ভার্চুয়াল রিয়েলিটি কি - ভার্চুয়াল রিয়েলিটির প্রয়োগ

ভার্চুয়াল রিয়েলিটি (Virtual Reality R

ভার্চুয়াল রিয়েলিটি বা VR হচ্ছে কম্পিউটার নিয়ন্ত্রিত সিস্টেম যাতে মডেলিং (Modelling) ও অনুকরণবিদ্যার (Simulation) প্রয়োগের মাধ্যমে মানুষ কৃত্রিম বহুমাত্রিক ইন্দ্রিয় গ্রাহ্য পরিবেশের সাথে সংযোগ স্থাপন বা উপলব্ধি করতে পারে। ভার্চুয়াল রিয়েলিটিতে অনুকরণকৃত পরিবেশ হুবহু বাস্তব পৃথিবীর মত হতে পারে। এক্ষেত্রে অনেক সময় ভার্চুয়াল রিয়েলিটি থেকে বাস্তব অভিজ্ঞতা পাওয়া যায়। আবার অনেক সময় অনুকরণকৃত বা সিম্যুলেটেড পরিবেশ বাস্তব থেকে আলাদা হতে পারে। যেমন-ভার্চুয়াল রিয়েলিটি গেমস।

ভার্চুয়াল রিয়েলিটিতে ব্যবহারকারী সম্পূর্ণরূপে একটি কম্পিউটার নিয়ন্ত্রিত পরিবেশে নিমজ্জিত হয়ে যায়। তথ্য আদান প্রদানকারী বিভিন্ন ধরনের ডিভাইস সম্বলিত চশমা, হেডসেট (headsets) বা মাথায় বসানো ডিসপ্লে (Head Mounted Display-HMD), গ্লোভ (gloves), পোষাক (suit) ইত্যাদি পরিধান করার মাধ্যমে ভার্চুয়াল রিয়েলিটিতে বাস্তবকে উপলব্ধি করা হয়। একটি টিপিক্যাল ভার্চুয়াল রিয়েলিটিতে একজন ব্যবহারকারী স্টেরিওস্কোপিক (stereoscopic) বা ত্রিমাত্রিক স্ক্রীন সম্বলিত একটি হেলমেট পরে এবং তার মধ্যে দিয়ে বাস্তব থেকে অনুকরণকৃত অ্যানিমেটেড বা প্রাণবন্ত ছবি দেখে।

টেলিজেন্স (Telepresence) বলতে একগুচ্ছ প্রযুক্তিকে বুঝায় যার ব্যবহারের ফলে একজন মানুষকে টেলিরোবোটিক্স এর মাধ্যমে তার বাস্তব অবস্থানের বদলে অন্য কোনো জায়গায় উপস্থিত থাকার বাস্তব অনুভূতি জাগায়। Telepresence বা কৃত্রিম ত্রিমাত্রিক জগতে উপস্থিত থাকার ভ্রমণ একটি গতি নিয়ন্ত্রণকারী সেন্সর দ্বারা প্রভাবিত করা হয়। গতি নিয়ন্ত্রণকারী সেন্সর এর মাধ্যমে ক্রীনে প্রদর্শিত ছবির গতিকে ভার্চুয়াল রিয়েলিটি ব্যবহারকারীর গতির সাথে মেলানো হয়। যখন ভার্চুয়াল রিয়েলিটি ব্যবহারকারীর গতির পরিবর্তন হয় তখন স্ক্রীন এ প্রদর্শিত দৃশ্যের গতিও পরিবর্তিত হয়। এভাবে ভার্চুয়াল রিয়েলিটি ব্যবহারকারী কৃত্রিম ত্রিমাত্রিক জগতের সঙ্গে মিশে যায় এবং সেই জগতের একটি অংশে পরিণত হয়। আবার force-feedback সম্বলিত data gloves পরিধান করলে তা স্পর্শের অনুভূতি প্রদান করে এবং এসময় ব্যবহারকারী নিজের ইচ্ছানুযায়ী ভার্চুয়াল পরিবেশের কোন বস্তু তুলতে বা ধরতেও তা ব্যবহার করতে পারে।

