয়ার সময় বুক মারাত্মকভাবে ভেতরের দিকে চেপে যায়।
অথবা
• শ্বাস-প্রশ্বাস খুত দ্রুত হয় (মিনিটে ৬০ বা তার বেশী)
চিকিৎসাঃ
• জরুরী ভিত্তিতে ভর্তির জন্য হাসপাতালে পাঠিয়ে দিন।
• বাচ্চাটিকে উষ্ণ রাখুন।
(গ) নিউমোনিয়া নয় সাধারণ সর্দি-কাশি
লক্ষণ সমুহঃ
• শ্বাস-নেওয়ার সময় বুক মারাত্মকভাবে ভেতরের দিকে চাপে না।
• দ্রুত শ্বাস-প্রশ্বাস নেয় (মিনিটে ৬০ বারের কম)
• কাশি বা সর্দিতে ভুগছে।
চিকিৎসাঃ
• নিবের্ণিত যত্ন নেওয়ার জন্য মাকে বলে দিন।
• বাচ্চাকে উষ্ণ রাখুন
• ঘন ঘন বুকের দুধ খাওয়ান
• নাক পরিস্কার করে দিন যেন খাওয়ার ব্যাঘাত না হয়
(২ মাস থেকে ৫ বছর বয়সের শিশু)
(ক) খুব মারাত্মক রোগলক্ষণ সমূহঃ
• পানীয় গ্রহণে অপারগতা'
• খিচুনী
• অস্বাভাবিক ঘুম ঘুম ভাব বা সহজে ঘুম ভাঙ্গানো যায় না।
• শান্ত অবস্থায় শ্বাস কষ্টের শব্দ, অথবা
• মারাত্মক পুষ্টিহীনতা
চিকিৎসাঃ
• জরুরী ভিত্তিতে হাসপাতালে ভর্তির জন্য পাঠিয়ে দিন।
• জ্বর থাকলে তার চিকিৎসা করুন।
• শ্বাস-প্রশ্বাসে ফোঁস ফোঁস শব্দ (হাঁপানী) হলে তার চিকিৎসা করুন।
(খ) মারাত্মক নিউমোনিয়া
লক্ষণসমূহ:
• উপরে বর্ণিত খুব মারাত্মক রোগের লক্ষণ নেই।
• কিন্তু শ্বাস নেওয়ার সময় বুক ভিতরের দিকে চেপে যায়।
চিকিৎসাঃ
• জরুরী ভিত্তিতে হাসপাতালে ভর্তির জন্য পাঠিয়ে দিন।
• জ্বর থাকলে তার চিকিৎসা করুন।
• শ্বাস-প্রশ্বাসে সাঁই সাঁই শব্দ (হাঁপানী) হলে তার চিকিৎসা করুন।
• বয়স অনুযায়ী স্বাভাবিক মাত্রার ভিটামিন 'এ' খাওয়ান।
(গ) নিউমোনিয়া
লক্ষণ সমূহঃ
• শ্বাস নেওয়ার সময় বুক ভেতরের দিকে চাপে না।
• শ্বাস-প্রশ্বাস খুব দ্রুত হয়।
• (দুই থেকে ১২ মাস বয়সের শিশুর মিনিটে ৫০ বার বা তার বেশী হয়: ১২ মাস
থেকে ৫ বছরের শিশুর মিনিটে ৪০ বার বা তার বেশী হয়)
চিকিৎসাঃ• বাড়ীতে শিশুর যত্ন নেওয়ার জন্য মাকে বলুন।
• জ্বর থাকলে তার চিকিৎসা করুন।
• শ্বাস-প্রশ্বাস সাঁই সাঁই শব্দ (হাঁপানী) হলে তার চিকিৎসা করুন।
• পুনরায় পরীক্ষা করে দেখার জন্য দু'দিনের মধ্যে বা অবস্থার অবনতি হলে
তারও আগে শিশুটিকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যান।
জরুরীঃ যে শিশুদের নিউমোনিয়া নেই সর্দি বা কাশি বলে চিহ্নিত করা হয়েছে,
নিবের্ণিত লক্ষণগুলো পরিলক্ষিত হলে যথাশীঘ্র ডাক্তারের কাছে রেফার করবেন।
• শ্বাস-প্রশ্বাসে কষ্ট হলে।• শ্বাস-প্রশ্বাস দ্রুত হলে।
• শিশু পানি গ্রহণে অপারগ হলে।
• শিশু বেশী অসুস্থ হয়ে পড়লে।
এসব ক্ষেত্রে শিশুটির নিউমোনিয়া হয়ে থাকতে পারে
নিউমোনিয়ার জটিলতা
সঙ্গে সঙ্গে জটিলতা নির্ণয় করলে রোগীকে হাসপাতালে পাঠিয়ে দিয়ে রোগীর জীবন রক্ষা
করা যায়।নিউমোনিয়ার জটিলতাসমূহ-