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি

১৯৬২ সালে মর্টন হেইলিগ (Morton Heilig) তাঁর "Sensorama" আবিষ্কারের মাধ্যমে ভার্চুয়াল রিয়েলিটির ধারণার সূত্রপাত করেন। ১৯৬৮ সালে ইভান সুথারল্যান্ড (Ivan Sutherland) সর্বপ্রথম মাথার সাথে বসানো ত্রিমাত্রিক ডিসপ্লের (Head Mounted 3D Display) আবিষ্কার করেন। VIRTUAL REALITY TRIANGLE IMMERSION

১৯৮৯ সালে জেরন লেইনার (Jaron Lainer) সর্বপ্রথম "virtul reality" শব্দটির প্রচলন করেন। কাজেই ভার্চুয়্যাল রিয়েলিটির জনক নিয়ে মতভেদ আছে। প্রফেসর বারডিয়া (Grigore C. Burdea) Virtual Reality Technology বইতে ভার্চুয়াল রিয়েলিটিকে অবগাহন (immersion), কল্পনার জগৎ (imagination) ও মিথস্ক্রিয়া (interaction) এর সমন্বয় হিসাবে আখ্যায়িত করেছেন। তাঁর মতে ভার্চুয়াল রিয়েলিটিতে মানুষ কল্পনার রাজ্যে নিজকে নিমজ্জিত বা অবগাহন করে মিথষ্ক্রিয়া করতে সমর্থ হয়। IMAGINATION

VR is an integrated trio of "Immersion" "Interaction" and "Imagination"

INTERACTION

ভার্চুয়াল রিয়েলিটি সিস্টেম তৈরির উপাদান

১। ইফেক্টর (effector) : ইফেক্টর হলো বিশেষ ধরনের ইন্টারফেস ডিভাইস যা ভার্চুয়াল রিয়েলিটি পরিবেশের সাথে সংযোগ সাধন করে। যেমন- মাথায় বসানো ডিসপ্লে (Head Mounted Display HMD), গ্লোন্ড (gloves), পোষাক (suit) ইত্যাদি পরিধান করার মাধ্যমে ভার্চুয়াল রিয়েলিটিতে বাস্তবকে উপলব্ধি করা হয়।

২। রিয়েলিটি সিমুলেটর (Reality Simulator) রিয়েলিটি সিমুলেটর হলো এক ধরনের হার্ডওয়্যার যা ইফেক্টরকে সংবেদনশীল (চাক্ষুস বা শ্ৰুতিবোধসম্পন্ন) তথ্য সরবরাহ করে। যেমন-বিভিন্ন ধরনের সেন্সর, অডিও বা ভিডিও প্রসেসিং ডিভাইস, চাপ ও তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণের জন্য বিভিন্ন ধরনের ট্রান্সডিউসার ইত্যাদি। ৩। অ্যাপ্লিকেশন (Application) : অ্যাপ্লিকেশন হলো এক ধরনের সফটওয়্যার যা সিমুলেশনের প্রাসঙ্গিকতা বর্ণনা


করে। অপারেটিং সিস্টেমের উপর নির্ভর করে বিভিন্ন ধরনের অ্যাপ্লিকেশন সফটওয়্যার দেখা যায়। যেমন-

ইন্টেল প্রসেসর নির্ভর পিসির জন্য অটোডেস্কের “Division"।

জিওমেট্রি (Geometry) : জিওমেট্রি হলো ভার্চুয়াল পরিবেশের বিভিন্ন বস্তুর বাহ্যিক বৈশিষ্ট্য সম্পর্কিত

তথ্যাবলী। মূলতঃ কম্পিউটার এইডেড ডিজাইন বা ক্যাড সফটওয়্যার দিয়ে জিওমেট্রি তৈরি করা হয়। যেমন-

ইন্টেল প্রসেসর নির্ভর পিসিতে বিভিন্ন বস্তুর ৩ডি মডেলিং করার জন্য অটোডেস্কের “AutoCAD" সফটওয়্যার। ক্যাড সফটওয়্যার দ্বারা তৈরি করা ফাইল ভার্চুয়াল রিয়েলিটির রেন্ডারিং এবং অথরিং করার জন্য এক্সপোর্ট করা হয়।


ভার্চুয়্যাল রিয়েলিটির ব্যবহার/প্রয়োগ-


গেইম শিল্প ও সিনেমাঃ

বিভিন্ন প্রকার আধুনিক আকর্ষণীয় গেইম তৈরিতে ভার্চুয়্যাল রিয়েলিটি ব্যাপকভাবে প্রয়োগ করা হয়। যেমন Xbox 360, PS4 ইত্যাদি। বিভিন্ন সিনেমা তৈরির ক্ষেত্রে ঝুঁকিপূর্ণ দৃশ্য ধারণ করতে প্রয়োজনীয় অ্যানিমেশন তৈরি করার সময় ভার্চুয়াল রিয়েলিটি ব্যবহার করা হয়। শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ : শিশু শিক্ষা, বিজ্ঞান শিক্ষা, প্রকৌশল শিক্ষায় এর ব্যাপক প্রয়োগ দেখা যায়। যেমন- নিউক্লিয়ার রিয়্যাক্টরের অভ্যন্তরীণ বিক্রিয়া সিম্যুলেশনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা অনুধাবণ করতে পারেন।


চিকিৎসাক্ষেত্র:

চিকিৎসাক্ষেত্রে ভার্চুয়াল রিয়েলিটি প্রয়োগ করে বিভিন্ন ধরনের ভুল ও ঝুঁকি এড়ানো সম্ভব। যেমন-

সিম্যুলেটেড সার্জারির মাধ্যমে নতুন ডাক্তার ও মেডিকেল শিক্ষার্থীদের প্রশিক্ষণ দেয়া সম্ভব। আবার সিম্যুলেটেড রোগীর উপর নতুন চিকিৎসা পদ্ধতি পরীক্ষামূলকভাবে চালানোও সম্ভব। • সামরিক বাহিনী সামরিক বাহিনীতে অনেক বছর যাবৎ মিলিটারি প্রশিক্ষণে ফ্লাইট সিম্যুলেটর ব্যবহৃত হয়ে 2 আসছে। ভার্চুয়াল রিয়েলিটি ব্যবহার করে প্রচলিত ফ্লাইট সিম্যুলেটর এর আরও উন্নতি সাধন করা সম্ভব। এছাড়াও ভার্চুয়াল রিয়েলিটির মাধ্যমে সিম্যুলেটেড ওয়ার দ্বারা সৈন্যদের অনেক বেশি বাস্তব ও উন্নত প্রশিক্ষণ দেয়া হয়।

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিশ্ব ও বাংলাদেশ প্রেক্ষিত

স্থাপত্য ও নির্মাণ শিল্প ও স্থপতিগণ ভার্চুয়াল রিয়েলিটির মাধ্যমে কোন ভবনের নকশা তৈরি করে বাস্তবে ভবন নির্মাণের পূর্বেই তার কাল্পনিক রূপদান করতে পারেন। ফলে ভবন কিরূপ হবে তা দেখা যায় এবং কোন ত্রুটি থাকলে তা সহজেই ধরা পড়ে।


ব্যবসা বাণিজ্য :

ব্যবসা বাণিজ্যেও ভার্চুয়াল রিয়েলিটির ব্যবহার লক্ষ্য করা যায়। কোন যন্ত্র বা পণ্য উৎপাদন শুরু করার আগে তা ভার্চুয়াল রিয়েলিটির মাধ্যমে তৈরি করে তার মান বা গুণাগুণ পরীক্ষার জন্য জনসমক্ষে উপস্থাপন করা যায়।