•কিছু খেতে না পারা।•খিচুনী।
•অস্বাভাবিক ঘুম ঘুম ভাব বা সহজে ঘুম ভাঙ্গানো যায় না।
•শান্ত অবস্থায় শ্বাস কষ্টের শব্দ।
•শ্বাস-প্রশ্বাসে ফোঁস ফোঁস শব্দ (হাঁপানী)।
•জ্বর বা শরীরের তাপমাত্রা অপেক্ষাকৃত কম।
নিউমোনিয়ার জটিলতা এড়ানোর জন্য কি ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত
• অসুস্থ অবস্থায় শিশুকে পুষ্টিকর খাবার খেতে দিন।
• অসুখের পর শিশুর খাবার বাড়িয়ে দিন।
• সর্দির জন্য খেতে না পারলে নাক পরিস্কার করে দিন।
• তরল খাবার বেশী করে খাওয়ান।
• শিশুকে অতিরিক্ত পানীয় দিন।
• বুকের দুধ খাওয়ানো বাড়িয়ে দিন।
• অতিরিক্ত কাপড় দিয়ে শিশুকে জড়ানো যাবে না। তবে দু'মাসের কম বয়সের শিশুকে
উষ্ণ রাখতে হবে।
ছোট শিশু রোগীকে উষ্ণ রাখার গুরুত্ব
শিশুর বয়স ২ মাসের কম হলে। জ্বর ছোট শিশুর জন্য যেমন মারাত্মক তেমনি শরীরের
তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে কমে যাওয়াও ছোট শিশুর জন্য মারাত্মক। শরীরের
তাপমাত্রা কমে গেলে যে কোন সময় শিশুর জীবন বিপন্ন হতে পারে অর্থাৎ ছোট শিশুটির
মৃত্যু ঘটতে পারে তাই ছোট শিশুকে অসুস্থ অবস্থায় কাপড় জড়িয়ে উষ্ণ রাখতে হবে।
নিউমোনিয়া রোগের প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ
শিশুদের নিউমোনিয়া বা শ্বাস কষ্ট প্রতিরোধে মা ও শিশু স্বাস্থ্য পরিচর্যার
প্রতি যত্নবান হওয়ার জন্য জনগণকে উৎসাহিত করা আবশ্যক। গর্ভকালীন সময় থেকে মায়ের
শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের পরিপূর্ণ যত্ন নেয়া হয় তাহলে সুস্থ সুন্দর শিশুর
জন্মদান এবং তাকে সুস্থভাবে লালন পালন করা সহজতর হতে পারে। সেই সাথে শিশুদের
নিউমোনিয়া প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণের জন্য যেসব বিষয়ে লক্ষ্য রাখতে হবে, তা হলোঃ
- শিশুর যাতে ঘন ঘন ঠান্ডা বা সর্দি না লাগে সে দিকে খেয়াল রাখা
- পরিস্কার পরিচ্ছন্ন এবং পর্যাপ্ত আলো বাতাস প্রবেশ করতে পারে এমন ঘরে শিশুকে রাখার ব্যবস্থা করা।
- অধিক ঠান্ডা খাবারে শিশুকে অভ্যস্ত না করে সব সময় উষ্ণ গরম খাবারে অভ্যাস গড়ে তোলা।
- শিশুকে সাতটি রোগের বিরুদ্ধে সময় মত টিকাদান সম্পন্ন করা।
- নিউমোনিয়া আক্রান্ত ছোট শিশুকে উষ্ণ রাখার জন্য গায়ে কাপড় দিয়ে ভালভাবে ঢেকে রাখা।
- অসুস্থ অবস্থায় শিশুকে বুকের দুধসহ অন্যান্য স্বাভাবিক খাবার খাওয়ানো এবং শিশুকে বেশী করে তরল খাবার দেয়া।
তথ্যসুত্রঃ (পরিবার কল্যাণ সহকারী এবং পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শক) সহায়িকা
Timeline Treasures নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url