শিল্প-কারখানায় ১ ভার্চুয়াল রিয়েলিটির মাধ্যমে শিল্প কারখানার উৎপাদন প্রক্রিয়ার সিম্যুলেশন করা হয়। ফলে উৎপাদন প্রক্রিয়া শুরু করার পূর্বে তার দক্ষতা, উৎপাদনশীলতা, ঝুঁকি ইত্যাদি পর্যবেক্ষণ করা যায়। ড্রাইভিং নির্দেশনা/ফ্রাইড সিমুলেটর । ড্রাইভিং প্রশিক্ষণে আজকাল ভার্চুয়াল রিয়েলিটি ব্যবহৃত হচ্ছে। ড্রাইভিং- এর নানা নিয়মকানুন খুব সহজেই এর মাধ্যমে আয়ত্ত করা সম্ভব। স্বল্প মূল্যে মাইক্রোকম্পিউটার প্রযুক্তি সহজলভ্য হওয়ায় বিভিন্ন ধরনের ভার্চুয়াল রিয়েলিটির ড্রাইভিং সিমিউলেটর তৈরি করা হয়েছে। সাধারণ চালনা কৌশল থেকে শুরু করে জটিল কৌশলগুলোও এর মাধ্যমে রঙ করা যায়। ফ্লাইট সিমুলেটর এমন একটি যন্ত্র বা ডিভাইস যা পাইলট প্রশিক্ষণ, ডিজাইন, গেইম ইত্যাদি কাজের উদ্দেশ্যে কৃত্রিমভাবে বিমান বা এয়ারক্রাফট উড্ডয়ন, অবতরণ এবং এর চলাচলের কাল্পনিক পরিবেশ তৈরি করে। ভার্চুয়াল রিয়েলিটি ও কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তার প্রয়োগে বিমান বা এয়ারক্রাফট উড্ডয়ন, অবতরণ ও এর চলাচলের কাল্পনিক পরিবেশ তৈরি। করে তা চালনা করাকে ফ্লাইট সিমুলেশন বলা হয়


ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা :

সড়ক, আকাশ, রেল ও জলপথে চলাচলকারী যানবাহন পরিচালনায় এখন ভার্চুয়াল রিয়েলিটি ব্যবহার করা হচ্ছে। এর মাধ্যমে কম্পিউটার নিয়ন্ত্রিত কাল্পনিক পরিবেশে সংকটপূর্ণ অবস্থায়ও কিভাবে যানবাহন পরিচালনা করতে হয় তা এ পদ্ধতিতে খুব সহজে শেখা যায়। কাল্পনিক বাস্তবতায় বিমান ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণকারী কর্মকর্তাদের নানা ধরনের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। কখন কোন বিমানটি আকাশে উড়বে বা কোন বিমানটি রানওয়ে স্পর্শ করবে তা সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করার জটিল দায়িত্ব অত্যন্ত সহজ করে দিয়েছে ভার্চুয়াল রিয়েলিটি সংবলিত নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা।

মহাকাশ অভিযান :

মহাকাশ অভিযানের প্রতিটি পর্বেই রয়েছে নানা ধরনের ঝুঁকি। প্রস্তুতিপর্বের নানা গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা নিরীক্ষা, নভোচারীদের কার্যক্রম, নভোযান পরিচালনা সংক্রান্ত যাবতীয় খুঁটিনাটি বিষয়গুলো সম্পর্কে প্রশিক্ষণে ভার্চুয়াল রিয়েলিটি বিশেষ স্থান করে নিয়েছে। নভোচারীগণ কাল্পনিক পরিবেশে মহাকাশে গবেষণা পরিচালনার বিষয়গুলোও মহাশূন্যে খাপ খাওয়ানোর মত বিষয়গুলো পূর্বেই প্রশিক্ষণ নিতে পারছেন।


প্রাত্যহিক জীবনে ভার্চুয়াল রিয়েলিটি এর প্রভাব (Impact of Virtual reality)

সাম্প্রতিককালে আমাদের প্রাত্যহিক জীবনে ভার্চুয়াল রিয়েলিটির ব্যাপক প্রয়োগ লক্ষ্য করা যায়। বিশেষ করে চলচ্চিত্র জগতের প্রায় সকল মুভিতেই ভার্চুয়াল রিয়েলিটির ব্যবহার দেখা যায়। তাছাড়া ভিডিও গেইম, প্রামাণ্য চিত্র, কার্টুন ইত্যাদিতেও ভার্চুয়াল রিয়েলিটির প্রয়োগ লক্ষ্যণীয়। তবে ভার্চুয়াল রিয়েলিটির প্রয়োগের ফলে সমাজে এর ইতিবাচক ও নেতিবাচক, উভয় ধরনের প্রভাব পড়েছে বলে বিশেষজ্ঞরা মতামত দিয়েছেন।


ভার্চুয়াল রিয়েলিটির কিছু ইতিবাচক প্রভাব- বাস্তবায়নের পূর্বেই বাস্তবকে অনুভব করা : ভার্চুয়াল রিয়েলিটির সাহায্যে অনেক ক্ষেত্রেই কোন কিছু বাস্তবায়ন করার পূর্বেই কম্পিউটার, মেকানিক্যাল, সিভিল, ইলেকট্রিক্যাল ইত্যাদি ইঞ্জিনিয়ারিং বিদ্যার প্রয়োগের ফলে কাল্পনিক মডেল তৈরি করা যায় যা বাস্তবের অনুরূপ। যেমন একটি ভবন তৈরি করে ক্রেতাকে দেখানো পর ক্রেতার চাহিদা অনুসারে তার পরিবর্তন করা কঠিন। কিন্তু ভবন নির্মাণের পূর্বে তার মডেল ভার্চুয়াল রিয়েলিটির প্রয়োগের মাধ্যমে তৈরি করে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ক্রেতাকে দেখালে ক্রেতা তার পছন্দমত ডিজাইন পরিবর্তন করতে পারেন। ডিজাইন চূড়ান্ত হলে এই মডেল অনুসারে ভবন নির্মাণ সম্পন্ন হতে পারে।


শিক্ষা ও প্রশিক্ষণকে আকর্ষণীয় ও হদয়গ্রাহী করা শিক্ষা ক্ষেত্রে জটিল বিষয়গুলোর সিম্যুলেশন ও মডেলিং করে শিক্ষার্থীদের দেখালে সঠিক শিক্ষার বিস্তরণ হয়। যেমন মানুষের হার্ট কীভাবে কাজ করে তা বাস্তবে দেখানো কঠিন কিন্তু ভার্চুয়াল রিয়েলিটির মাধ্যমে তা সহজেই দেখানো যেতে পারে। ঝুঁকিপূর্ণ বা টি উত্পাদন ব্যবস্থাকে সহজ ও সরল করা শিল্প-কারখানার ঝুঁকিপূর্ণ বা জটিল প্রসেসকে ভার্চুয়াল


রিয়েলিটির সাহায্যে প্রকৌশল বিদ্যার প্রয়োগে পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে সহজ ও সরল করা সম্ভব। খরচ কমানো। কার্চুয়াল রিয়েলিটির প্রয়োগের ফলে অনেক ক্ষেত্রেই খরচ কমানো সম্ভব হয়। বাস্তবায়নের পূর্বেই মডেল তৈরি করে পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে ডিজাইন চূড়ান্ত করা হলে নির্মাণ খরচ তুলনামূলকভাবে কম হবে।


ভার্চুয়াল রিয়েলিটির কিছু নেতিবাচক প্রভাব-

• মনুষ্যহীনতা বর্তমান সমাজের মনুষ্যত্বহীনতা বা ডিহিউম্যানাইজেশন (Dehumanization) ইস্যুটি হচ্ছে ভার্চুয়্যাল রিয়েলিটির একটি নেতিবাচক দিক। পৃথিবীতে আমাদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে হলে মনুষ্যত্বকে ধরে রাখতে হবে এবং একই সাথে খেয়াল রাখতে হবে যেন আমরা প্রযুক্তি দ্বারা চালিত না হই। কিন্তু যদি বিজ্ঞানীদের ধারণা অনুযায়ী ভার্চুয়্যাল রিয়েলিটি বিস্তৃতি লাভ করতে থাকে তাহলে মানুষের পারস্পরিক ক্রিয়া উল্লেখযোগ্য হারে হ্রাস পাবে। কারণ মানুষ তখন ভার্চুয়াল রিয়েলিটি দ্বারা বাস্তব জীবনের চেয়েও অনেক ভালো সঙ্গী এবং মনের মত পরিবেশ পাবে। আর মানুষ যদি এভাবে goggles আর gloves কে মানুষ ও সমাজের বিকল্প হিসেবে বেছে নেয় তাহলে মানব সমাজ বিলুপ্ত হতে আর বেশি সময় লাগবে না।

কল্পনার রাজ্যে বিচরণ। ভার্চুয়াল রিয়েলিটির মাধ্যমে মানুষ তার কল্পনার রাজ্যে ইচ্ছেমত বিচরণ করতে পারবে। ফলে দেখা যাবে মানুষ বেশিরভাগ সময় কাটাবে কল্পনার জগতে এবং খুব কম সময় থাকবে বাস্তব জগতে। কিন্তু এভাবে যদি মানুষ কল্পনা ও বাস্তবতার মধ্যে পার্থক্য করতে না পারে তাহলে এই পৃথিবী চরম অনিশ্চয়তার সম্মুখীন হবে।

স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। এছাড়াও গবেষণায় দেখা গেছে যে ভার্চুয়াল রিয়েলিটি মানুষের স্বাস্থ্যের জন্যও হানিকর। এটি মানুষের দৃষ্টিশক্তি ও শ্রবণশক্তির ক্ষতিসাধন করে।

ডিজিটাল ডিভাইড তৈরি ভার্চুয়াল রিয়েলিটি ব্যয়সাধ্য বিধায় অনেকেই তা ব্যবহার করে এর সুবিধা গ্রহণ করতে পারছেন না। যাদের আর্থিক সামর্থ্য রয়েছে শুধুমাত্র তারাই এই প্রযুক্তি ব্যবহার করতে পারছেন। ফলে এখানে ডিজিটাল ডিভাইড তৈরি হচ্ছে।


সাম্প্রতিককালে এক্সটেন্ডেড রিয়েলিটি (Extended Reality- XR), অগমেন্টেড রিয়েলিটি (Agumented Reality-AR) ও মিক্সড বা হাইব্রিড রিয়েলিটি (Hybrid or Mixed Reality-MR) শব্দগুলোও ব্যাপক পরিচিতি পেয়েছে। এক্সটেন্ডেড রিয়েলিটি হল এমন একটি শব্দ যা কম্পিউটার প্রযুক্তি এবং পরিধানযোগ্য কম্পিউটার সামগ্রী দ্বারা উৎপন্ন সমস্ত বাস্তব ও ভার্চুয়াল সম্মিলিত পরিবেশ এবং মানব- মেশিনের মিথস্ক্রিয়াকে নির্দেশ করে। এটি একটি Umbrella টার্ম যা Qualcomm যারা এক্সটেন্ডেড রিয়েলিটি হিসাবে উল্লেখ করা হয়েছে। এখানে X বাস্তব এবং


Reality

Mixed Reality

Virtual


AR


AV


ভার্চুয়াল জুড়ে ধারাবাহিকতার একটি পরিবর্তনশীল চলককে উপস্থাপন করে। অগমেন্টেড রিয়েলিটি হল বাস্তব বিশ্বের পরিবেশের একটি ইন্টারেক্টিভ অভিজ্ঞতা যেখানে বাস্তব-জগতে থাকা বন্ধুহসমূহ কম্পিউটার-উৎপাদিত উপলব্ধিগত তথ্য দ্বারা বর্ধিত হয়। মিশ্র বাস্তবতা বা হাইব্রিড রিয়েলিটি হলো নতুন পরিবেশ এবং ভিজ্যুয়ালাইজেশন তৈরি করার জন্য বাস্তব এবং ভার্চুয়াল বিশ্বের একত্রীকরণ যেখানে শারীরিক এবং ডিজিটাল বস্তুসমূহ সহাবস্থান করে এবং বাস্তব সময়ে যোগাযোগ করে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

Timeline Treasures নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url